মায়ের নামে পুলিশের কাছে অনুযোগ ছোট্ট মালার। —নিজস্ব চিত্র।
ভাইয়ের সঙ্গে ঝগড়া-মারামারি হয়েছিল দিদির। তাতে বিস্তর বিরক্ত হন মা। কিন্তু ভাইকে কিছু না বলে শুধু তাকেই বকাবকি করলেন! পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে পুলিশের কাছে বিচার চাইতে গেল বছর নয়ের একটি মেয়ে। মুর্শিদাবাদের কান্দি থানার পুলিশের কাছে মায়ের নামে অনুযোগ করল চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী মালা হাজরা। তার নালিশ মন দিয়ে শুনেছে পুলিশ। খুদের অভিমান ভাঙিয়ে তাকে বাড়ি ফেরানো হয়েছে। অন্য দিকে পুলিশের ‘ভূমিকায়’ খুশি মালা।
পুলিশ সূত্রে খবর, মুর্শিদাবাদের খড়়গ্রাম থানা এলাকায় বাড়ি মালার। চতুর্থ শ্রেণিতে পড়াশোনা করে সে। সোমবার ভাইয়ের সঙ্গে খুনসুটি করছিল বলে মা ভর্ৎসনা করেন তাকে। কিন্তু ছোট্ট মেয়েটির অভিযোগ, ‘‘মা পক্ষপাতদুষ্ট। ভাইয়ের দোষ দেখেই না। শুধু শুধু আমায় বকাবকি করল!’’
মেয়েটি জানায় বকা খাওয়ার পরে কাউকে কিছু না বলে কান্দির বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েছিল সে। রাস্তার এক পুলিশকর্মীকে দেখতে পেয়ে সোজা তাঁর কাছে চলে যায় সে। কর্তব্যরত ওই পুলিশকর্মী তাকে নিয়ে যান কান্দি থানায়।
কান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক ধৈর্য ধরে তার সব কথা শোনেন। তার নাম-ঠিকানা জেনে খবর পাঠান বাড়িতে। অভিমান ভাঙিয়ে শিশুটিকে তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে।
পুলিশের ভূমিকায় খুশি মালার পরিবার। অন্য দিকে, মাকে ‘বকা’ দেওয়ায় ‘পুলিশকাকু’কে ধন্যবাদ জানিয়েছে ছোট্ট মেয়ে। বালিকার বাবা রতন হাজরা বলেন, ‘‘ভাইকে মেরেছিল বলে ওর মা একটু বকেছিল। রাগ করে দাদুর বাড়ি চলে যাচ্ছিল মেয়ে। তাই বলে পুলিশের কাছে গিয়ে অভিযোগ জানাবে, ভাবতে পারিনি। পুলিশ অফিসার ধৈর্য ও সহানুভূতির পরিচয় দিয়েছেন। সে জন্য ওঁকে ধন্যবাদ জানালাম।’’
তবে ‘অভিযোগকারী’ মালার সুর নরম হয়নি। সে বলে, ‘‘যে কোনও কারণে মা ভাইয়েরই পক্ষ নেয়। ভাই আমাকে মারলেও মা ওকে কিছু বলে না। আমি কিছু বললেই আমাকে মারধর করে। তাই মায়ের বিরুদ্ধে পুলিশকাকুকে বলেছি। পুলিশকাকু বলেছে, এ বার কিছু বললে, মাকে ধরে নিয়ে এসে থানায় আটকে রাখবে। তাই এ বারের মতো ছেড়ে দিলাম।’’