জয়ী আশিস বিশ্বাস। নিজস্ব চিত্র
আততায়ীর গুলিতে নিহত যে সত্যজিৎ বিশ্বাসের স্ত্রীকে দাঁড় করিয়ে রানাঘাট কেন্দ্রে বাজিমাত করতে চেয়েছিল তৃণমূল, উপ-নির্বাচনে তাঁর সেই কৃষ্ণগঞ্জ কেন্দ্রই হাতছাড়া হয়ে গেল তাদের।
তরুণ বিধায়ক খুনের সহানুভূতির হাওয়া কাজে এল না। বরং রানাঘাট লোকসভা জুড়ে বওয়া গেরুয়া ঝড়ে তছনছ হয়ে গেল নদিয়ার প্রান্তিক বিধানসভায় তৃণমূলের সাজানো বাগান। প্রথম বারের জন্য কৃষ্ণগঞ্জে ফুটল পদ্ম।
সরস্বতী পুজোর আগের রাতে হাঁসখালিতে নিজের বাড়ির কাছেই খুন হন কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ। সহানুভূতির ভোট কুড়োতে রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রে তাঁর স্ত্রী রূপালী বিশ্বাসকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। কৃষ্ণগঞ্জের উপনির্বাচনে মতুয়া ভোটব্যাঙ্কের দখল পেতে প্রার্থী করা হয় মতুয়া সংগঠনের নেতা প্রমথ বসুকে। কিন্তু দেখা গেল আদতে কাজে আসেনি কোনও অঙ্কই। কুড়ি হাজারের বেশি ভোটে জিতেছেন বিজেপি প্রার্থী আশিস বিশ্বাস।
গত ২০১৫ সালেই উপনির্বাচনে কৃষ্ণগঞ্জে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছিল বিজেপি। পরের বছর বিধানসভা ভোটে তৃতীয় স্থান পেলেও গত বছর পঞ্চায়েত ভোটে সন্ত্রাসের আবহেও তারা ছাপ রেখে যায়। পাশাপাশি, তৃণমূলের অনেক নেতার বসে যাওয়াও তৃণমূলের বিরুদ্ধে গিয়েছে। একদা বামদুর্গ হলেও এখানে ক্রমে ক্ষয়িষ্ণু হয়েছে বামেরা। নিজেদের ভোট ধরে রাখতে পারেনি তারা। তৃণমূলকে হারাতে পদ্মের উপরে ভরসা রেখেছেন ভোটারেরা। মতুয়া সংগঠন থেকে প্রার্থী করেও যে এখানে মতুয়া মন পায়নি তৃণমূল তা স্পষ্ট ভোটের ফলেই। সত্যজিতের মৃত্যু দলের সংগঠনকে দুর্বল করেছে, আবার তাঁর বিরুদ্ধে যে জনমত তৈরি হয়েছিল এই ফল তারই প্রমাণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
দিনের শেষে তৃণমূল প্রার্থী প্রমথ বসু বলছেন, ‘‘আমরা জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী ছিলাম। তবে মানুষের রায় মেনে নিতেই হবে।’’ জয়ী বিজেপি প্রার্থী আশিস বিশ্বাস বলেন, ‘‘তৃণমূলের সন্ত্রাস, গণতন্ত্রের হত্যা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন মানুষ। আমাদের দায়িত্ব অনেক বেড়ে গেল।’’