ঝাড়খন্ড থেকে পর্যাপ্ত কয়লা না আসায় চিন্তায় এনটিপিসি।—ফাইল চিত্র।
কয়লার জোগানে টান পড়ায় ফরাক্কা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে চিন্তায় এনটিপিসি। ফরাক্কায় প্রতিদিন ছয়টি ২১০০ মেগাওয়াট ইউনিট চালাতে ৩০ হাজার টন কয়লার প্রয়োজন। কিন্তু দু সপ্তাহ ধরে ঝাড়খন্ড থেকে দৈনিক এক রেকের বেশি কয়লা না আসায় সঞ্চিত কয়লায় হাত পড়েছে। এমন চলতে থাকলে কত দিন মজুত কয়লায় উৎপাদন চালানা যাবে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন এনটিপিসি-র কর্তারা।
ফরাক্কা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তরফে এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর অরবিন্দকুমার সিংহ জানিয়েছেন, স্বাভাবিক ভাবে দৈনিক ৫-৬টি কয়লার রেক আসে পাশের রাজ্য ঝাড়খন্ডের লালমাটিয়া থেকে। প্রতি রেকে কয়লা থাকে তিন হাজার টন করে। সম্প্রতি ইসিএল কর্তৃপক্ষ এনটিপিসিকে জানিয়েছে, লালমাটিয়া খাদানের উপর থেকে বসতি সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। এ জন্য মাস দেড়েক সময় লাগবে। ফলে এক রেকের বেশি কয়লার জোগান দেওয়া সম্ভব নয়।
অরবিন্দবাবু বলেন, ‘‘এই সময়ে স্বাভাবিক ভাবেই চাহিদা মতো কয়লার জোগান পাবে না ফরাক্কা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। তাই সঞ্চিত কয়লা দিয়েই চালানো হচ্ছে ফরাক্কা প্ল্যান্ট।’’ এই মুহূর্তে ফরাক্কায় এক একটি ইউনিটের ২১০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা থাকলেও গড়ে ১৫০০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুতের চাহিদা নেই ফরাক্কা থেকে। উৎপাদন কমানোয় কয়লাও লাগছে কম। এ ছাড়া বছরে ৩ লক্ষ টন বিদেশি কয়লা জলপথে ফরাক্কায় আসছে নিয়মিতই। যদিও কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষণা করেছে এনটিপিসি-র জন্য আর বিদেশি কয়লা আমদানি করা হবে না। চুক্তিমতো ৬ মাস পর থেকে ফরাক্কার জন্য জলপথে বিদেশি কয়লার জোগানও বন্ধ হয়ে যাবে।
ফরাক্কা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শৈবাল ঘোষ জানান, ফরাক্কায় বছরে ১ কোটি ৬ লক্ষ টন কয়লা লাগে। এর সিংহভাগ আসে ইসিএল-এর রাজমহল কোল ফিল্ডসের ক্যাপটিভ কয়লা খনি থেকে। সেই কয়লার সঙ্গে উৎকৃষ্ট বিদেশি কয়লা মিশিয়ে ব্যবহার করা হয় ফরাক্কায়। তাতে কয়লা ব্যবহার কমানো গিয়েছে। সংস্কারের জন্য ২টি ইউনিট বন্ধ ছিল। সেক্ষেত্রেও কয়লার ব্যবহার কিছুটা কমেছে। বর্ষা পড়ায় বিদ্যুতের চাহিদা ১৫০০ মেগাওয়াটে নেমেছে। ফলে কয়লার জোগান কম হলেও সামাল দেওয়া সম্ভব হয়েছে।শৈবালবাবু বলেন, “ফরাক্কায় কয়লা জোগানের মূল উৎসই হল ঝাড়খণ্ডের লালমাটিয়া খনি। সেখান থেকে জোগান কমে যাওয়ায় এখন তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে কয়লা ‘হ্যান্ড টু মাউথ’ অবস্থায় রয়েছে।”