ঘিঞ্জি বাজারে আগুন, পুড়ে খাক তিন দোকান

পুড়ে খাক হয়ে গেল রঘুনাথগঞ্জ শহরের বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া বাজারের তিনটি দোকান। জনবহুল বাজার এলাকার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রশ্ন উঠে গিয়েছে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়েও। দমকল কর্তাদের অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকেই এই বিপত্তি। রঘুনাথগঞ্জ শহরের বুকে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় শতাধিক দোকান ঘর নিয়ে গড়ে উঠেছে মার্কেট কমপ্লেক্স।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৫ ০২:০৫
Share:

দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন। সোমবার রঘুনাথগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।

পুড়ে খাক হয়ে গেল রঘুনাথগঞ্জ শহরের বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া বাজারের তিনটি দোকান। জনবহুল বাজার এলাকার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রশ্ন উঠে গিয়েছে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়েও। দমকল কর্তাদের অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকেই এই বিপত্তি।
রঘুনাথগঞ্জ শহরের বুকে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় শতাধিক দোকান ঘর নিয়ে গড়ে উঠেছে মার্কেট কমপ্লেক্স। সোমবার সকালে কমপ্লেক্সের দোতলার দোকান ঘরে আগুন লাগার খবর পেয়ে ধুলিয়ান থেকে দমকলের ইঞ্জিন যখন ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয় ততক্ষণে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে একটি কম্পিউটার দোকান-সহ পর পর তিনটি দোকানে। এক সময় দমকলের গাড়ির জল ফুরিয়ে যায়। আগুন নেভাতে শেষ পর্যন্ত দমকল কর্মীদের শহরের নিকাশি নালার জল ব্যবহার করতে হয়! পরে ধুলিয়ান থেকে আর একটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে আসে। প্রায় ৫ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও তিনটি দোকানই কার্যত খাক হয়ে গিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন সকাল সোওয়া সাতটা নাগাদ বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া ওই কমপ্লেক্সে আগুন লাগে। একটি কম্পিউটারের দোকানের সাটারের মধ্য দিয়ে ধোঁয়া বেরোতে দেখেন স্থানীয়েরা। ছুটে আসেন দোকান মালিক রিন্টু শেখ। ধুলিয়ান দমকল কেন্দ্রে খবর যায়। তিরিশ কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়ে ঘণ্টা খানেক পরে দমকল কর্মীরা আসার আগেই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে দোকানের ভিতরে। ওই এলাকায় শতাধিক দোকান রয়েছে। রয়েছে ব্যাঙ্ক, পেট্রোল পাম্পও। এলাকা জুড়ে আতঙ্ক ছড়ায়। ২০০ মিটার দূরের পেট্রল পাম্পে বন্ধ করে দেওয়া হয় বেচাকেনা। আগুনে পুড়ে গিয়েছে ওই দোকানের কম্পিউটার, মোবাইল-সহ বহু সামগ্রী।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, দমকল এসে কাজ শুরুর কিছু সময়ের মধ্যেই গাড়ির জল ফুরিয়ে যায়! থমকে যায় আগুন নেভানোর কাজ। ধুলিয়ান থেকে আর একটি গাড়িকে ডেকে পাঠানো হয়। ততক্ষণ দোকানের পাশের নিকাশি নালার জল ব্যবহার করে আগুন নেভানোর কাজ চলে। প্রায় ৫ ঘণ্টা পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
আগুন লাগল কী ভাবে?

Advertisement

ধুলিয়ান দমকলের কেন্দ্রের ওসি বিষ্ণুপদ রায় বলেন, ‘‘আগুনের কারণ সম্ভবত শর্ট সার্কিট।’’ তাঁর অভিযোগ, বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বাজারের বেশির ভাগ দোকানেই অগ্নি নির্বাপণের কোনও ব্যবস্থা নেই। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘দমকল থেকে কোনও ছাড়পত্র না নিয়ে পুরসভা কী করে ওই সব দোকানের ট্রেড লাইসেন্স দিল!’’ শুধু তাই নয়, বহু দোকান ব্যাঙ্ক থেকে আর্থিক ঋণের বিনিময়ে খোলা হয়েছে। অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা ছাড়াই সেই ঋণ কী ভাবে মিলল— সেই প্রশ্নও উঠছে।

দমকল কর্তাদের কথায়, অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা থাকলে এ ধরণের আগুনে কিছুটা হলেও ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো যায়।

Advertisement

দমকল কর্তার অভিযোগ উড়িয়ে দেননি জঙ্গিপুরের পুরপ্রধান মোজাহারুল ইসলাম। তাঁর স্বীকারোক্তি, ‘‘নানা কারণে সব সময় সব কিছু নিয়ম মেনে করা যায় না!’’ একই সঙ্গে তিনি জানান, এ দিনের ঘটনা প্রমাণ করল মহকুমা শহরে দমকল কেন্দ্র কতটা জরুরি। ব্যবসায়ীদের অনেকে মনে করেন, ধুলিয়ান থেকে দমকলের গাড়ি আসতে দেরি করলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন