Cyclone Yaas

ফের ভাঙন নদীর পাড়ে, দুশ্চিন্তায় পাড়া

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সরাটি, হেমনগর, রায়ডাঙার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ভাগীরথীর ভাঙন দেখা দিয়েছে গত দিন দুয়েক ধরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শান্তিপুর ও চাকদহ শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০২১ ০৬:৫৩
Share:

ভাঙন সরাটি পঞ্চায়েতে। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র ।

ইয়াসের কারণে আগে থেকেই জেলার ভাঙন ও বন্যাপ্রবণ এলাকাগুলিতে নজরদারি শুরু করেছিল সেচ দফতর। বুধবার পর্যন্ত সে ভাবে প্রভাব কিছু না পড়লেও টানা বৃষ্টির মধ্যেই শান্তিপুর পুরসভা এবং কল্যাণী ব্লকের ভাঙনপ্রবণ এলাকা ফের ভাঙনের কবলে পড়ল। শান্তিপুরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের স্টিমার ঘাট এবং কল্যাণী ব্লকের চাঁদুরিয়া ২ পঞ্চায়েত এলাকা ভাগীরথীর ভাঙন দেখা দিয়েছে। দুই জায়গায় ক্ষতি হয়েছে রাস্তারও। সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার থেকেই ওই সমস্ত এলাকায় ভাঙন রোধের কাজ শুরু করবে তারা।

Advertisement

শান্তিপুর শহরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের স্টিমার ঘাট এলাকায় বুধবার সন্ধ্যা থেকেই ভাঙন শুরু হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় এক বিঘার মতো জমি তলিয়ে গিয়েছে ভাগীরথীর গর্ভে। শান্তিপুর শহরের পাশের বেলগড়িয়া ২ পঞ্চায়েতের তালতলাপাড়া এলাকায় যাওয়ার রাস্তাও রয়েছে এখানে। সেই রাস্তার একাংশ ভাঙনে তলিয়ে গিয়েছে। ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে আগেও একাধিক বার ভাঙনের ঘটনা ঘটেছে সাম্প্রতিক অতীতে। এলাকার প্রাথমিক স্কুলের কাছে চলে এসেছে ভাগীরথী। আবার পাশেই রয়েছে জনবসতি। বছর খানেক ধরেই ভাগীরথী যে ভাবে এগিয়ে আসছে তাতে ভিটেছাড়া হওয়ার আশঙ্কা করছেন বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার ভাঙন কবলিত এলাকায় যান সেচ দফতরের আধিকারিকেরা। শুক্রবার থেকেই সেখানে ভাঙন রোধে কাজ শুরু হবে বলে সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। এলাকার প্রাক্তন কাউন্সিলার বৃন্দাবন প্রামাণিক বলেন, ‘‘এই এলাকায় ক্রমশ ভাঙনের গতি বাড়ছে ভাগীরথীর। আমরাও পরিস্থিতির ওপরে নজর রাখছি।’’

বুধবার বিকাল থেকে কল্যাণী ব্লকের চান্দুরিয়া ২ পঞ্চায়েত এলাকায় একটা অংশে ভাগীরথী নদীর ভাঙন শুরু হয়েছে। এই এলাকা একটি গুরুত্বপূর্ণ মোরামের রাস্তা যা সাহাপাড়ার মধ্য দিয়ে চাকদহ শহরে চলে গিয়েছে। সেই রাস্তা ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখান দিয়েই চাষিরা তাদের উৎপাদিত আনাজ চাকদহের হাটে নিয়ে যান। এ ছাড়াও বাসিন্দাদের চাকদহ শহরে যাতায়াতের অন্যতম রাস্তাও এটি। চান্দুরিয়া ২ পঞ্চায়েত এলাকায় ভাগীরথীর ভাঙনের সমস্যা নতুন নয়। প্রতি বছর বসত বাড়ি থেকে হাজার হাজার বিঘা চাষের জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান সঞ্জয় বিশ্বাস বলেন, ‘‘এর আগে ভাঙনে অনেক রাস্তা নদীতে চলে গিয়েছে। আবার একটা রাস্তার খানিকটা ভেঙে গিয়েছে। এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। মেরামত করার কাজ শুরু হয়েছে।’’

Advertisement

আবার সরাটি পঞ্চায়েত এলাকাতেও ভাগীরথীর ভাঙনের সমস্যা তৈরি হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সরাটি, হেমনগর, রায়ডাঙার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ভাগীরথীর ভাঙন দেখা দিয়েছে গত দিন দুয়েক ধরে। চাষের জমি রয়েছে এখানে। সেখানে নিজেদের জমি হারিয়ে সর্বস্বান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাসিন্দাদের তাড়া করছে।

সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলায় প্রায় ১১৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ভাঙনপ্রবণ এলাকার পাশাপাশি নদী বাঁধের ওপরেও নজর রাখা হচ্ছে। যেখানে ভাঙনের সমস্যা দেখা দিয়েছে তাদের আধিকারিকেরা গিয়েছেন। শুক্রবার থেকেই সেখানে ভাঙন রোধের কাজ হবে। এ ছাড়াও শান্তিপুর ব্লকের পুমলিয়া, মঠপাড়া, চৌধুরীপাড়া এলাকায় ভাঙন রোধে একটি প্রকল্পের কাজ চলছে। সেই কাজেও গতি আনা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন