কথা রাখলেন গৌতম, লাড্ডু বিলি করিমপুরে

জামতলার মোড়ে ফ্লেক্সের উপরে নীল কালিতে এমন লেখা দেখে থমকে দাঁড়াচ্ছিলেন পথচলতি লোকজন। সীমান্ত ঘেঁষা করিমপুরে সারা বছর নানা অনুষ্ঠান লেগেই থাকে। কিন্তু লাড্ডু বিতরণ অনুষ্ঠান? নাহ্, মনে করতে পারছে না এই প্রান্তিক জনপদ।

Advertisement

কল্লোল প্রামাণিক

শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৬ ০১:৪৫
Share:

গৌতম কুন্ডু। — নিজস্ব চিত্র

লাড্ডু বিতরণ অনুষ্ঠান...

Advertisement

জামতলার মোড়ে ফ্লেক্সের উপরে নীল কালিতে এমন লেখা দেখে থমকে দাঁড়াচ্ছিলেন পথচলতি লোকজন। সীমান্ত ঘেঁষা করিমপুরে সারা বছর নানা অনুষ্ঠান লেগেই থাকে। কিন্তু লাড্ডু বিতরণ অনুষ্ঠান? নাহ্, মনে করতে পারছে না এই প্রান্তিক জনপদ। স্থানীয় বাসিন্দারাও বলছেন, ‘‘ঢোলকপুরে ছোট ভীম তার সাঙ্গোপাঙ্গদের নিয়ে লাড্ডু নিয়ে নানা কেরামতি দেখায় বটে। কিন্তু করিমপুরে এই প্রথম।’’

দু’একশো কিংবা দু’ এক হাজার নয়। রবিবার জামতলার মোড়ে রীতিমতো অনুষ্ঠান করে লাড্ডু বিতরণ করলেন করিমপুরের ব্যবসায়ী গৌতম কুণ্ডু। আর লাড্ডুর সংখ্যা? ১৬ হাজার ৭৭। কিছু মিল খুঁজে পাচ্ছেন? আজ্ঞে হ্যাঁ, করিমপুরের তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া প্রার্থী এই সংখ্যক ভোটেই জয়ী হয়েছেন।

Advertisement

বিধায়ক হলেন মহুয়া আর গৌতমবাবু কেন লাড্ডু খাওয়ালেন? সে কথা প্রথমে জানতেন গৌতমবাবুর বন্ধুরা। পরে তামাম করিমপুর। করিমপুরে প্রার্থী ঘোষণার পরেই তৃণমূলকর্মী হিসেবে পরিচিত গৌতমবাবু জানিয়ে দিয়েছিলেন, মহুয়া মৈত্র যত ভোটে জিতবেন ততগুলি লাড্ডু তিনি খাওয়াবেন। অনেকে ভেবেছিলেন এটা কেবল কথার কথা। কেউ বলেছিলেন, ‘‘তোর তো নিজেরই লাড্ডুর কারখানা। না খাওয়ানোর কী আছে!’’ কেউ আবার দিয়েছিলেন মোক্ষম খোঁচা, ‘‘করিমপুর তো লাল-গড় রে। দ্যাখ, তৃণমূল জেতে কি না!’’

১৯ মে অবশ্য সব হিসেব গুলিয়ে গিয়েছে। প্রায় চার দশক পরে করিমপুরে হেরে গিয়েছে সিপিএম। বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন মহুয়া। কথা রেখেছেন গৌতমবাবুও। তিনি এ দিন মহুয়া মৈত্রকে সামনে রেখেই লাড্ডু বিতরণ শুরু করেন। গৌতমবাবু বলেন, “কথা দিয়ে কথা রাখাটা জরুরি। আমি সেটাই করেছি।’’ নিজের কারখানা হলেও এই বিপুল সংখ্যক লাড্ডুর জন্য খরচ হয়েছে প্রায় ৪৫ হাজার টাকা। তবে স্বামীর এমন খেয়ালে কিন্তু মোটেই বিরক্ত নন স্ত্রী স্মৃতিদেবী। তাঁর কথায়, ‘‘অনেকেই বাজি ধরে। কিন্তু পরে ভুলে যায়। ও কথা রাখায় আমি খুশি।’’ করিমপুরের বিধায়ক তৃণমূলের মহুয়া মৈত্র বলছেন, ‘‘আমার জয়ের জন্য গৌতমবাবুর এই লাড্ডু বিতরণ সত্যিই অভিনব। আমি আপ্লুত।”

মুখ মিষ্টি করতে পেরে খুশি করিমপুরও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন