বিক্রি যে পড়বে, আশঙ্কা ছিলই। সত্যি হল সেটাই। পাঁচশো-হাজারের নোট বাতিলের ধাক্কায় লোকজন মেলাতে ভিড় করল বটে, বইয়ের পাতা উল্টেপাল্টে দেখলোও, মলাট উল্টে নতুন বইয়ের গন্ধও শুকে দেখলো, কিঞ্চিৎ দামও করল, কিন্তু ট্যাঁকের কড়ি খসিয়ে বই কিনল কই!
আর ঠিক সেই কারণেই গত বছরের তুলনায় এ বারে বিক্রি কমেছে অন্তত ২২ শতাংশ। নদিয়া জেলা বইমেলা কমিটির সম্পাদক তথা নদিয়া জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক মৃত্যুঞ্জয় মিত্র বলেন, ‘‘অন্যান্য সেক্টরের মতো জেলা বইমেলাতেও নোট বাতিলের প্রভাব পড়েছে। যার ফলে এ বারে জেলা বইমেলায় ২২ শতাংশ বিক্রি কমেছে।”
গত ২২ ডিসেম্বর কৃষ্ণনগরে পাবলিক লাইব্রেরি চত্বরে নদিয়া জেলা বইমেলা শুরু হয়েছিল। চলেছে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। বইমেলার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মেলায় ৮১টি প্রকাশনী সংস্থা এসেছিল। বিক্রি হয়েছে ৩২ লক্ষ টাকার। গত বছর নদিয়া জেলা বইমেলায় প্রায় ৪১ লক্ষ টাকার বই বিক্রি হয়েছিল। গত বারের তুলনায় প্রায় ৯ লক্ষ টাকা বিক্রি কমেছে।
কী বলছেন বিক্রেতারা? এক প্রকাশনি সংস্থা কর্তার কথায়, ‘‘নোট বাতিলের ফলে মানুষের হাতে নগদ টাকা কম রয়েছে। যার জন্যই হয়তো এই হাল। গত বছর আমাদের স্টল থেকে ৪ লক্ষ টাকার বই বিক্রি হয়েছিল। কিন্তু এ বারে সেটা তিনের গণ্ডিতেই আটকে গিয়েছে।’’
কৃষ্ণনগরের শক্তিনগরের বাসিন্দা রেশমি সিংহরায় বলছেন, “বই কেনার ইচ্ছা থাকলেও হাতে নগদ টাকা নেই। তাই এ বছর বেশি বই কিনতে পারিনি।” কিন্তু কিছু কিছু স্টলে তো ক্যাশলেস ব্যবস্থা চালু ছিল। সেখান থেকে বই নেননি কেন?
জবাবে রেশমি বলেন, ‘‘যে স্টলে বই পছন্দ হচ্ছে, দেখা যাচ্ছে সেখানে ক্যাশলেস ব্যবস্থা চালু নেই। আবার যেখানে কার্ড নিচ্ছে, সেখানে বই পছন্দ হচ্ছে না। কী করব!’’