মুখে ধোঁয়া ছেড়ে ডাক্তার বললেন, ভয়ের কী আছে

সকাল থেকে তলপেটে ব্যথা। কোমড় ছাড়িয়ে ব্যাথা যেন পা দু’টোও অসাড় করে দিচ্ছে সাকিনার। মা’র সঙ্গে ধুঁকতে ধুঁকতে জঙ্গিপুর হাসপাতালে এসেছিলেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:১৯
Share:

সিগারেট মুখে চিকিৎসক। — নিজস্ব চিত্র

সকাল থেকে তলপেটে ব্যথা। কোমড় ছাড়িয়ে ব্যাথা যেন পা দু’টোও অসাড় করে দিচ্ছে সাকিনার। মা’র সঙ্গে ধুঁকতে ধুঁকতে জঙ্গিপুর হাসপাতালে এসেছিলেন তিনি।

Advertisement

টিকিট করিয়ে, অপেক্ষা পর্বের পরে ডাক্তারের ঘরে ঢুকেই দম প্রায় বন্ধ হওয়ার জোগার সাকিনা বিবির। থমকে গিয়েছিলেন মা-মেয়ে। লম্বা ধোঁয়া ছেড়ে সিগারেট ধরিয়েছেন ডাক্তার হয়দর নওয়াজ। বলছেন, ‘‘দাঁড়িয়ে থেকো না, আমার অত সময় নেই।’’

সরকারি হাসপাতালে, কর্তব্যরত ওই চিকিৎসকের সিগারেট মুখে রোগী দেখা নজর এড়ায়নি জনা কয়েক কলেজ পড়ুয়ার। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার শো কজ করা হয়েছে স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ হয়দর নওয়াজকে।

Advertisement

সাকিনার মা বলছেন, ‘‘আমি বলার চেষ্টা করছিলাম, সিগারেটের ধোঁয়ায় হাঁফ ধরছে মেয়ের। শুনে পাল্টা ধমক খেতে হল, ‘সিগারেটের সঙ্গে রোগের কী সম্পর্ক!’’

তার পর, আগাগোড়া ছোট-বড় নানাবিধ ধোঁয়া ছেড়ে তিনি রোগী পরীক্ষা করে গিয়েছিলেন।

ঠিক সেই সময়ে, তাঁর ঘরে ঢুকেছিলেন জনা কয়েক পড়ুয়া। সিগারেট খাওয়ার ফাঁকে এমন অবহেলার চিকিৎসা দেখে আপত্তিটা তুলেছিলেন তাঁরাই। তবে, তাতে তেমন যায় আসেনি কিছু। জঙ্গিপুর হাসপাতালের স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ হয়দর নওয়াজ তোয়াক্কাহীন গলায় জানিয়ে দেন, ‘‘মেলা বকবক কোর না দেখি, কীসে কী হয় আমি জানি!’’

আরও পড়ুন: ছলেবলে বাড়ে বিল, রোগীর ওঠে নাভিশ্বাস

জঙ্গিপুর হাসপাতালেই দিন কয়েক আগে, কর্তব্যরত কিছু কর্মীর অনর্গল হোয়াটস অ্যাপ কিংবা ফেসবুক ব্যবহারের অভিযোগ পেয়ে নির্দেশিকা জারি করে তা বন্ধ করেছিলেন শ্বাশতবাবু।এ ব্যাপারটাও কড়া হাতেই সামলাতে চান তিনি।

তবে, তাঁর সিগারেট খাওয়া নিয়ে হইচই নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন না ওই চিকিৎসক। হয়দর বলছেন, “আমি তো ধূমপান না করে থাকতে পারি না, তবে, সোমবার ডিউটিতে থাকার সময় সিগারেট খেয়েছি কিনা মনে পড়ছে না।’’ কিন্তু ছবি যে সে কথাই বলছে? ফের হাসছেন হয়দর, ‘‘ছবি সব সময় সত্যি বলে বুঝি!’’

তবে, চিকিৎসকের অমন বেপরোয়া মনোভাব ভাল চোখে দেখছেন না হাসপাতালের তৃণমূল চিকিৎসক সংগঠনের সভাপতি সুকুমার মন্ডল। তিনি বলছেন, “ধুমপান নিয়ে সরকারি নির্দেশিকা সব চিকিৎসকেরই মেনে চলা উচিত।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন