দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাস।
ফের রেষারেষি এবং পরিণতিতে দুর্ঘটনা। মঙ্গলবার বহরমপুরের ঘুর্ণি মোড়ের কাছে ওই দুর্ঘটনার জেরে রাস্তার পাশে নয়ানজুলিতে বাসটি উল্টে গেলেও প্রাণহানির কোনও খবর নেই। আহত হয়েছেন ১৬ জন। তাঁদের মধ্যে অন্তত তিন জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আহতদের অধিকাংশেরই আঘাত মাথায়, পিঠে কিংবা কোমরে়।
রেষারেষিটা শুরু হয়েছিল সাত সকালেই। যাত্রীরা জানাচ্ছেন, এ দিন সকাল সাতটা নাগাদ ডোমকল ছাড়ার পর থেকেই যাত্রিবাহী বাস দু’টি ছুটছিল বহরমপুরের দিকে। বহরমপুরের ঘুর্ণির কাছাকাছি আসতেই সামনে থাকা বাসটিকে ওভারটেক করতে গিয়ে পাশের নয়ানজুলিতে উল্টে যায় পিছনের বাসটি। উল্টে যাওয়ার আগে রাস্তার পাশে একটি পাকুড় গাছে ধাক্কা মারে সে’টি। তবে ঘটনার পরেই চালক পলাতক বলে পুলিশ জানিয়েছে।
জেলা জুড়ে পথ নিরাপত্তার প্রচারের বিরাম নেই। খোদ মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগ নিয়ে জেলা পুলিশের তৎপরতারও সীমা ছিল না। তবে, তা নিয়ে চালকদের যে তেমন হেলদোল নেই, মুর্শিদাবাদ জুড়ে ক্রমান্বয়ে দুর্ঘটনার নিরিখে সে কথাই ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ কর্মসূচির পাশাপাশি পুলিশি নজরদারির বিরাম নেই। তবে, যত দিন সচেতনতা না আসে, তত দিন সাধারণ মানুষকে খেসারত দিতে হবে!’’
পুলিশ কর্তাদের শ্লেষ অবশ্য গায়ে মাখছেন না বাস মালিকেরা। মুর্শিদাবাদ জেলা বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামল সাহা রেষারেষির অভিযোগ বেমালুম অস্বীকার করে বলেন, ‘‘ বাসটির পাতি কেটে যাওয়ায় রাস্তার পাশে গাছে ধাক্কা মেরে উল্টে যায়, রেষারেষির প্রশ্নই ছিল না।’’ বাস যাত্রীরা অবশ্য সে কথা বলছেন না। মঙ্গলবারের দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসের চালকের পাশের আসনে বসেছিলেন নদিয়ার মুরুটিয়ার হানিফ শেখ। তিনি বোন রঙিলা বিবির সাথে বহরমপুরে নিজের চিকিৎসা করাতে আসছিলেন। হানিফ বলেন, ‘‘দৌলতাবাদ ছাড়ার পর থেকে বাসটি অন্য একটি বাসের সাথে রেষারেষি করছিল। চালককে নিষেধ করলেও তিনি আমাকে ‘চুপ করে বসে থাকুন’ বলে থামিয়ে দেন।’’ মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক পি উলাগানাথন বলেন, ‘‘রেষারেষি করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশকে তেমনই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’