সরকারি নির্দেশ বলছে— শিবির কিংবা কিসান মান্ডিতে ধান বিক্রি করলে ৭২ ঘন্টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট চাষির অ্যাকাউন্টে নির্দিষ্ট টাকা চলে যাবে। কিন্তু ধান দেওয়ার পর সপ্তাহ কারও বা বারো দিন ঘুরে গিয়েছে, টাকা আসেনি। মুর্শিদাবাদের শস্যগোলা কান্দি জুড়ে এমনই ভূক্তভোগীর সংখ্যা অজস্র। বড়ঞা ব্লকের এক ও দু’নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের চাষিরা ধান দেওয়ার পরেও এখনও টাকা হাতে পাননি বলেও দাবি করেছেন।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর বড়ঞা ১ নম্বর অঞ্চলে গত ৮ জানুয়ারি ৬০জন চাষির কাছ থেকে ধান কেনা হয়েছিল। চাষিদের অভিযোগ ওই ধান কেনার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁদের অধিকাংশের হাতে ধানের মূল্য হিসাবে চেক দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁদের অনেকেই সে চেক ভাঙাতে পারেননি। বাকিদের দেওয়া হয়েছিল আশ্বাস— অন লাইনে সরাসরিই তাঁদের অ্যাকাউন্টে চলে যাবে মূল্য। হয়নি তা-ও। এমনই এক চাষি রাজেশ গুঁই। তিনি বলেন, “ধান দেওয়ার দু’দিন পর থেকে এক বার করে ব্যাঙ্ক গিয়ে নিজের অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করে দেখি, দু’ দিন পেরিয়ে গেল,
টাকা আসেনি।’’ দিলীপ দাস, নির্মল হাজরার মতো চাষিদেরও একই অভিজ্ঞতা। তাঁরা প্রায় সমস্বরে বলছেন, ‘‘সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান দিয়ে এখন মনে হচ্ছে ভুলই করলাম।’’ বড়ঞা ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দাদের কাছ থেকে ক্যাম্প করে ধান কেনা হয়েছে গত ৫ জানুয়ারি। ওই অঞ্চলের চাষিরাও এখনও টাকা পাননি বলে দাবি। তাঁদের মধ্যে ওই অঞ্চলের পারশালিকা গ্রামের বাসিন্দা সত্যেশ ঘোষ বলেন, “ন’দিন হয়ে গেল সরকারি ক্যাম্পে ধান দিয়েছি। কিন্তু টাকা এখনও পাইনি। আমরা সাধারণ চাষি, ধান বিক্রি করেই সেই টাকা দিয়ে আবার অন্য ফসলের চাষ করি। সামনেই বোরো মরসুম, সে টাকা হাতে না পাওয়ায় অথৈ জলে পড়লাম।’’ যদিও এমনটা হওয়ার কথা নয় বলে দাবি করে মুর্শিদাবাদ জেলা চালকল অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দিলীপ সাহার। বলছেন, “এমনটা হওয়ার কথা নয়। সরকারি ভাবে কড়া নির্দেশ আছে ৭২ ঘন্টার মধ্যে টাকা চাষিদের দিতে হবে। বিভিন্ন অসুবিধার কারণে সেটা একশো ঘন্টা হতে পারে, কিন্তু তার বেশি নয়।’’ জেলার খাদ্য নিয়াময় আরবিন্দ সরকার অবশ্য এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “এমন ঘটনা জানা নেই। তবে কারও গাফিলতি থাকলে ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।’’