লড়াইয়ে থাকতে এখনই ‘প্রার্থী’ বামের

তবে ওই লোকসভা কেন্দ্রে দলের প্রার্থী কে হবে—সিপিএম এখনও জানায়নি। কিন্তু তার আগেই রানিনগর ব্লকের সিপিএমের কর্মীরা দেওয়াল লিখনের কাজ শুরু করে দিয়েছেন এবং সেখানে তাঁরা মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরেছেন বদরুদ্দোজা খানকে।

Advertisement

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস 

শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৯ ০২:১১
Share:

ভোট-প্রচার: ইসলামপুরে। নিজস্ব চিত্র

লোকসভা নির্বাচনের এখনও নির্ঘন্ট ঘোষণা করেনি কমিশন। কিন্তু তার অনেক আগেই মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে আবু হেনার নাম ঘোষণা করেছিলেন অধীর চৌধুরী।

Advertisement

তবে ওই লোকসভা কেন্দ্রে দলের প্রার্থী কে হবে—সিপিএম এখনও জানায়নি। কিন্তু তার আগেই রানিনগর ব্লকের সিপিএমের কর্মীরা দেওয়াল লিখনের কাজ শুরু করে দিয়েছেন এবং সেখানে তাঁরা মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরেছেন বদরুদ্দোজা খানকে।

যদিও গত লোকসভা ভোটে ওই কেন্দ্রের সিপিএমের প্রার্থী হিসেবে জয়ী হন বদরুদ্দোজা খান। রানিনগর বিধানসভার ইসলামপুর থানা এলাকায় বেশ কয়েকটি গ্রামের দেওয়ালে প্রার্থী হিসেবে লেখা হয়েছে সিপিএমের ওই সংসদের নাম।

Advertisement

সিপিএম নেতৃত্ব অবশ্য ওই ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ও অতি উৎসাহী কর্মীদের কাজ বলে আড়াল করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু রাজনৈতিক অন্দরের খবর—মূলত কংগ্রেসের উপরে চাপ তৈরি করতেই বামফ্রন্ট তথা সিপিএম ওই কৌশল নিয়েছে।

এ ব্যাপারে বদরুদ্দোজা খান বলছেন, ‘‘আমাদের জয়ী আসনে আমাদেরই প্রার্থী থাকবে এটাই স্বাভাবিক। রাজ্য নেতৃত্ব বিষয়টি কংগ্রেসের নেতাদের কাছেও পরিষ্কার করে জানিয়ে দিয়েছে। তবে কংগ্রেসের উপরে চাপ তৈরির কোনও উদ্দেশ্য আমাদের ছিল না। আমরা বলেছিলাম প্রার্থীর নাম ফাঁকা রেখে দেওয়াল লিখন করতে। কিন্তু দলের নিয়ম ভেঙে যে এ ভাবে কর্মীরা আগে থেকেই প্রার্থীর নাম লিখে দেবেন, তা জানতে পারিনি।’’

দলীয় কর্মীরা অতি উৎসাহিত হয়ে এমনটা করেছে বলে সিপিএম নেতৃত্ব দাবি করলেও ওই দেওয়াল লিখন মুছতে রাজি নন কেউ-ই।

বদরুদ্দোজা যেমন বলছেন, ‘‘এখন ওই দেওয়াল লিখন মুছে ফেললে বিভ্রান্ত হবেন কর্মীরা। কর্মী ও সাধারণ ভোটারদের উপরে বাজে প্রভাব পড়বে। ফলে এখন ওই দেওয়াল লিখন মুছে ফেলা ঠিক হবে না।’’ নেতার সুরে কর্মীরাও বলছেন, ‘‘আমাদের জেতা আসনে আমাদের প্রার্থী থাকবে।’’

যদিও এখনও সরকারি ভাবে সিপিএম-কংগ্রেসের মধ্যে ‘জোট’ হয়নি। সিপিএমের এক নেতার কথায়, আমাদের রাজ্য নেতৃত্ব কংগ্রেসের নেতাদের জানিয়ে দিয়েছেন— ওদের চারটে, আমাদের দু’টো মিলিয়ে মোট ছ’টা আসন নিয়ে কোনও কথা হবে না। বাকি আসনগুলি নিয়ে আলোচনা চলতে পারে। কিন্তু কংগ্রেস আগে থেকেই মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে আবু হেনার নাম ঘোষণা করেছিল। ফলে আমাদের কর্মীরাও দলের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে বদরুদ্দোজা খানের নাম লিখে দিয়েছে। এটা একেবারেই নিচুতলার কর্মীদের আবেগ। দলেরও উচিত কর্মীদের আবেগ-মর্যাদার সম্মান দেওয়া।

এখন ভোটের দিন ঘোষণার আগেই সিপিএম-কংগ্রেস পৃথক ভাবে তাদের দুই প্রার্থীকে তুলে ধরা প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র অশোক দাস বলছেন, ‘‘এই জেলায় কংগ্রেস এবং সিপিএম দুটোই সাইনবোর্ডে পরিণত হয়েছে। এখন যা নাচানাচি করার, করুক। ভোটের সময়ে দেওয়াল লিখনের লোক খুঁজে পাবে না ওরা।’’

রানিনগর বিধানসভার বিধায়ক কংগ্রেসের ফিরোজা বেগম জানান, সিপিএম কার নামে দেওয়াল লিখন করেছে, কেন দেওয়াল লিখন করেছে, তা নিয়ে কংগ্রেসের কোনও মাথাব্যথা নেই। ফিরোজা বলছেন, ‘‘এ জেলায় সাংগঠনিক দিক থেকে মজবুত কংগ্রেস। তিনটি আসনেই মজবুত সংগঠন আছে আমাদের। ফলে এই জেলার বিভিন্ন এলাকায় সিপিএম এজেন্ট দিতে পারবে না।’’ এ দিকে কংগ্রেসের রাজ্য নেতৃত্ব বামেদের রবিবার পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে ভাবার সময় দিয়েছে। তার পরেই যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার কংগ্রেস নেবে।

ভোটের দিন এখনও ঘোষণা হয়নি। তার আগে সিিপএম প্রার্থীর দেওয়াল লিখনকে ঘিরে জমে উঠেছে ভোটের বাজার!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement