টানা সাত বছর বহরমপুর মানসিক হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা সুপার পবিত্রচন্দ্র সরকারকে বদলি করা হল। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব এলেন জাতীয় শিশুস্বাস্ব্য মিশনের উত্তর দিনাজপুর জেলা আধিকারিক প্রশান্ত চৌধুরী।
বহরমপুর মানসিক হাসপাতালের চূড়ান্ত অব্যবস্থা নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই অভিযোগ উঠছিল। কিছু দিন আগে, হাসপাতাল পরিদর্শনে আসে জাতীয় মহিলা কমিশেনের সদস্যরা। তাঁদের রিপোর্টেও হাসপাতালের আবাসিকদের অযত্নের জীবনযাপনের কথা উল্লেখ করা হয়। বদলি কী সে কারণেই?
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানাচ্ছেন, গ্রামীণ স্বাস্থ্য মিশনের পক্ষে জলি চৌধুরী ও রাজ্য স্বাস্থ্য দফতেরর ডেপুটি সেক্রেটারি রূপান বন্দ্যোপাধ্যায় গত ৩০ অগস্ট আচমকা হাসপাতাল পরিদর্শন করে যে রিপোর্ট দিয়েছেন তাতেই সুপারের ‘গয়ংগচ্ছ’ মনোবাবের কথা সরাসরি উল্লেখ করেছিলেন। তার জেরেই এই তড়িঘড়ি বদলি।
পবিত্রবাবু অবশ্য সে কতা মানছেন না। তিনি বলেন, ‘‘এর মধ্যেও রহস্য খুঁজছেন! এটা নিছক রুটিন বদলি। ছিলাম একটা ছোট দায়িত্বে এখন বরং দায়িত্ব
অনেক বাড়ল।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রেও জানা গিয়েছে, হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি তথা বহরমপুর মহকুমাশাসক দিব্যনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্ব একটি প্রশাসনিক দল বেশ কয়েকটি সুপারিশ দ্রুত কার্যকর করতে নিদের্শ দিয়েছিলেন। তার মধ্যে রয়েছে— শৌচালয় সাফাই, বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা করা, নতুন পোশাক ও বিছানা কেনা। যার কোনওটাই হয়নি বলে জানা গিয়েছএ।
দীর্ঘ দিন ধরে ওই হাসপাতালে রোগী কল্যাণ সমিতির কোনও বৈঠকওএ হয়নি বলে জানা গিয়েছে। চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীর মধ্যে ছিল না কোনও সমন্বয়ও। সমন্বয় ফেরাতে হবে।
দিব্যনারায়ণ বলেন, ‘‘ওই হাসপাতালের দ্রুত হাল ফেরাতে জেলা স্বাস্থ্য দফতর, হাসপাতালের আধিকারিক ও চিকিৎসকদের নিয়ে ৩ দিন অন্তর নিয়মিত বৈঠক শুরুর কথা বলেছি।’’
হাসপাতালে এখন শ’পাঁচেক ন রোগী। তাঁদের মধ্যে অনেকেরই পোশাক নেই। বহু দিন তাঁদের অনেকেই স্নান করেননি। দিন কয়েক আগে অভিযোগ ছিল, গায়ের পোকা মারতে আবাসিকদের গায়ে ছড়ানো হয়েছিল কীটনাশক। এই প্রলম্বিত অভিযোগের তালিকাই শেষ পর্যন্ত কাল হল?
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের মৌনতা যেন সে কথাই বলছে!