শৌচাগার ধসে গিয়ে তৈরি হয়েছে গর্ত। —নিজস্ব চিত্র।
সপ্তাহ খানেক আগে তৈরি হয়েছে শৌচাগার। কিন্তু এরই মধ্যে শৌচাগারের একাংশ ভেঙে পড়ল। শুক্রবার সমশেরগঞ্জের আলমশাহী প্রাথমিক স্কুলের ঘটনা। এ দিন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক শৌচাগারে ঢুকতেই ভেঙে পড়ে নির্মানের একাংশ। ঘটনার পর স্কুলের ৮টি শৌচাগারই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে প্রধান শিক্ষক ওই ঘটনায় অল্প জখম হয়েছে। গর্তের ভিতরে তার পা ঢুকে গিয়েছে।
এনটিপিসি স্বচ্ছ ভারত মিশন প্রকল্পে গত বছর জুন মাস থেকে মালদহ-মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন স্কুলে ঠিকাদারের মাধ্যমে শৌচাগারগুলি এ দিনের দুর্ঘটনার পরই এনটিপিসির তৈরি শৌচাগারে নিম্ন মানের মাল ব্যবহারের অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। ঠিকাদারেরা এনটিপিসির বানানো নকশা মতো শৌচাগার বানাননি বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয় শৌচাগার নির্মাণের পর এক বছর ধরে তা সাফাইয়ের দায়িত্ব ছিল ঠিকাদারের। অভিযোগ, তা না করেই ঠিকা সংস্থাগুলি বিল তুলে নিয়েছে। কিন্তু এ সব বিষয়ে এনটিপিসি কর্তা নিশ্চুপ বলে অভিযোগ।
স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের অভিযোগ, ঠিকাদারেরা স্কুলে এসে নিজের ইচ্ছে মতো কাজ করেছেন। কাজের জন্য কত টাকা বরাদ্দ হয়েছে। কী ভাবে কাজ হবে তা জানাননি ঠিকাদারেরা। তাছাড়া এনটিপিসির তরফেও ঠিকাদারেরা ঠিক মতো কাজ করেছেন কিনা, তা দেখা হয়নি। অনেক প্রধান শিক্ষকই সব কিছু না জেনে শৌচাগার সম্পূর্ণ হয়েছে—এই মর্মে শংসাপত্র দিতে রাজি হননি ঠিকাদারকে। তবুও ঠিকাদারেরা বিল পেয়েছেন বলেও অভিযোগ।
এনটিপিসি সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি শৌচাগারের জন্য দেওয়া হয়েছে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা করে। প্রতিটি স্কুলে কমপক্ষে দু’টি করে শৌচাগার গড়া হয়েছে। শৌচাগার চালুর পরবর্তী এক বছরে তা রক্ষণাবেক্ষণ ও সাফাই করার খরচ হিসেবে বাড়তি ৪১ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে নির্মাণকারী সংস্থাকে।
ফরাক্কার এনটিপিসি কর্তৃপক্ষ ৩,১৫৬টি শৌচাগার তৈরির জন্য ৩৪ কোটি ৭১ লক্ষ টাকা খরচ করেছেন। রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ ১২ কোটি ৯৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে।
আলমশাহীর ওই প্রাথমিক স্কুলে ৮টি শৌচাগার তৈরি হয়েছে। প্রধান শিক্ষক বিকাশ চৌধুরী বলেন, “বছর খানেক আগে এক ঠিকাদার এসে শৌচাগার কোথায় তৈরি হবে তা জানতে চাইলেন। তিনি এর বেশি কিছু জানাননি। মাস-খানেক আগে তিনি শৌচাগার সম্পূর্ণ হয়েছে বলে শংসাপত্র চান। দিইনি। আর এ দিন তো শৌচাগার ভেঙে পড়ল।’’
এনটিপিসি ফরাক্কার কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি শাখার ম্যানেজার অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ইঞ্জিনিয়রকে স্কুলে পাঠানো হবে। তবে ৩১৫৬টি শৌচাগার ঘুরে ঘুরে কি দেখা সম্ভব? তাই প্রধান শিক্ষকদের “ইউসি” কেই বিশ্বাস করতে হয়েছে।” কিন্তু বহু প্রধান শিক্ষক বলছেন তারা ‘ইউসি’তে সই করেননি। অসীমবাবু বলছেন, “অভিযোগ এলে অবশ্যই তদন্ত হবে।’’