TMC

TMC: ‘দুর্নীতি’র খোঁজে রাস্তা খনন

আবাস প্রকল্পে দুর্নীতি-সহ আরও অভিযোগ তুলেছেন জাকির। এর পাল্টা জাকিরের বিরুদ্ধেও একাধিক অভিযোগ তুলেছেন মোজাহারুলও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

জঙ্গিপুর শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২১ ০৭:৫৩
Share:

রাস্তা খুঁড়ছেন জাকির-অনুগামীরা। রঘুনাথগঞ্জে। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়।

জাকির-মোজাহারুল বিরোধ থামার লক্ষণ নেই। এ বার মোজাহারুল এবং তাঁর নেতৃত্বাধীন পুরসভার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণ করতে কোদাল-বেলচা নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়লেন জাকিরের অনুগামীরা।

Advertisement

পুরসভার জলপ্রকল্পে ‘দুর্নীতি’ খুঁজে বের করতে বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী জাকির হোসেনের কয়েকশো অনুগামী রঘুনাথগঞ্জের বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা খুঁড়ে দেখলেন শনিবার দুপুরে। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে খোঁড়াখুঁড়ির পর্ব চলে। পরে জাকির-অনুগামীরা অভিযোগ করেন, ‘‘কোথাও ছ’ ইঞ্চি, কোথাও আট ইঞ্চি মাটির গভীরে পোঁতা হয়েছে জল সরবরাহের পাইপ। কিন্তু তা আরও গভীরে পোঁতার কথা ছিল।’’ এ দিন ‘খনন অভিযানে’ নেতৃত্ব দেন জাকিরের অনুগামী বলে পরিচিত একাধিক বিদায়ী কাউন্সিলর, শহর তৃণমূলের সভাপতি। অভিযানে হাজির ছিলেন জাকিরের ভাগ্নে রনি বিশ্বাসও।

পুরসভার প্রশাসক মোজাহারুল ইসলাম অবশ্য পাল্টা বলেন, ‘‘আগাম অনুমতি ছাড়াই যাঁরা শহরের বিভিন্ন রাস্তা খুঁড়েছেন, সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তাঁদের চিহ্নিত করার চেষ্টা হচ্ছে। ফুটেজ দেখার পর পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করবে পুরসভা। তবে তার আগে পুরসভার কো-অর্ডিনেটরদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে এ নিয়ে। তারপর অভিযোগ জানানো হবে রঘুনাথগঞ্জ থানায়।’’ বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই জাকিরের সঙ্গে মোজাহারুলের ‘বিবাদ’ চলছে পুরসভার দখল নিয়ে। মোজাহারুল সিপিএম থেকে তৃণমূলে আসার পরেও পুরসভার কর্তৃত্বে রয়ে গিয়েছেন। রাজনীতির কারবারিদের একাংশের মতে, মন্ত্রী থাকাকালীন পুরসভার বিষয়ে সে ভাবে মাথা গলাননি জাকির। কিন্তু এখন তিনি পুরসভার কর্তৃত্ব দখলে নিতে চাইছেন। পুরনির্বাচনে জঙ্গিপুর পুরসভায় পুরপ্রধান পদের দাবিদারও তিনি। মোজাহারুলও কর্তৃত্ব হাতছাড়া করতে নারাজ। পুরসভার দখল কার হাতে থাকবে, তা নিয়েই দুই নেতার মধ্যে দ্বন্দ্ব অব্যাহত। সম্প্রতি জাকির অভিযোগ করেন, পুরসভার অধীন কয়েক কোটি টাকা দামের জমি নিয়ে মামলায় পুর কর্তৃপক্ষ ইচ্ছাকৃত ভাবে আইনজীবী নিয়োগ না করে মামলা হেরে গিয়েছেন জমি ব্যক্তি-বিশেষকে পাইয়ে দিতে। আবাস প্রকল্পে দুর্নীতি-সহ আরও অভিযোগ তুলেছেন জাকির। এর পাল্টা জাকিরের বিরুদ্ধেও একাধিক অভিযোগ তুলেছেন মোজাহারুলও।

Advertisement

দুই নেতার এই বিরোধে দলের জঙ্গিপুরের নেতারা ‘ক্ষুব্ধ’। সাত দিনের মধ্যে দুই নেতাকে আলোচনায় বসার জন্যে ডাকা হবে বলেও জানান জঙ্গিপুরে তৃণমূলের সভাপতি খলিলুর রহমান। এরই মধ্যে এ দিন পুরসভার ‘দুর্নীতি’ তুলে ধরতে বিভিন্ন রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি করেন জাকির-সমর্থকরা। তাতে বিরোধ আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন রাজনীতির কারবারিদের একাংশ। বিদায়ী কাউন্সিলর পুরুষোত্তম হালদার বলেন, “আমি আম্রুত প্রকল্পের কাউন্সিলর ইনচার্জ ছিলাম। টেন্ডার কমিটিরও সদস্য ছিলাম। কিন্তু আমায় কোনও মিটিংয়ে ডাকা হয়নি। সমস্ত কাজে দুর্নীতি হচ্ছে দেখে আমি পদত্যাগ করি।’’ এ নিয়ে মোজাহারুলের প্রতিক্রিয়া, “আম্রুত প্রকল্পে পুরসভার কোনও দায় নেই। কারণ, এ কাজ আমাদের
তত্ত্বাবধানে হচ্ছে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন