Coronavirus in West Bengal

প্রৌঢ়-সঙ্গেও আক্রান্ত নন ডাক্তার-নার্স

শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ঘণ্টা ছয়েক ভর্তি থাকা চাপড়ার প্রৌঢ়ের সংক্রমণ ধরা পড়ার পরে যে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল জেলার স্বাস্থ্যমহলে, এখন তা অনেকটাই প্রশমিত।

Advertisement

সুস্মিত হালদার

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২০ ০২:৫৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

ইতিমধ্যে ছ’জনের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়লেও নদিয়া জেলায় এখনই ‘Rapid অ্যান্টিবডি টেস্টিং’ হচ্ছে না। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের দাবি, নদিয়া জেলা যেহেতু ‘হটস্পট’ নয় তাই এই পরীক্ষার জন্য ভ্রাম্যমাণ কোনও গাড়ি আপাতত বার হবে না। কেন নদিয়া হটস্পট হতে পারে না, সে সম্পর্কে রবিবারই জেলার কর্তাদের ব্যাখ্যা রাজ্যকে জানানো হয়েছে।

Advertisement

করোনা সংক্রমণ সত্ত্বেও নদিয়া কেন ‘হটস্পট’ নয়?

জেলার স্বাস্থ্যকর্তাদের ব্যাখ্যা, নদিয়ায় এখনও পর্যন্ত দুই জায়গায় করোনা আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। তেহট্টের বার্নিয়ায় দিল্লি ছুঁয়ে আসা পাঁচ জন এবং চাপড়ার চারাতলায় কলকাতা ফেরত এক জন। দুই জায়গার মধ্যে পার্থক্য প্রায় বিশ কিলোমিটারের। কিন্তু এই দুই জায়গার বাইরে কোনও স্থানীয় সংক্রমণ এখনও চিহ্নিত হয়নি। ফলে কোনও এলাকায় ‘Rapid অ্যান্টিবডি টেস্টিং’-এর প্রয়োজন নেই।

Advertisement

শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ঘণ্টা ছয়েক ভর্তি থাকা চাপড়ার প্রৌঢ়ের সংক্রমণ ধরা পড়ার পরে যে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল জেলার স্বাস্থ্যমহলে, এখন তা অনেকটাই প্রশমিত। কেননা শক্তিনগর ও চাপড়া গ্রামীণ হাসপাতালের যে সব চিকিৎসক, নার্স ও অন্য স্বাস্থ্যকর্মীরা ওই প্রৌঢ়ের সংস্পর্শে এসেছিলেন, তাঁদের লালারস পরীক্ষার রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’ এসেছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। সোমবার জেলাশাসক বিভু গোয়েল বলেন, “মোট ১৫ জনকে কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ১৩ জনের রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছে। সকলেই নেগেটিভ। আশা করছি, বাকি দু’জনের রিপোর্টও দ্রুত পেয়ে যাব।” শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের অ্যাসিস্টিন্ট সুপার আফিদুল মিঞার দাবি, “আমরা নাইসেডের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। সেখান থেকে জানানো হয়েছে, বাকি দু’জনের রিপোর্টও নেগেটিভ।”

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, চারাতলার ওই প্রৌঢ় প্রথমে চাপড়া গ্রামীণ হাসপাতালের আউটডোরে যান। সেখানে যে চিকিৎসক এবং হাসপাতাল কর্মী তাঁর সংস্পর্শে এসেছিলেন, তাঁদের দু’জনকেই কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছিল। দু’জনেরই রিপোর্ট নেডেটিভ এসেছে। আবার শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগ এবং মেল মেডিসিন ওয়ার্ডের যে দুই চিকিৎসক তাঁকে দেখেছিলেন তাঁরা ছাড়াও অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার, দু’জন ডেপুটি নার্সিং সুপার, সিস্টার ইনচার্জ, পাঁচ নার্সিং স্টাফ, এক চতুর্থ শ্রেণির কর্মী এবং এক নিরাপত্তারক্ষীকেও কৃষ্ণনগর কর্মতীর্থে কোয়রান্টিন সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। এঁদের মধ্যে যে ১১ জনের রিপোর্ট এসে পৌঁছেছে, সেগুলি সবই নেগেটিভ। প্রৌঢ়ের সংস্পর্শে আসায় গ্লোকাল হাসপাতালের চার কর্মীকেও কোয়রান্টিনে রেখে পরীক্ষা করা হয়েছিল। তাঁদের রিপোর্টও নেগেটিভ এসেছে।

এত জন চিকিৎসক, নার্স ও অন্য স্বাস্থ্যকর্মী কোয়রান্টিনে চলে যাওয়ায় চাপে পড়ে গিয়েছিলেন জেলা হাসপাতালের কর্তারা। নেগেটিভ রিপোর্ট আসায় তাঁরা হাফ ছেড়়ে বেঁচেছেন। কোয়রান্টিনে থাকা এক চিকিৎসকের কথায়, “কোথা থেকে যে কী হয়ে যাচ্ছে, কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। রিপোর্ট পেয়ে মনে হচ্ছে যেন নতুন জীবন পেলাম।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন