জাকিয়ে শীত পড়ুক না পড়ুক, সন্ধ্যা নামলেই আতঙ্ক জাকিয়ে বসছে কল্যাণীর সাহেবপাড়া, কাঠুড়িয়াপাড়া, দেউলি এলাকায়। প্রতিদিনই কোনও না কোনও বাড়িতে ডাকাতি যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু লুঠপাটই নয়, মহিলারা সম্মানহানির ভয়ও করছেন। শেষ পর্যন্ত তাঁরা আশ্রয় নিলেন স্থানীয় আশ্রমে। সেখানেও সপ্তাহ খানেক আগে ডাকাতি হয়েছে। তার পরে থেকে সেখানে পুলিশ পিকেট রয়েছে।
এক সময়ে কল্যাণী শহর-সহ লাগোয়া এলাকায় চুরি-ছিনতাই ছিল রোজকার ঘটনা। গত দু’বছরে ছবিটাতে বদল এসেছিল। কিন্তু সেই পুরনো আতঙ্ক যেন ফিরে আসছে। শহর লাগোয়া এলাকায় ডাকাতি যেন নিত্যকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শুরুটা হয়েছিল বড়দিনের রাতে। সাহেববাগানের আদ্যামায়ের আশ্রমে হানা দিয়ে লুঠপাট চালায় জনা ছয়েকের এক দুষ্কৃতীদল। আশ্রমের মহারাজ সত্যানন্দ পুরী-সহ অন্যান্যদের বেঁধে লুঠপাট চালায় তারা। পরদিন ডাকাতি হয় কাঠুড়িয়াপাড়ায়। তার পরেরদিন চাকদহের মদনপুরে। মাঝের দু’দিন বিরতি। বর্ষশেষের রাতে ফের ডাকাতি হয় মদনপুরে। বছরের শুরুতে ডাকাতেরা ব্যর্থ হানা দেয় সগুনার সাহেববাগান লাগোয়া দেউলিতে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ জনা ছয়েকের ডাকাতদলটি একটি বাড়ির দরজার কড়া নাড়ে। ভিতর থেকে বাড়ির এক মহিলা তাদের পরিচয় জানতে চান। দুষ্কৃতীরা জানায়, তারা দূর থেকে আসছে। তৃষ্ণার্ত। জল খেতে চায়। সঙ্গে বিড়ি ধরানোর জন্য দেশলাই। ততক্ষণে ওই মহিলা জানালা দিয়ে উঁকি মেরে দেখেছেন, আততায়ীদের হাতে শাবল রয়েছে। তিনি বিষয়টি ফোন করে পড়শিদের জানান। তাঁরাই তাড়া করেন ডাকাতদের। পালিয়ে যায় তারা। তার পরে কার্যত গোটা রাতই জেগেই কাটিয়েছেন বাসিন্দারা।
সোমবার দুপুরে এলাকার বাসিন্দারা কল্যাণী থানায় যান। বিকেল নামতেই মহিলারা আশ্রমে জড়ো হন। আশ্রমে পুলিশ পিকেট রয়েছে বলে তাঁরা সেখানে কিছুটা নিরাপদ বোধ করছেন। মহারাজ বলছেন, ‘‘একটার পর একটা ডাকাতি হয়ে যাচ্ছে। পুলিশ কিছুই করছে না।’’