ট্যাঙ্কার পিষে দিল বালককে, অবরোধ

উঁচু সাইকেলটায় ভাল করে পা পেত না দশ বছরের ছেলেটা। অনেক সময় হাফ প্যাডেল করত। কিন্তু তাকে তার সাইজের সাইকেল কিনে দেওয়ার মতো আর্থিক সংস্থান ছিল না পরিবারের। ওই সাইকেলেই ঘুরে বেড়াত আনন্দবাস প্রাথমিক স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র বিজয় ঘোষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:৩০
Share:

দুর্ঘটনার পরে পথ অবরোধ স্থানীয়দের। নিজস্ব চিত্র

উঁচু সাইকেলটায় ভাল করে পা পেত না দশ বছরের ছেলেটা। অনেক সময় হাফ প্যাডেল করত। কিন্তু তাকে তার সাইজের সাইকেল কিনে দেওয়ার মতো আর্থিক সংস্থান ছিল না পরিবারের। ওই সাইকেলেই ঘুরে বেড়াত আনন্দবাস প্রাথমিক স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র বিজয় ঘোষ। ওই সাইকেলে চেপেই রবিবার দাদুকে জমিতে খাবার দিয়ে বাড়ি ফিরছিল। পথে সাইকেলে ধাক্কা মেরে তাঁর শরীরের উপর দিয়ে চলে যায় তেলের ট্যাঙ্কার। গৌরনগরে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার। প্রতিবাদে প্রায় এক ঘণ্টা পথ অবরোধ করে জনতা।

Advertisement

পরিবার সূত্রের খবর, ছুটির দুপুরে দাদু মেঘনাথ ঘোষকে নিয়ম করে মাঠপাড়ায় খেতে দিতে যেত বিজয়। তার তুলনায় উঁচু সাইকেল চালাতে সম্ভবত কিছুটা অসুবিধাও। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, কোনও পাথর বা ইটের টুকরো সাইকেলের চাকায় লাগলে ভারসাম্য হারায় ওই বালক। তখনই পাশ দিয়ে ছুটে যাওয়া ট্যাঙ্কারের পিছনের অংশ ছুঁয়ে যায় তাকে। পড়ে যায় সে। সাইকেল-সমেত গাড়ির চাকার নীচে ঢুকে যায় সে। সঙ্গে সঙ্গে ট্যাঙ্কারের পিছনের চাকায় পিষ্ট হয়ে যায় চতুর্থ শ্রেণীর ওই পড়ুয়ার ছোট্ট দেহ।

দুর্ঘটনাস্থল গৌরনগর থেকে সামান্য দূরে নতুন আনন্দবাসের বাসিন্দা, কৃষিজীবী অদ্বৈত ঘোষের এক ছেলে ও এক মেয়ে। বিজয় তাদের মধ্যে বড়। রবিবার নবদ্বীপ-কৃষ্ণনগর রাজ্য সড়কে গৌরনগরে কাছে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। জানা গিয়েছে কৃষ্ণনগরের দিক থেকে আসা ট্যাঙ্কারটি হলদিয়া যাচ্ছিল। পথ দুর্ঘটনায় বিজয়ের মর্মান্তিক মৃত্যুর পরই এলাকার মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। জনবহুল ওই এলাকায় গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রনের জন্য রাস্তায় ‘হাম্প’-এর দাবিতে বালকের মৃতদেহ আটকে পথ অবরোধ শুরু করেন।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই রাস্তায় আখছাড় দুর্ঘটনা ঘটে। কিন্তু তা রোখার ব্যবস্থা নিতে প্রশাসন নির্বিকার। স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “এই এলাকায় রাস্তায় বাম্পারের জন্য বহু দিন ধরে আমরা বলে আসছি। কিন্তু কে কার কথা শোনে। একটা কিছু ঘটলে সবাই একটু নড়েচড়ে বসে। তার পর সব ভুলে যায়।” উত্তেজিত জনতাকে বুঝিয়ে অবরোধ তুলতে পুলিশের ঘণ্টা খানেকের বেশি সময় লেগে যায়। ফলে বেশ কিছুক্ষন ওই রাস্তায় যান চলাচল ব্যহত হয়। ইতিমধ্যে পুলিশ ঘাতক ট্যাঙ্কারটি আটক করেছে, গ্রেফতার করা হয়েছে চালককে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন