Jangipur Super Speciality Hospital

সুরক্ষা সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীকে মারধর

তৃণমূলের অ্যাম্বুল্যান্স চালক ইউনিয়নের সম্পাদক সামাদ শেখের অভিযোগ, ‘‘১৫ নভেম্বর এক মহিলা নিরাপত্তা কর্মীকে ওই ইনচার্জ হেনস্থা করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জঙ্গিপুর শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:৩৭
Share:

জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালের সিকিউরিটি ইনচার্জকে মারধর করা হচ্ছে।  ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়।

জঙ্গিপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ঢুকে শুক্রবার কর্তব্যরত অবস্থায় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক ব্যক্তিকে টেনে হিঁচড়ে মারতে মারতে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেন তৃণমূলের অ্যাম্বুল্যান্স চালক ইউনিয়নের কর্মীরা। পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সন্তু প্রামাণিক নামে ওই ব্যক্তিকেও গ্রেফতার করেছে, তাঁর উপরে হামলা করেছেন বলে অভিযুক্ত আকবর শেখকেও গ্রেফতার করেছে। এই হাসপাতালের নিরাপত্তা কর্মী ও অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের দু’টি ইউনিয়নই তৃণমূলের।

Advertisement

শুক্রবার দুপুরে এই ঘটনায় জঙ্গিপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল চত্বরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তির বিরুদ্ধে কর্মীদের কাছ থেকে টাকা ও মহিলাকর্মীদের কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন অ্যাম্বুল্যান্স চালক ইউনিয়নের কর্মীরা। অভিযোগ, টাকা না দিলেই নিরাপত্তা কর্মীদের অন্যত্র বদলি করা হয়। সমস্ত অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছেন সন্তু।

জঙ্গিপুর হাসপাতালের সুপার অবিনাশ কুমার বলেন, ‘‘খুব দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। অভিযোগ যাই থাক এ ভাবে কেউ হাতে আইন তুলে নিতে পারে না। এটা ঠিক হয়নি।’’

Advertisement

তৃণমূলের অ্যাম্বুল্যান্স চালক ইউনিয়নের সম্পাদক সামাদ শেখের অভিযোগ, ‘‘১৫ নভেম্বর এক মহিলা নিরাপত্তা কর্মীকে ওই ইনচার্জ হেনস্থা করেন। ৩৫৪ ধারায় শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা করা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। টাকা তোলা সহ হাসপাতালে যা খুশি তাই করছেন তিনি। ১৮ নভেম্বর সুপারের কাছে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়।কিন্তু সুপার কোনও ব্যবস্থা নেননি।’’ শুক্রবার তাঁকে হাসপাতালে কাজ করতে দেখেই চড়াও হয়ে সন্তুর কলার ধরে টানতে টানতে বাইরে বের করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়। চলে চড় থাপ্পড়ও। কিছু দূর তাঁকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার পরে পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে।

সন্তু বলেন, “আমি একটি বেসরকারি এজেন্সির নিয়োগপত্র পেয়ে নিরাপত্তা কর্মীদের ইনচার্জ হিসেবে কাজ করি জঙ্গিপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। কাউকে বদলি বা নিয়োগ করার দায়িত্ব এজেন্সির। তারাই কাউকে বদলি করেছে। ওরা কেন অভিযোগ করছে ওরাই বলতে পারবে। হাসপাতালে শুক্রবার পরিদর্শন চলছিল। আমি ডিউটি করছিলাম। তখন কয়েক জন হাসপাতালে ঢুকে আমাকে মারধর করে, জামা ছিঁড়ে দেয়। টানতে টানতে বাইরে নিয়ে যায়। পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে।” এই মারপিটের ঘটনায় হাসপাতালে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

সুপার বলেন, ‘‘ঘটনার খবর পেয়েই তা পুলিশকে জানানো হয়েছে। পুলিশ তাঁকে উদ্ধারও করেছে। ডিউটিরত অবস্থায় যারা ওই নিরাপত্তা কর্মীকে নিগ্রহ করেছে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

তিনি জানান, তদন্ত করে যা পেয়েছি তাতে বোঝা গেছে যারা হামলা করেছে ও যার উপর হামলা হয়েছে তাদের মধ্যে ব্যক্তিগত কোনও সমস্যা চলছিল। সুপার বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে আমার কাছে একটা অভিযোগ করা হয়েছে। পুলিশের কাছেও অভিযোগ করা হয়েছে। সেই অভিযোগ তদন্ত করা হয়েছে বুধবার। সবার সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। একটু সময় তো লাগবেই। তদন্ত করে যা জানা যাবে তা নিরাপত্তা এজেন্সিকে জানানো হবে। কিন্তু তার আগেই যদি নিজেরাই এ ভাবে ফয়সালা করতে চলে আসে, মারধর করে এটা ঠিক নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন