প্রশাসনের দাবি, প্রচার চলছে

ডেঙ্গির হানা গত বছরের চেয়ে বেশিই

গত বছর কৃষ্ণনগর ও কল্যাণী পুর এলাকায় কিছু লোক আক্রান্ত হন ঠিকই। তবে চাকদহ ব্লকের লক্ষ্মীপুর, পূর্ণনগর ও শ্রীনগর, কৃষ্ণনগর-১ ব্লকের মহিষনাংড়া, শান্তিপুর ব্লকের মেতিরডাঙা ও গৌরাঙ্গপল্লিতে ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা গিয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কৃষ্ণনগর ও বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৭ ০১:৩৮
Share:

পুরোদমে বর্ষা নামতেই রক্তচক্ষু দেখাতে শুরু করেছে ডেঙ্গি। গত বারের অভিজ্ঞতা সত্ত্বেও স্বাস্থ্য দফতর ও বেশির ভাগ পুরসভা ডেঙ্গির উপদ্রব আটকাতে তো পারেইনি, বরং এ বার প্রকোপ আরও বেশি। এবং বর্ষা যত এগোবে, আরও বাড়াবাড়ি হওয়ারই আশঙ্কা।

Advertisement

নদিয়ায় গত বছর ১৬৮২ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। কিন্তু জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছিলেন মাত্র ছ’জন। সেখানে এ বছর জুন পর্যন্ত আক্রান্ত ৫৬। এ মাসে এখনও চার জন ডেঙ্গি আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। গত বছর মুর্শিদাবাদে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১১৩২। জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ২৬ জন রোগীর সন্ধান মিলেছিল। সেই সংখ্যা এ বার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৩-এ।

গত বছর কৃষ্ণনগর ও কল্যাণী পুর এলাকায় কিছু লোক আক্রান্ত হন ঠিকই। তবে চাকদহ ব্লকের লক্ষ্মীপুর, পূর্ণনগর ও শ্রীনগর, কৃষ্ণনগর-১ ব্লকের মহিষনাংড়া, শান্তিপুর ব্লকের মেতিরডাঙা ও গৌরাঙ্গপল্লিতে ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা গিয়েছিল। মুর্শিদাবাদের ২৬টি ব্লকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি, ১০৫ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন ফরাক্কায়। সবচেয়ে কম সামশেরগঞ্জ ও রঘুনাথগঞ্জ ২ ব্লকে— ৩ জন করে। পুরসভাগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি বহরমপুরে ১৯ জন এবং সবচেয়ে কম কান্দিতে এক জন।

Advertisement

পুর প্রশাসনের দাবি, ডেঙ্গির প্রকোপ রুখতে এ বার মে থেকে প্রতি মাসে দু’বার বাড়ি-বাড়ি সমীক্ষা করা হচ্ছে। বাড়িতে কোথাও জল জমছে কি না, নোংরা-আবর্জনা ও নিকাশি নালা নিয়মিত সাফাই হচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখে প্রতি দিন পুরসভার খাতায় লিপিবদ্ধ করা হচ্ছে। পরে সাফাইকর্মীরা ওই সমস্ত বাড়িতে গিয়ে সাফাই করতে যাচ্ছেন। গ্রামীণ এলাকায় আশাকর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও স্বনির্ভর গোষ্ঠী সদস্যদের দিয়ে লাগাতার প্রচার করা হচ্ছে। প্রতিটি পুরসভা ও ব্লকে পাঁচ হাজার করে লিফলেট বিলি হয়েছে। দেওয়াল লিখন হয়েছে, লাগানো হয়েছে ফ্লেক্স। স্কুলে-স্কুলে ক্যুইজ, পঞ্চায়েতভিত্তিক প্রশিক্ষণ শিবিরও করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ৫০ হাজারের নীচে জনসংখ্যা এমন পুরসভাকে ওই কর্মসূচির আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। ফলে মুর্শিদাবাদ জেলায় বাদ গিয়েছে মুর্শিদাবাদ ও ডোমকল এবং নদিয়ায় কুপার্স ক্যাম্প, বীরনগর ও তাহেরপুর। বহরমপুর, বেলডাঙা, কান্দি, জঙ্গিপুর, জঙ্গিপুর, ধুলিয়ান এবং জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভা রয়েছে প্রচারের বৃত্তে।

মুর্শিদাবাদের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিরুপম বিশ্বাসের বক্তব্য, ‘‘মে থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ৯০টি পুর এলাকার প্রতি বাড়ি ঘুরে মানুষের সচেতনতা বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে সরকার। প্রতি মাসের ১-৫ এবং ১৬-২০ তারিখ, পাঁচ দিন করে প্রচারের কাজ চলছে।’’ নদিয়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায় বলেন, “এ বার যাতে কোনও ভাবে ডেঙ্গি ছড়িয়ে পড়তে না পারে তার জন্য আমরা সব রকম চেষ্টা করছি।”

মুর্শিদাবাদের ডেপুটি সিএমওএইচ পার্থপ্রতিম সরকার জানান, ১০০ দিনের কাজ-সহ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত মানুষজনকে এক দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। বিডিও, যুগ্ম বিডিও এবং ব্লক মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করবেন। শান্তিপুরের পুরপ্রধান অজয় দে, কৃষ্ণনগরের চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল স্বপন সাহা, বহরমপুরের পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্য, বেলডাঙার পুরপ্রধান ভরত ঝাওরের দাবি, প্রচার চলছে পুরোদমে। তবে পুরকর্মীদের লাগাতার ধর্মঘট থাকায় কান্দিতে এবং পুরপ্রধান নিয়োগ নিয়ে জটিলতা চলতে থাকায় জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জে এখনও প্রচার শুরুই হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন