গণপ্রহারে জখম ধৃত

চোরের মারে মৃত্যু বৃদ্ধের

কোনও রকমে ঠেলে ফেলে তাঁর উপরে চড়াও হয় ওই দুষ্কৃতী। তার মারে মৃত্যু হয় আনারুলের। ওই দুষ্কৃতীকে ধরে ফেলে জনতা। তাদের প্রহারে গুরুতর জখম হয় হাবিল শেখ নামের ওই দুষ্কৃতী। তাকে গ্রেফতার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৪৩
Share:

মাঝরাতে ‘চোর-চোর’ চিৎকারে ঘুম ভেঙে গিয়েছিল তাঁর। ঘুম ভাঙতেই দেখেন তির বেগে ঘর থেকে কেউ ছুটে পালানোর চেষ্টা করছে। উঠোনে লাফ দিয়ে তাকে জাপটে ধরেছিলেন গৃহকর্তা আনারুল ইসলাম (৬২)।

Advertisement

কোনও রকমে ঠেলে ফেলে তাঁর উপরে চড়াও হয় ওই দুষ্কৃতী। তার মারে মৃত্যু হয় আনারুলের। ওই দুষ্কৃতীকে ধরে ফেলে জনতা। তাদের প্রহারে গুরুতর জখম হয় হাবিল শেখ নামের ওই দুষ্কৃতী। তাকে গ্রেফতার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে পুলিশ। ভগবানগোলার হাবাসপুর গ্রামের মাঠপাড়া-পাকাদরগা পাড়ায় সোমবার রাতে সেই ঘটনা ঘটে। আনারুলের মৃত্যুতে হতবাক গোটা গ্রাম।

ভগবানগোলা থানার ওসি উৎপল দাস জানান, মহিষাস্থলী পঞ্চায়েতের কাশীপুরের বাসিন্দা হাবিলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা রয়েছে। ওই ঘটনায় জেল হেফাজতও হয়েছিল তার। জামিনে ছাড়া পেয়ে সে গ্রামে ফিরেছিল। তবে চুরি, না তার অন্য কোনও উদ্দেশ্য ছিল তা তাকে জেরা করে জানার চেষ্টা চলছে।

Advertisement

আনারুল পেশায় আনাজ ব্যবসায়ী। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই রাতে আনারুল ও তাঁর স্ত্রী রেহানা বিবি বাড়ির বারান্দায় ঘুমিয়ে ছিলেন। ঘরের ভিতরে তাঁদের দুই মেয়ে শুয়ে ছিল। রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ ঘরে বাক্স খোলার শব্দে ঘুম ভেঙে যায় ছোট আনারুলের ছোট মেয়ে মাজকুরার। সে টর্চ জ্বেলে হাবিলকে দেখে ‘চোর-চোর’ বলে চিৎকার করে ওঠে।

তাতে ঘুম ভেঙে যায় আনারুলের। এ দিকে চিৎকার শুনে হাবিল ঘর থেকে ছুটে পালানোর চেষ্টা করে। বারান্দা থেকে লাফ দিয়ে নামের সঙ্গে সঙ্গে আনারুলও লাফ দিয়ে তাকে ধরে ফেলে। বাড়ির উঠোনের মধ্যে দুজনের মধ্যে ধস্তাধস্তি চলে বেশ কিছুক্ষণ। রেহানা বিবি জানান, হাবিল কোনও রকমে হাত ছাড়িয়ে তাঁর স্বামীর উপর চড়াও হয়। নাগাড়ে তাঁকে কিল-ঘুষি-লাথি মারতে থাকে। কিছু ক্ষণের মধ্যে মাটিতে লুটিয়‌ে পড়েন।

এই সময় সমানে চিৎকার করতে শুরু করেন রেহানা আর তাঁর দুই মেয়ে। তাঁদের চিৎকারে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। তাঁদের দেখে ছুটে পালানোর চেষ্টা করে হাবিল। কিন্তু, জনতা তাড়া করে ধরে ফেলে তাকে। শুরু হয় গণপ্রহার। এর মধ্যে সাবাই অচৈতন্য আনারুলকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। হাবিলকে বেঁধে রেখে আনারুলকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

তাঁকে প্রথমে ভগবানগোলা-১ ব্লকের কানাপুকুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা তাঁকে লালবাগ মহকুমা হাসপাতালে পাঠান। সেখানকার হাসপাতালের চিকিৎসকরা আনারুলকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

ঘটনার খবর যায় থানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হাবিলকে লালবাগ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে তাকে গ্রেফতার করে ভগবানগোলা থানায় নিয়ে আসা হয়।

আনারুল শেখ এলাকায় শাসক দলের কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়ে ওই বাড়িতে যান এলাকার স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। পুলি‌শ জানিয়েছে, হাবিলের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন