ফাটল বোমা। নিজস্ব চিত্র
পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন পর্ব যত এগোচ্ছে, ততই বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনা ঘটছে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে।
শনিবার চাপড়ার বাগবেৈড়িয়া পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের সময়ে বোমা পড়ে। ভাঙচুর হয় পঞ্চায়েত অফিসে। বিজেপির বিরুদ্ধে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল।
তবে শুধু সেখানেই নয়। তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বের জেরে নাকাশিপাড়া ব্লকে ধনঞ্জয়পুর পঞ্চায়েতেও তৈরি হল উত্তেজনা। শুক্রবার টসে জিতে বিজেপি প্রধান পদ পেয়ে যাওয়ার পরে তালা ঝুলল কৃষ্ণগঞ্জ পঞ্চায়েতে। রাতে পোড়াগাছা পঞ্চায়েতে তাদের সদস্যের স্বামী ও বাবাকে অপহরণের অভিযোগ তুলে কৃষ্ণনগর-মাজদিয়া রাজ্য সড়ক অবরোধ করল বিজেপি।
ধনঞ্জয়পুর পঞ্চায়েতে মোট আসন ২১টি। তার মধ্যে তৃণমূল পেয়েছে ১৫টি, বিজেপি ৬টি। তৃণমূলের অভিযোগ, তাদের সাত জন সদস্যকে তুলে নিয়ে গিয়ে এক জায়গায় রেখে দিয়েছিলেন বিজেপির ছয় সদস্য। পুলিশ গিয়ে সকলকে গোপন ডেরা থেকে থানায় নিয়ে আসে। শনিবার সকালে দু’দলই নাকাশিপাড়া থানার সামনে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে। পরে তৃণমূলের সাত ও বিজেপির ছ’জন মিলেই পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করেন। প্রধান নির্বাচিত হন তৃণমূলের নার্গিস শেখ, উপপ্রধান তৃণমূলেরই নাসরিন বিবি।
বিজেপির নদিয়া জেলা উত্তর সাধারণ সম্পাদক মহাদেব সরকার আবার বলেন, ‘‘বিজেপিই ওখানে বোর্ড গড়েছে। তৃণমূলের সাত জন আমাদের দলে যোগ দেবেন, এই শর্তেই বোর্ড গড়া হয়েছে।’’ নার্গিস যদিও দাবি করেন, ‘‘আমরা মোটেই বিজেপিতে যোগ দিচ্ছি না। তৃণমূলেই আছি। বিজেপিকে যে সঙ্গে নিতে হল, তার জন্য বিধায়ক তাপস সাহা দায়ী।’’ আর বিধায়ক বলেন, ‘‘আমরা চাই, এখনই ওদের দল থেকে বহিষ্কার করে দেওয়া হোক।’’
তৃণমূলে সূত্রের খবর, ধনঞ্জয়পুর পঞ্চায়েতে তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠী। তার একটি অঞ্চল সভাপতি সংসার শেখের, অন্যটি কার্যকরী সভাপতি জাহাঙ্গির শেখের। জাহাঙ্গিরের স্ত্রীকে প্রধান পদের জন্য মনোনীত করেছিল দল। তাতেই গোসা হয় সংসারের। বিধায়ক বলেন, ‘‘সংসার শেখ দলের সঙ্গে বেইমানি করেছে।’’
কৃষ্ণগঞ্জ পঞ্চায়েতে তৃণমূল এবং বিজেপি উভয়েই ১০টি করে আসন পেয়েছে। শুক্রবার টসে বিজেপির প্রধান এবং তৃনমুলের উপপ্রধানের পদ পায়। শনিবার পঞ্চায়েতে স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীদের বৈঠক ছিল। কিন্তু দেখা যায়, দফতরে তালা ঝুলছে। পরে কৃষ্ণগঞ্জ ব্লক প্রশাসনের লোকজন পুলিশ নিয়ে এসে তালা খোলে।
স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসের দাবি, “পঞ্চায়েত সমিতিতে আমাদের সদস্য বেশি থাকায় উপসমিতি আমরাই গড়ব। হতাশায় বিজেপি তালা ঝুলিয়েছে।” বিজেপির দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি জগন্নাথ সরকার বলেন, “বাজে কথা। আগের বোর্ডের দুর্নীতির নথি যাতে কেউ না সরাতে পারে, তার জন্যই তালা ঝোলানো হয়েছিল।”