'Dooarey sarkar'

শিকেয় দূরত্ব, খোলা দুয়ারে ঝাঁপাল ভিড়

বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা পাওয়ার জন্য শিবিরের ভিড়ে ভঙ্গ হয়েছে করোনাকালের দূরত্ববিধি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই লোকজনের মানুষের মুখে মাস্ক ছিল না। একে অন্যের প্রায় ঘাড়ের উপরে উঠে ফর্ম পূরণ থেকে শুরু করে নাম নথিভূক্ত করেছেন তাঁরা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:০২
Share:

‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির প্রথম দিনেই জেলা জুড়ে লাইনে চোখে পড়ার মতো ভিড়। নিজস্ব চিত্র।

বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের টেবিলগুলোর সমানে লম্বা লাইন। কেউ এসেছেন স্বাস্থ্যসাথীর ফর্ম জমা দিতে, কেউ বা রেশন কার্ড সংশোধন করাতে বা একশো দিনের কাজের প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করাতে।

Advertisement

ধর্মদা কে কে হাইস্কুলের শিবিরে বিভিন্ন দফতরের কর্মীরা ব্যস্ত। এরই মধ্যে এসে হাজির নদিয়ার জেলাশাসক পার্থ ঘোষ। তিনি এসেই ঢুকে গেলেন একশো দিনের কাজের প্রকল্পের শিবিরে। দেখতে চাইলেন রেজিস্টার। কর্মীরা রেজিস্টার দেখাতে পারলেন না। জেলাশাসক জানতে চাইলেন, প্রতিটি শিবিরে কেন ল্যাপটপ নেই? কেন নেই ইন্টারনেটের ব্যবস্থা? কারও কাছে সদুত্তর না পেয়ে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা নাকাশিপাড়ার বিডিও কল্লোল বিশ্বাসকে তিনি নির্দেশ দিলেন বিষয়টিতে নজর দিতে।

মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে জেলা জুড়ে শুরু হয় ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি। বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য শিবির করা হলেও স্বাস্থ্যসাথীর টেবিলের সামনেই ভিড় ছিল সবচেয়ে বেশি। কৃষ্ণনগর পুরসভার ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের জন্য পুরসভার নিজস্ব অনুষ্ঠান বাড়িতে কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। দুপুর ৩টে পর্যন্ত সেখানে কন্যাশ্রী প্রকল্পের জন্য ১৯ জন, খাদ্যসাথী প্রকল্পের জন্য ৪০ জন এসেছেন। রূপশ্রীর টেবিলে জমা পড়েছে মাত্র একটি ফর্ম। সেই জায়গায় স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের টেবিলের সামনে কয়েকশো মানুষের ভিড়। নবদ্বীপে দুটি ওয়ার্ডের ভিড় সামাল দিতে চারটি ফর্ম তোলার কাউন্টার খোলা হয়। অন্য দিকে খাদ্যসাথীর জন্য তুলনায় অনেক কম মানুষ ছিলেন।

Advertisement

করিমপুর ১ বিডিও অনুপম চক্রবর্তী জানান, এ দিন জমা পড়া প্রায় পাঁচ হাজার ফর্মের মধ্য আড়াই হাজার জমা পড়েছে শুধু মাত্র স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের জন্যই। একই অবস্থা করিমপুর ২ ব্লকেও। ওই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রাজু মল্লিক বলেন, “স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প নিয়ে মানুষ সবচেয়ে বেশি উৎসাহী।” তবে আরও নানা রকম সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্যও অনেকে আবেদন করেছেন। ধর্মদায় বার্ধক্য ভাতার জন্য আবেদন করে স্থানীয় বাসিন্দা হীরা প্রামাণিক তিনি বলেন, “এর আগেও চার বার আবেদন করেছি। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। তাই আবার করতে এলাম। দেখি, এ বার সমস্যার সমাধান হয় কি না।”

বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা পাওয়ার জন্য শিবিরের ভিড়ে ভঙ্গ হয়েছে করোনাকালের দূরত্ববিধি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই লোকজনের মানুষের মুখে মাস্ক ছিল না। একে অন্যের প্রায় ঘাড়ের উপরে উঠে ফর্ম পূরণ থেকে শুরু করে নাম নথিভূক্ত করেছেন তাঁরা। শিবিরে‌ উপস্থিত কর্মীরা বারবার মাস্ক পড়ার জন্য আবেদন করলেও বিশেষ লাভ হয়নি। সর্বত্রই ঢোকার মুখে হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার স্প্রে করেছেন কর্মীরা। কিন্তু ভিতরে ঢুকে বেশির ভাগই কোনও নিয়ম মানেননি।

চাকদহ পুরসভার অন্যতম প্রশাসক দীপক চক্রবর্তী বলেন, “আসলে এত লোক হবে, তা বোঝা যায়নি। সবাইকে দুরত্ব বজায় রেখে দাঁড়াতে বলা হচ্ছে।”

জেলাশাসক বলেন, “নদিয়ার বিভিন্ন ব্লকে ও পুরসভা এলাকায় দুয়ারে সরকার কর্মসূচির জন্য শিবির করা হচ্ছে। ভাল সাড়া মিলছে। প্রথম পর্যায়ের শিবির ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। পরে আরও তিনটি পর্যায়ে শিবির হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement