ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত। ডোমকলের রঘুনাথপুরে তোলা নিজস্ব চিত্র।
এ যেন খোদ বিসমিল্লায় গলদ।
২৪ কিলোমিটার রাস্তায় সিংহভাগই মসৃন। চওড়া। অথচ শুরুর কিলোমিটার খানেকের বেহাল দশা। খানাখন্দে ভরপুর। পিচের আস্তরণ উঠে গিয়েছে অনেকদিন আগেই। রঘুনাথপুর থেকে নটিয়াল যাওয়ার ওই রাস্তা ব্যবহার করে দুটি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তত ১৮টি গ্রামের প্রায় কুড়ি হাজার মানুষ নানা প্রশাসনিক প্রয়োজনে মহকুমা শহর ডোমকলে আসেন। এমনকী ওই পঞ্চায়েত এলাকা— জিতপুর ও ধুলাউড়ির অনেকেই নিত্যদিনের হাট বাজারও সারতেও ওই রাস্তা পেরিয়ে ডোমকলে আসেন। ভোর থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত লোকের ভিড়ে গিজগিজ করে রাস্তা। দুটি বেসরকারি বাস, গোটা কুড়ি ম্যাজিক ও ডজন কয়েক লছিমন এই রাস্তা দিয়ে নিত্য চলাচল করে।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় তৈরি ওই রাস্তায় দিয়ে লোকজনে প্রাণ হাতে নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। রাস্তার শুরুতেই বড় বড় গর্তে গাড়ি উল্টে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। মাসে অন্তত দিন পাঁচেক দুর্ঘটনা লেগেই থাকে। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, পঞ্চায়েত থেকে ব্লক প্রশাসনিক কার্যালয়ের কর্তাদের একাধিক বার রাস্তার হালের কথা জানানো হয়েছে। কিন্তু কেউ কোনও কথা কানেই তোলেন না।
যদিও জিতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্তাদের দাবি, ‘‘রাস্তাটি ডোমকল পুর এলাকার অর্ন্তভুক্ত। ফলে রাস্তা সংস্কারে আমাদের কোনও দায় নেই।’’ ডোমকলের মহকুমা শাসক তাহিরুজ্জামান বলেন, ‘‘মানুষের অসুবিধে হলে সেই রাস্তার সংস্কার করতে হবে। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’
বছর কুড়ি আগে ডোমকলের রঘুনাথপুর মোড় থেকে বর্তনাবাদ মাঠ পযর্ন্ত এক কিলোমিটার রাস্তা বানানো হয়। তারপর থেকে ওই রাস্তার কোনও সংস্কার হয়নি। বছর পাঁচেক আগে ভাঙাচোরা ওই এক কিলোমিটার রাস্তার পর থেকেই প্রায় ২৩ কিলোমিটার পাকা রাস্তা তৈরি হয়। নব নির্মিত ওই পিচের রাস্তা ধরে লোকজন গ্রামের লোকজন ডোমকলে যেতে শুরু করেন। কিন্তু শুরুর এক কিলোমিটার বেহাল হওয়ায় কারণে ঘন ঘন দুর্ঘটনা ঘটছে। এলাকার ধুলাউড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের পাররঘুনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা আনিসুল আলম বলেন, ‘‘কুড়ি বছর আগে তৈরি ওই রাস্তার আজও সংস্কার হল না।’’ মাস কয়েক আগে সিপিএমের একটি সভা শেষে বাড়ি ফেরার পথে ওই রাস্তায় লছিমন উল্টে প্রায় ৪০ জন জখম হন। তাছাড়াও বর্ষা নামতেই রাস্তার হাল আরও খারাপ হচ্ছে।
রাস্তার একপাশে শেয়ালমারী নদী। ফলে এই বর্ষায় কোনও গাড়ি উল্ট়ে গেলে তা নদীতে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ধুলাউড়ির বাসিন্দা আব্দুল হালিম বলেন, ‘‘রাস্তার মাঝে মাঝে তৈরি হয়েছে বড় গর্ত। বর্ষাকালে সেগুলি বড় বিপদের।’’ ডোমকল পঞ্চায়েত সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রদীপ চাকি বলেন, ‘‘ওই রাস্তা সংস্কারের কথা ভাবা হয়েছে। বর্ষাটা একটু ধরলেই কাজ শুরু হবে।’’
এই অপেক্ষাতেই দিন গুনছেন এলাকার লোকজন।