বাজার খোলা, রাস্তায় যান কম
CPM

বাম-কংগ্রেস জোটবদ্ধ রূপ দেখাল বন্‌ধ

জেলা জুড়ে বেসরকারি বাস ট্রেকার চলেনি বললেই চলে। তবে সরকারি বাস এদিন যথারীতি রাস্তায় নেমেছিল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:৫৫
Share:

বন্‌ধ-চিত্র: ইসলামপুরে পুলিশের সঙ্গে কথা কাটাকাটি।

বাম কংগ্রেসের ছাত্র যুব সংগঠনের নবান্ন অভিযানে পুলিশ তাঁদের উপরে অন্যায় ভাবে অত্যাচার চালিয়েছে এমনই অভিযোগে শুক্রবার ১২ ঘণ্টার বনধের ডাক দিয়েছিল বামেরা। আর সেই বনধকে সমর্থন জানিয়ে মুর্শিদাবাদে কোথাও বামেদের সঙ্গে যৌথভাবে, কোথাওবা আলাদা ভাবে পথে নেমেছে কংগ্রেসও। বহরমপুরে দু’টি দল আলাদা ভাবে পথে নামে। কিন্তু গির্জার মোড়ে দু’টি মিছিল পাশাপাশি হয়ে যায়। তাতেই জেলার রাজনীতির অভিজ্ঞরা বলছেন, এত দিন বাম-কংগ্রেস জোটের যে কথা কানে শোনা গিয়েছিল, এ বার তা সত্যিই কোথাও কোথাও দেখা গেল।

Advertisement

জেলা জুড়ে বেসরকারি বাস ট্রেকার চলেনি বললেই চলে। তবে সরকারি বাস এদিন যথারীতি রাস্তায় নেমেছিল। বহরমপুর, কান্দি-সহ জেলার বেশ কিছু এলাকায় রাস্তায় টায়ারে আগুন লাগিয়ে অবরোধ করেন বন্‌ধ সমর্থকরা। পরে অবশ্য পুলিশ অবরোধ তুলে দেয়।

মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমার বলেন, ‘‘বন্‌ধকে কেন্দ্র করে জেলায় অপ্রীতিকর কোনও ঘটনা ঘটেনি। ফলে কাউকে গ্রেফতারও করতে হয়নি।’’ জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলেন, ‘‘এদিন অফিসগুলিতে একশো শতাংশ উপস্থিতি ছিল। অপ্রীতিকর কোনও ঘটনা ঘটেনি।’’

Advertisement

বাম-কংগ্রেস নেতৃ্ত্ব জানিয়েছেন, এদিনের বন্‌ধে জেলায় ভাল প্রভাব পড়েছে। জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, ‘‘এদিনের বন্‌ধে মুর্শিদাবাদের মানুষ ব্যাপক সাড়া দিয়েছেন। বন্‌ধ সর্বাত্মক হয়েছে।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক নৃপেন চৌধুরী বলেন, ‘‘এদিনের বন্‌ধে মানুষ সাড়া দিয়েছেন। জেলার রাস্তায় যানবাহন চলাচল করেনি। মানুষ ঘর থেকে বেরোননি। বন্‌ধকে ঘিরে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেনি।’’

তবে জেলা তৃণমূলের অন্যতম কো-অর্ডিনেটর অশোক দাস বলেন, ‘‘মানুষ সর্বনাশা বন্‌ধকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। আর পাঁচ দিনের মতো শুক্রবারও মুর্শিদাবাদ ছিল স্বাভাবিক।’’
জেলা জুড়ে এদিনই স্কুল খুলেছে। স্কুল চালু থাকার পাশাপাশি সরকারি অফিসও চালু ছিল। সরকারি কর্মীদের উপস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও লোকজন এদিন কম এসেছে।

বহরমপুরে মোহনা বাস টার্মিনাস থেকে প্রতিদিন প্রায় ৫০০টি বেসরকারি বাস চলাচল করে। অন্য বন্‌ধের দিনের মতো এদিনও সেখান থেকে গোটা দশেক বেসরকারি বাস চলাচল করেছে। ফলে লোকজন রাস্তায় বেরিয়ে সমস্যায় পড়েন। বেসরকারি বাস রাস্তায় না থাকায় যাত্রীদের সরকারি বাস ধরার জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছে।

এ দিন বহরমপুর শহরে অধিকাংশ দোকান-বাজার খোলা ছিল। এদিন সকালে বন্‌ধের সমর্থনে বহরমপুরে কংগ্রেস ও বামেরা আলাদাভাবে মিছিল বের করেছিল। তবে জেলার অনেক জায়গায় যৌথভাবেও মিছিল করতে দেখা গিয়েছে। হরিহরপাড়া, নওদার দোকানপাট পুরোপুরি বন্ধ ছিল। বেসরকারি বাস, ট্রেকার চলেনি। ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকলেও অন্য সরকারি অফিস ছিল খোলা। সিপিএম নেতা কর্মীরা দফায় দফায় বিভিন্ন জায়গায় মিছিল, পথ অবরোধ করেন। অফিসে, স্কুলে আধিকারিক, কর্মীরা হাজির থাকলেও সাধারণ মানুষের আনাগোনা ছিল কম।

এদিন বনধকে উপেক্ষা করে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের ছবি তোলার ভিড় ছিল হরিহরপাড়ায়।
সামগ্রিক ভাবে জঙ্গিপুর মহকুমার কোথাও বন্‌ধের তেমন কোনও প্রভাব পড়েনি। দোকান পাট, বাজার হাট খোলা ছিল। বেসরকারি বাস ছাড়া সব ধরনের যানবাহন চলেছে। তবে কংগ্রেস ও সিপিএম ছোট ছোট মিছিল বের করেছে সর্বত্রই। অবরোধও হয় চার পাঁচ জায়গায়। তবে তাতে যান চলাচলে কোনও ব্যাঘাত ঘটেনি।

এদিন জঙ্গিপুরের বিড়ি শিল্পাঞ্চল সচল ছিল। জাতীয় সড়কেও যান চলাচলে কোনও বাধা ছিল না।
কান্দিতে বাস টার্মিনাসের সামনে বন্‌ধ সমর্থকরা টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করেছি। কান্দি মহকুমা জুড়ে মিছিল অবরোধ হয়েছে। বেসরকারি বাস রাস্তায় না থাকলেও সরকারি বাস চলাচল করেছে। কান্দি শহরে বাজার আংশিক বন্ধ থাকলেও বাকি ব্লক এলাকায় বাজার খোলা ছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন