দিশেহারা কর্মীরা

বহরমপুরে প্রার্থী কে, জানা নেই বিজেপির

মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। অথচ বিজেপি এখনও জেলার সদরশহর বহরমপুর কেন্দ্রে প্রার্থীই ঘোষণা করতে পারল না। ওই কেন্দ্রে প্রার্থী ঠিক করতে বিজেপির লেজেগোবরে দশা। জেলার ২২টির মধ্যে ২১টি আসনেই প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিজেপি। কিন্তু বহরমপুরে কেন দলের তরফে এখনও প্রার্থী ঘোষণা করা গেল না? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে নিচুতলার দলীয় কর্মীদের মধ্যে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৬ ০২:৪৮
Share:

মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। অথচ বিজেপি এখনও জেলার সদরশহর বহরমপুর কেন্দ্রে প্রার্থীই ঘোষণা করতে পারল না। ওই কেন্দ্রে প্রার্থী ঠিক করতে বিজেপির লেজেগোবরে দশা। জেলার ২২টির মধ্যে ২১টি আসনেই প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিজেপি। কিন্তু বহরমপুরে কেন দলের তরফে এখনও প্রার্থী ঘোষণা করা গেল না? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে নিচুতলার দলীয় কর্মীদের মধ্যে।

Advertisement

এ দিকে জেলা বিজেপির সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষ প্রতিদিন নিয়ম করে জানাচ্ছেন, আগামীকালই বহরমপুর কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণা করা হবে। কিন্তু যথারীতি তা হচ্ছে না। দলীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, সঙ্ঘ পরিবার, নাকি বিজেপি— কোন শিবিরের অনুগতকে প্রার্থী করা হবে সেই জটিলতায় বহরমপুর কেন্দ্রের প্রার্থী স্থির করা যাচ্ছে না। বহরমপুর কেন্দ্রে প্রার্থীর হওয়ার দৌঁড়ে মালা ভট্টাচার্য, দেবাশিস সরকার, উদয়শঙ্কর মজুমদার, মলয় মহাজনদের নাম ঘোরাফেরা করছে।

এ কথা কার্যত স্বীকার করে জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সুভাষ মণ্ডল বলেন, ‘‘অনেক নাম জমা পড়েছে। তাই ঝাড়াই-বাঝাই করতে সময় লাগছে। তবে খুব দ্রুত বহরমপুরের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হবে।’’ ঝাড়াই-বাঝাই সেরে দু’টি নাম তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছে। একজন দলের প্রাক্তন জেলা সভানেত্রী মালা ভট্টাচার্য। অন্যজন হলেন জেলা কমিটির সহ-সভাপতি দেবাশিস সরকার।

Advertisement

দলের অভ্যন্তরের খবর, মালাদেবী পূর্বতন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের অনুগামী। অন্যদিকে সঙ্ঘ পরিবারের আতুরঘর থেকে উঠে আসা দেবাশিস সরকার দলের বর্তমান রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের পছন্দের মানুষ।

মালাদেবীর রাজনৈতিক অতীত বলতে জনসঙ্ঘের কট্টর নেতা শ্যাম ভট্টাচার্যের অকাল প্রয়াণে সহানুভূতির ‘ডিভিডেন্ড’। স্বামীর অকাল প্রয়াণের পরে তিনি জেলা বিজেপির সভাপতি হন। টানা প্রায় ৭ বছর ওই পদে থাকার পর তিনি এখন রাজ্য কমিটির সহ-সভানেত্রী এবং রাহুল সিংহের অনুগামী।

দলের জেলা কমিটির এক নেতা বলেন, ‘‘দলের নিয়ম মেনে শতকরা ৩৩ ভাগ আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত রাখার কথা। তার উপরে বহরমপুর কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী একজন মহিলা। মালাবৌদিকে প্রার্থী করা হলে আমরাও বলতে পারব, ভবানীপুরে মতো বহরমপুরেও রয়েছে দিদির পাল্টা বৌদি।’’ অন্যদিকে দেবাশিসবাবুর রাজনীতিতে হাতেখড়ি অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের মাধ্যমে। তারপর আরএসএস-এর ইনসেনটিভ ট্রেনিং ক্যাম্প সেরে তিনি এখন দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের অনুগামী।

দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আসলে দলের বহরমপুরে প্রার্থী কে হবেন, তা নিয়ে দলের বর্তমান ও প্রাক্তন রাজ্য সভাপতিও ঠাণ্ডা লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়েছেন। উভয়েই চাইছেন, নিজের পছন্দের প্রার্থীকে মনোনয়ন দিতে। গৌরীশঙ্করবাবু বলেন, ‘‘আপনারা এমন খবর কোথা থেকে পেলেন জানি না। বিজেপি ও সঙ্ঘের কোনও দ্বন্দ্ব নেই। আমরা জাতীয় দল। তাই কেন্দ্র থেকে যাঁকেই প্রার্থী করবে, আমরা তাঁকেই মেনে নেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন