আবু তাহের খান। নিজস্ব চিত্র।
আকচা-আকচি আগেও ছিল। এখনও আছে। সেই বিরোধ চলে এসেছিল ভোট ময়দানে। ভোট প্রচারের মাঠে এক জনের সঙ্গে আর এক জনের মুখ দেখাদেখিও প্রায় বন্ধই ছিল। এক জন সদ্য নির্বাচিত সাংসদ আবু তাহের খান। তিনি এখন মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের সভাপতিও বটে। অন্য জন মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোশারেফ হোসেন মধু। দলের দুই তাবড় নেতার এই ‘মধুর সম্পর্ক’ সত্ত্বেও মুর্শিদাবাদ লোকসভা ও নওদা বিধানসভার উপনির্বাচনে তৃণমূলের ভোটরথ ছিল অপ্রতিরোধ্য।
দু’ জনেই প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি অধীর চৌধুরীর ‘সেনাপতি’ ছিলেন। মোশারফের ঘনিষ্ঠ মহলের মতে, মধুর বাসনা ছিল নওদার বিধায়ক হওয়া। আবু তাহের তৃণমূলে চলে আসায় বাসনা পূরণের সম্ভবনা ক্ষীণ হয়ে পড়ে। ফলে দুই নেতার মধ্যে পুরনো বিবাদ তীব্র আকার নেয়। তাহেরকে মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী করা হলে নওদা বিধানসভার উপ-নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার স্বপ্ন দেখেন মধু। অন্য দিকে তাহেরের পছন্দ অন্য প্রার্থী। উভয় সঙ্কটে পড়েন দলের মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী। তিনি নওদা বিধানসভার উপ-নির্বাচনে প্রার্থী করেন সাহিনা মমতাজ বেগম।
তৃণমূলের জেলা কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘‘তাহের ও মধুর সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী কয়েক বার বৈঠক করেন। প্রতিবারই তাঁদের পৃথক ভাবে হুইপ দিয়ে জানিয়ে দেন, ভোটের ফল খারাপ হলে তাঁদের রাজনৈতিক ভবিষ্যতও খারাব হবে। সেটাই কাজে দিয়েছে।’’ ফলে বহরমপুর লোকসভার নির্বাচনে নওদা থেকে তৃণমূল প্রার্থী শতকরা ৪৪ ভাগ ভোট পেয়েছে। বিধানসভার উপ-নির্বাচনে সাহিনা বেগম মমতাজ শতকরা ৪৮ ভাগ ভোট পেয়ে বিধায়ক। বিরোধের কথা মধু অস্বীকার করলেও তাহের মেনে নিয়েছেন।
মধু বলেন, ‘‘প্রচারে নেমেছি, মানুষকে বুঝিয়েছি। ফল মিলেছে ইভিএমে।’’ তাহের বলেন, ‘‘গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে মারপিট না করলে নিজেই জিততে পারতো না। ও কীসের ভোট করেছে! কংগ্রেসের ভোটারদের আমাদের দিকে আনতে পেরেছি বলেই লোকসভা ও বিধানসভার উপ-নির্বাচনে এমন ফল মিলেছে।’’ বিজেপি নেতা হুমায়ুন কবীরের দবি, ‘‘ওঁদের কোন্দলের মাঝেই আমরা উপ-নির্বাচনে গত বারের থেকে শতকরা ১০ ভাগ ভোট বাড়িয়ে নিয়েছি।’’