ভোট বাঁচাতে সমঝোতা ভরসা

দশ-এগারোর অঙ্ক ডোমকলে

বিধানসভা নির্বাচনে, জোটের মেঘ ঠেলে ডোমকল ছিল ডোমকলেই।মুর্শিদাবাদে তাদের শক্ত ঘাঁটি ডোমকল ছাড়তে চায়নি সিপিএম। কংগ্রেসও, তাদের হারানো জমি ফিরে পেতে ডোমকলে প্রার্থী প্রত্যাহারের প্রশ্নে গোঁ ধরে ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ডোমকল শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৭ ০২:৩৫
Share:

মিছিল: আসন সমঝোতার পরে। ডোমকলে। নিজস্ব চিত্র

বিধানসভা নির্বাচনে, জোটের মেঘ ঠেলে ডোমকল ছিল ডোমকলেই।

Advertisement

মুর্শিদাবাদে তাদের শক্ত ঘাঁটি ডোমকল ছাড়তে চায়নি সিপিএম। কংগ্রেসও, তাদের হারানো জমি ফিরে পেতে ডোমকলে প্রার্থী প্রত্যাহারের প্রশ্নে গোঁ ধরে ছিল।

ফলে লড়াই শুরু হয়েছিল ত্রিমুখী। তবে, জল গড়াতেই বাম-কংগ্রেস তলে তলে হাত মেলানোয় শেষতক আসনটি গিয়েছিল সিপিএমের ঝুলিতে। বিধানসভা নির্বাচনের দেড় বছরের মাথায় সেই ডোমকলেই পুর নির্বাচন।

Advertisement

তবে, ইতিমধ্যেই মুর্শিদাবাদের এই প্রান্তিক ব্লকের অধিকাংশ পঞ্চায়েত ডিগবাজি খেয়ে আশ্রয় খুঁজেছে শাসক দলে। পঞ্চায়েত সমিতিও গিয়েছে তৃণমূলের দখলে। এই অবস্থায় ডোমকল পুরসভা নির্বাচনের মাস খানেকের দূরত্বে এসে তৃণমূলের দলীয় পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী তোপ দেগে গিয়েছেন, ডোমকল এ বার তাঁর ‘২১-০’ চাই।

এ বার আর তাই পুরনো গোঁ নয়, জোটের আবহে বাম-কংগ্রেস মিলিজুলি করেই প্রার্থী দিল ডোমকলে। ২১টি আসনের এগারোটি আসনে লড়াই করবে বামেরা। বাকি দশটিতে জোটের বাজি কংগ্রেস। মঙ্গলবার, জোট প্রার্থীরা মিছিল করে গিয়ে মনোনয়নপত্র জমাও দিয়ে এসেছেন। যা দেখে তৃণমূলের নেতারা বলছেন, ‘‘ভোটের নাম বাবাজী!’’

বাম-কংগ্রেস নেতারা অবশ্য জোটের প্রশ্ন নয়, এই বাজারেও তাঁরা গলা চড়িয়ে বলছেন, ‘‘এই জোট ন্ত্রাসের মোকাবিলা করতে, মানুষকে একটু স্বস্তি দিতে।’’

তবে, ডোমকল যে তারা যে কোনও মূল্যে চায় মুখ্যমন্ত্রী জেলা সদর থেকে তার প্রশাসনিক সভা ডোমকলে সরিয়ে এনে তা পরোক্ষে জানিয়ে দিয়েছেন। রাজ্যের তাবড় নেতা মন্ত্রীরাও কড়া রোদে জনসভা করে গিয়েছেন এখানে।

ডোমকল ছিনিয়ে নিতে তৃণমূলের ভরসা এ বারও জেলা সভাপতি মান্নান হোসেনের পুত্র সৌমিক। দলের অন্দরের খবর, ‘সংশয়’ সেখানেই। কারণ, আদতে বহরমপুরের বাসিন্দা সৌমিক নিয়ে স্থানীয় নেতাদের একাংশের ক্ষোভ রয়েছে যথেষ্ট।

সৌমিক অবশ্য সে সব বিরোধীদের ‘অপপ্রচার’ বলেই উড়িয়ে দিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘‘বাম-কংগ্রেস হেরে যাওয়ার ভয়ে জোট করেছে। ওরা জোট করে লুটেপুটে খেতে চাইছে। রাজ্যে জোট করেও মুখ থুবড়ে পড়েছিল দুই দল, এ বারও এক অবস্থা হবে।’’কংগ্রেসের শাওনী সিংহ রায়ের দাবি, ‘‘তৃণমূলকে এখানে হারাতে কংগ্রেস একাই যথেষ্ট। পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি ভাঙালেও মানুষ আমাদের সঙ্গে।’’ আর, সিপিএম নেতা আনিসুরের রহমান দাবি, ‘‘আমাদের জোট তো বিধানসভা থেকেই রয়েছে। এটা নতুন কোনও ঘটনা তো নয়।’’

এ দিন দুর্গাপুরে এক জনসভায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও বলেন, ‘‘প্রদেশ থেকে কেন্দ্রীয় ভাবে জোট করার কোনও নির্দেশিকা দেওয়া হয়নি। স্থানীয় ভাবে নেতৃত্ব জোট করছেন। ডোমকল, রায়গঞ্জে হয়েছে। অন্যত্রও হবে।’’

জোটবদ্ধ সেই মুখ তুলে ধরতে এ দিন তাই জোটের মিছিলে হাঁটতে দেখা গিয়েছে কংগ্রেসের আবু তাহের খান, মনোজ চক্রবর্তী, ফিরোজা বেগমকে। বামেদের পক্ষে ছিলেন বদরুদ্দোজা, আনিসুর রহমান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন