ছাত্র খুনের ঘটনায় তদন্তে ফাঁকফোকরের কথা উল্লেখ করে দু’দিন আগেই বিচারক পুলিশকে ভর্ৎসনা করেছিলেন। শুক্রবার সেই মামলায় অভিযুক্ত চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনালেন। এ দিন কৃষ্ণনগরের তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক পার্থসারথী মুখোপাধ্যায় এই সাজা শোনান। সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানারও নির্দেশ দেন তিনি। অনাদায়ে আরও দু’বছর জেলে থাকতে হবে দোষীদের। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, বিচারক কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা—সূর্যপ্রকাশ চট্টোপাধ্যায়, শুভ দেবনাথ, বিশ্বজিৎ দাস ও কমল হালদারকে এই সাজা দিয়েছেন।
সরকার পক্ষের আইনজীবী অশোক মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওই চারজন একাদশ শ্রেণির এক পড়ুয়াকে টাকার লোভে পরিকল্পনা করে খুন করে। তাছাড়াও তথ্যপ্রমাণ লোপাট করতে পাথর বেঁধে দেহটি নদীর জলে ফেলে দেয়। তাই বিচারক তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।’’ সাজা ঘোষনার পর মৃতের বাবা অনিল মণ্ডল বলেন, “আদালতের রায়ে আমি খুশি। কিন্তু আমার একমাত্র ছেলের খুনিদের ফাঁসি হলে আরও বেশি খুশি হতাম।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৪ সালের ৩ মার্চ সন্ধ্যায় কৃষ্ণনগরের কলেজিয়েট স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্র অতনু মণ্ডল বাড়ি থেকে বার হয়। রাতে তার বাড়িতে চিরকুট পাঠিয়ে ১২ লক্ষ টাকা দাবি করা হয়। পরের দিন সন্ধ্যায় শহর থেকে খানিক দূরে জলঙ্গির ঘাটে ওই ছাত্রের দেহ উদ্ধার হয়।
ঘটনার পর মৃত ছাত্রের বাবা পেশায় আয়কর দফতরের কর্মী অনিল মণ্ডল পুলিশের কাছে ছেলের গৃহশিক্ষক শীর্ষেন্দু দাস, সহপাঠী তিন্নি পাত্র এবং প্রতিবেশী শুভ দেবনাথের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। তিন্নি ও শীর্ষেন্দুকে পুলিশ গ্রেফতার করে। পরে অবশ্য চার্জশিট থেকে তাদের নাম বাদ পড়ে। তারপর পুলিশি তদন্তে চার জনের নাম উঠে আসে। তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ দিন ওই চার জনকে সাজা শোনালেন বিচারক।