বছর ঘুরে গেল। সেই দিনটা খী ভুলতে পারি! এখনও মাঝে মাঝে রাতে ঘুম ভেঙে যায়। বাবা কী রক্ত! সাত সকালেই রওনা দিয়েছিলাম ভাগ্নের লছিমনে। আমরা সাত জন ছিলাম। লরিটা ছিল ঠিক পিছনে। বার বার হর্ন দিচ্ছিল। আহিরণ সেতুর উপর এক বার ওভারটেক করার চেষ্টা করল। পারল না।
সেতু থেকে নামছি, বাঁকের মুখে ঘুরতেই দেখলাম একটা বড় ছায়া পড়ল... তার পর কী হল বুঝতে পারিনি। আমি যেন উড়ে গিয়ে ছিটকে পড়লাম রাস্তার এক পাশে। খানিক পরে বুঝলাম, শরীরে কোনও সার নেই। চোখ মেলতেই দেখি বাঁ দিকের গর্তের নিচে পড়ে আছে লছিমনটা। ভয়ে পেয়ে জ্ঞান হারালাম। এক বার পকেট হাতড়ানোর চেষ্টা করলাম, চশমাটা নেব বলে। দেখি হাতটাই নাড়তে পারছি না। কতক্ষণ পড়েছিলাম জানি না। তখনও জানি না কে বেঁচে আছে, কে নেই। তবে, কান্না দেখে বুঝলাম, অনেকেই নেই। খবর পেলাম, শ্যামচাঁদ, দিদি শান্তিলতা, ভাগ্নে সর্বেশ্বর, নাতি সুদীপ কেউই নেই। এখন মনে হয়, ট্রাকটাকে এগিয়ে যেতে দিলেই ভাল হত। এত বড় সর্বনাশটা হত না তা হলে।