‘জলের অপচয় করা বহু মানুষেরই অভ্যাস। সচেতন না হলে কিন্তু মুশকিল’

রাস্তাঘাটে ফোয়ারা, জলকষ্টে গৃহস্থ

গরম এখনও সে ভাবে পড়েইনি। কিন্তু এরই মধ্যে নবদ্বীপ পুরএলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে পানীয় জলের জন্য হাহাকার পড়ে গিয়েছে। কোথাও সরু সুতোর মতো হয়ে পড়ছে, তো কোথাও বালতি ভরছে নোংরা জল। এ দিকে, পুরসভার ব্যবস্থাপণায় রাস্তাঘাটে বসানো দু’হাত অন্তর কলে জল পড়েই চলেছে।

Advertisement

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়

নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৭ ০১:১৪
Share:

—প্রতীকী ছবি।

গরম এখনও সে ভাবে পড়েইনি। কিন্তু এরই মধ্যে নবদ্বীপ পুরএলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে পানীয় জলের জন্য হাহাকার পড়ে গিয়েছে।

Advertisement

কোথাও সরু সুতোর মতো হয়ে পড়ছে, তো কোথাও বালতি ভরছে নোংরা জল। এ দিকে, পুরসভার ব্যবস্থাপণায় রাস্তাঘাটে বসানো দু’হাত অন্তর কলে জল পড়েই চলেছে। ব্যবহার করার পরে যে কলের মুখ বন্ধ করতে হয়, সে কথা মনেই থাকে না লোকজনের।

গঙ্গার তীরবর্তী নবদ্বীপ শহরে এমনিতে জলের সমস্যা তুলনায় কম। মাটির সামান্য নীচেই জলস্তর মেলে। পুরসভাও ডজন খানেক পাম্পের সাহায্যে সরাসরি জল তুলে পাইপ লাইনের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি জল সরবরাহ করে। শহরের কিছু মানুষ ব্যক্তিগত কুয়ো বা নলকূপের জল ব্যবহার করলেও, একটি বড় অংশের মানুষ দৈনন্দিন ব্যবহার এবং পানীয় হিসেবে নির্ভর করেন পুরসভার সরবরাহ করা ওই জলের উপরেই।

Advertisement

নবদ্বীপের পূর্ব দিকের ৫, ৬, ৭, ৮, ৯, ১০, ১২ কিংবা দক্ষিণ দিকের ১৮, ১৯, ২০, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডগুলিতে জলের সমস্যা সবচেয়ে বেশি। প্রথমত, যত দিন যাচ্ছে কল দিয়ে সরু সুতোর মতো জল পড়ছে। দ্বিতীয়ত, কখনও আবার কল থেকে মিলছে নোংরা জল। এমনিতে দিনে তিনবার জল দেয় পুরসভা। বাসিন্দাদের কথায়, ‘‘ধরাবাঁধা সময়ে যতটুকু জল মেলে, তাতে প্রয়োজন পূরণ হয় না। তার মধ্যে যদি নোংরা জল পড়ে, কী বিপত্তি।’’

সমস্যাটা দেখা দিয়েছিল শীতকাল থেকেই। কিন্তু বছরের ওই সময়টা জলের প্রয়োজন পড়ে কম। ফলে লোকে তেমন মাথা ঘামায়নি। কিন্তু রোদের তেজ বাড়তে না বাড়তেই কপালে ভাঁজ পড়ছে বাসিন্দাদের। গৃহবধূ স্বপ্না রায়ের কথায়, ‘‘সাধারণ মাপের এক বালতি জল ভরতে ন-দশ মিনিট সময় লেগে যাচ্ছে। কী করি!’’

ঠিক উল্টো ‘জল-ছবি’ চোখে পড়ে নবদ্বীপ শহরে হাঁটলে। গলি থেকে রাজপথের পাশে দু’হাত অন্তর পুরসভার জলের কল। যত ক্ষণ জল থাকে, কল দিয়ে জলে পড়েই যায়। সাধারণ মানুষের অভিযোগ, কাজের থেকে জল অপচয় হয় বেশি। গাড়ি থেকে দোকান, রাস্তাঘাট, কি না ধোয়া হয় ওই জলে। কিন্তু ব্যবহার শেষে কলের মুখটাই বন্ধ করতে ভুলে যান ব্যবহারকারীরা।

গৃহস্থ বাড়ির কলের পাইপ লাইনে যেখানে নির্দিষ্ট মাপের ‘ফেরুল’ ব্যবহার করা হয়, সেখানে রাস্তার কলে হাফ ইঞ্চি পাইপ দিয়ে সরাসরি জল সরবরাহ করা হয় পাম্প থেকে। ফলে জল পড়ে মোটা হয়ে। এ দিকে ভুগতে হয় বাড়ির মানুষদের।

নবদ্বীপের পুরপ্রধান বিমানকৃষ্ণ সাহা বলেন “একশ বারো কোটি টাকা ব্যয় করে গোটা নবদ্বীপের পানীয় জল সরবরাহ ব্যবস্থা নতুন করে গড়া হয়েছে। দ্রুত নতুন ব্যবস্থা চালু করা হবে।” জলের অপচয় প্রসঙ্গে নবদ্বীপ পুরসভার জলবিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুরপিতা মিহিরকান্তি পাল বলেন, “অকারণে জল নষ্ট করা বহু মানুষের অভ্যাস। সচেতন না হলে মুশকিল।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন