প্রতীকী ছবি
মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার দেবদাস সাহাকে রাতারাতি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে বদলি করা হল। সম্প্রতি তিনি ফতোয়া দিয়েছিলেন, ‘‘যদি কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়, তবে মৃত্যুর শংসাপত্রে তা উল্লেখ করা যাবে না।’’ তা নিয়ে রাজ্য জুড়ে হইচই পড়ে যায়। পরে তা সংশোধনও করা হয়। বিরোধীরা দাবি করেছেন, ওই আধিকারিককে বলির পাঁঠা করা হয়েছে। তবে তৃণমূল তা
উড়িয়ে দিয়েছে। দেবদাসবাবু নিজে এ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্যই করতে চাননি। তাঁর শুধু বক্তব্য, ‘‘এ বিষয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না।’’
দেবদাসবাবুর জায়গায় সুপার হিসেবে আনা হল মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজেরই কমিউনিটি মেডিসিনের অধ্যাপক শর্মিলা মল্লিককে। বুধবার রাতেই রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষ সচিব এই বদলির নির্দেশ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সুপারের বদলি নিয়ে হইচই শুরু হয়েছে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। কেন এই বদলি তা নিয়ে প্রশাসনের কর্তাদের কাছ থেকে ব্যাখা পাওয়া যায়নি।
কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরী এ দিন দিল্লি থেকে বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে করোনা আক্রান্তদের তালিকা প্রকাশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। হাসপাতালে হাসপাতালে কড়া নির্দেশ, মৃত্যুর শংসাপত্রে করোনায় মৃত্যু লেখা চলবে না। এই সত্য কথাটা গতকাল প্রকাশ করে দিয়েছিলাম। আর বাংলার তৃণমূল সরকার রাতারাতি ওই হাসপাতালের সুপারকে বদলি করে দিল।’’ তাঁর দাবি, ‘‘নির্দেশ দিয়েছে সরকার। তা হলে সরকারের বদলি হওয়া উচিত। সেখানে বলির পাঁঠা বানানো হচ্ছে আধিকারিকদের। সুপারকে বদলি করে মুখ্যমন্ত্রী প্রমাণ করলেন তিনি প্রতিহিংসার রাজনীতি বিশ্বাস করেন।’’
তৃণমূলের মুখপাত্র অশোক দাস বলেন, ‘‘করোনা রুখতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজে ঈর্ষান্বিত হয়ে অধীরবাবু আলটপকা
কথা বলছেন।’’
কোন চিকিৎসক, কবে এবং কী দায়িত্ব পালন করবেন, সে বিষয়ে গত ২৬ এপ্রিল একটি ডিউটি রোস্টার বের করেন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার দেবদাস সাহার সই করা ওই ডিউটি রোস্টারের নিচে লেখা ছিল, ‘‘ইন কেস অব কোভিড পজিটিভ, নো মেনশন অব কোভিড ডিসি’’ (যদি কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তবে মৃত্যুর শংসাপত্রে তা উল্লেখ করা যাবে না)। মঙ্গলবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এই নির্দেশিকা ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় শোরগোল পড়ে যায়। এর পরেই তার বদলি হওয়ায় রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। হইচই শুরু হতে ২৬ এপ্রিল অবশ্য ওই নির্দেশনামা সংশোধন করা হয়েছে। সংশোধিত ডিউটি রোস্টারে বলা হয়েছে, ‘‘তাৎক্ষণিক কারণকেই রোগী মৃত্যুর কারণ হিসেবে দেখাতে হবে।’’ তাতেও অবশ্য বিতর্ক থামেনি।