ফরাক্কায় ব্যারাজ স্কুল।— নিজস্ব চিত্র
শেয পর্যন্ত ফরাক্কা ব্যারাজ উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলটির দায়িত্ব নিল কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক। মন্ত্রকের ‘কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় সংস্থান’ সিবিএসসি’র সিলেবাস মেনে হিন্দি ও ইংরেজি মাধ্যমে ওই স্কুলটি চালাবে। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস শুরুও হবে বলে জানা গিয়েছে।
স্কুলের অধ্যক্ষ মনোজকুমার পানি বলেন, “কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রক স্কুলটি দায়িত্ব নিয়েছে।”
বর্তমানে স্কুলটির দেখভাল করে কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রক। কিন্তু দীর্ঘদিন শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ায় শিক্ষক সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে এগারোতে। এর ফলে প্রাথমিকে তিনটি শ্রেণি এবং উচ্চ মাধ্যমিকে দু’টি শ্রেণি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
মাস খানেক আগে ফরাক্কার কংগ্রেস বিধায়ক মইনুল হক রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে ব্যারাজ স্কুলটির এই দুরবস্থার কথা জানিয়ে রাজ্য সরকারকে স্কুলটিকে অধিগ্রহণ করে আর্জি জানান। কিন্তু কোনও সাড়া মেলেনি। তাই কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রক স্কুলটি চালাতে সম্মত হওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন সকলে।
১৯৬৫ সালে ফরাক্কা ব্যারাজ নির্মাণের সময় ব্যারাজের কর্মীদের পরিবারের শিক্ষার কথা ভেবেই এই স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয়। রাজ্যের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্ষদের সিলেবাস মেনে বাংলা মাধ্যমে পড়াশোনা চলে।
তবে স্কুলটির ভবন, পরিকাঠামো নির্মাণ, শিক্ষক ও কর্মী নিয়োগ-সহ যাবতীয় আর্থিক দায়ভার বহন করে কেন্দ্রীয় সরকারের জলসম্পদ মন্ত্রক।
শুরুতে ছিল ৫২ জন শিক্ষক। এক সময় জেলায় বেশ নাম করেছিল স্কুলটি। কিন্তু পরে নানা টানাপড়েনে স্কুলের অবস্থা বেহাল হয়ে পরে। রেডিওতে নরেন্দ্র মোদীর ‘মন কি বাতে’ শুনে নিজেদের স্কুলের দুরবস্থার কথা জানিয়ে গত বছরের মার্চ মাসে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন অভিভাবকেরা। তারপরেই কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রী উমা ভারতী গত বছর এপ্রিল মাসে তৎকালীন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী স্মৃতি ইরানিকে স্কুলটির সিলেবাসের দায়িত্ব নিতে লিখিত ভাবে অনুরোধ জানান।
সেই অনুরোধ মেনেই ফরাক্কা ব্যারাজ হাইস্কুলটিকে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় হিসেবে শুরু করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রক। এ নিয়ে জলসম্পদ মন্ত্রক ও শিক্ষামন্ত্রকের কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় সংস্থান কর্তৃপক্ষের মধ্যে মউ চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে তার খসড়া পাঠানো হয়েছে ফরাক্কা ব্যারাজ ও সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে।
সেই মউ চুক্তি মত ফরাক্কা ব্যারাজ স্কুলটির সমস্ত জমি, ভবন সহ স্কুল চালানোর যাবতীয় পরিকাঠামো হস্তান্তর করবে শিক্ষা মন্ত্রকের কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় সংস্থানকে। বিদ্যালয়টি সরাসরি চালাবে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় সংস্থান কর্তৃপক্ষ। তারাই শিক্ষক ও কর্মী নিয়োগ করে। এর জন্য জলসম্পদ মন্ত্রক প্রতি বছর বার্ষিক খরচ বাবদ অগ্রিম ১ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা করে দেবে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় সংস্থানকে। ফরাক্কা ব্যারাজের সুপারিনটেন্ডিং আশিস কুমার পাল বলেন, “স্কুলটি শিক্ষা মন্ত্রকের এক সংস্থাকে দেওয়া হচ্ছে।
তারাই কর্মী, শিক্ষক সব কিছুই নিয়োগ করবে।”