ভাটায় পাঁজা ধসে মৃত চার

বড় ভাটা, শতাধিক শ্রমিক কাজ করে সেখানে। কিন্তু সেই ভাটা ইউনিয়নের বাইরে কেন? সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ভাটা চলছিল পুরোপুরি অবৈধ ভাবে।

Advertisement

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস

ইসলামপুর শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৯ ০০:৫৩
Share:

চাপা পড়া শ্রমিকদের খোঁজ চলছে। বৃহস্পতিবার ইসলামপুরে। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম

সাত সকালে ভাটায় নেমে ইট সাজাতে গিয়ে ইটের স্তূপেই মারা গেলেন তিন শ্রমিক এবং ওই ইট ভাটা মালিক। বৃহস্পতিবার সকালে, ইসলামপুরের গোয়াস এলাকার ঘটনা।

Advertisement

ভাটার গলি থেকে ভাঙা ইটের টুকরো সরিয়ে নেওয়ার সময় ভাটার দেওয়াল ধসে পড়েই দুর্ঘটনাটি ঘটে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে মৃতেরা জামিরুল শেখ (২৬), আলমগীর শেখ (৩০) ও ভাটা মালিক তালিমুদ্দিন শেখ। তালিকায় রয়েছেন নলবাটা গ্রামের পারুল বেওয়া নামের বছর পঞ্চাশের এক মহিলাও।

ঘটনার সূত্রপাত সকাল ১০টা। দিনের কাজ প্রায় শেষের পথে। মালিক তালিমুদ্দিনের নির্দেশে জনা কয়েক শ্রমিকে ভাটার গলিতে পড়ে থাকা ভাঙা ইট সাফাই করছিলেন। আর সেই সময়ে হঠাৎ করে খসে পড়ে ভাটার দেওয়াল। ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় পারুল বেওয়া ও মালিক তালিমুদ্দিন শেখের। জখম জামিরুল ও আলমগীরকে ইসলামপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে স্থানান্তরিত করা হয় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে মৃত্যু হয় বাকি দুই শ্রমিকের।

Advertisement

ইটভাটায় শ্রমিকের মৃত্যু বা জখমের ঘটনা এই প্রথম নয়, হামেশাই এমন ঘটনা ঘটে ভাটা গুলিতে। তবে অধিকাংশ সময় পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে আপসে মিটিয়ে নেওয়া হয় সব।

ডোমকল মহকুমার ইটভাটা মালিক সংগঠনের সম্পাদক আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘শ্রমিক নিয়ে আমাদের কাজ, ফলে ভাটায় শ্রমিকের মৃত্যু বা জখম হওয়ার ঘটনা ঘটে, তবে আমরা সব সময় শ্রমিকের পাশে থাকি। তবে এ দিন যে ভাটায় দুর্ঘটনা ঘটেছে সেটি আমাদের ইউনিয়নের বাইরে।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

জামিরুলের পরিবারের সদস্যরা। বৃহস্পতিবার ইসলামপুরে। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম

বড় ভাটা, শতাধিক শ্রমিক কাজ করে সেখানে। কিন্তু সেই ভাটা ইউনিয়নের বাইরে কেন? সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ভাটা চলছিল পুরোপুরি অবৈধ ভাবে। ফলে তাঁকে সংগঠনে নেওয়া হয়নি। ব্লক প্রশাসনের কর্তারাও বলছেন ভাটাটি অবৈধ। তা হলে দিনের পর দিন এ ভাবে চাষের জমির পাশে ভাটা চলে কী করে?

রানিনগর ১ ব্লকের ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক রঞ্জনকুমার কুন্ডু বলেন, ‘‘এই ভাটা মালিকদের আমরা কিছু দিন আগে নোটিস করে ভাটা বন্ধ রাখতে বলেছিলাম। তার পরে ভাটাটি বন্ধ ছিল বলে শুনেছিলাম, কিন্ত কিছু দিন আগে আবারও ভাটা চালু করেছে তারা।’’

ব্লক প্রশাসনের অফিস থেকে কিমি দেড়েক দুরে এই অবৈধ ভাটা, অথছ তাদের কাছে কোনও খবর নেই অবৈধ ভাটার। এলাকার সাধারণ মানুষের দাবি, গোটা বিষয়টি চলে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আর শাসক দলের সঙ্গে গোপন বোঝাপড়ায়। বিডিও মহম্মদ ইকবাল বলেন, ‘‘এর আগেও ভাটা মালিকদের নিয়ে আলোচনা করে তাদের সাবধান করা হয়েছিল। কিন্তু কাজ হয়নি দেখছি। অবৈধ ভাটার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন