ডাবের আগুনে মুখ পুড়ছে পড়ুয়াদের

যদিও এখন শীত বিদায় নেয়নি। কয়েক দিন আগেও ঠাণ্ডার কারণে বাজারে ছিল না ডাবের চাহিদা। গুটি কয়েক ডাব বিক্রেতা বাজার ঘুরে ফেরি করলেও দেখা মেলেনি ক্রেতার। কিন্তু মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হতেই বাজারে যেমন আচমকা ডাবের চাহিদা তৈরি হয়ে গিয়েছে, তেমনি লাফিয়ে বেড়েছে ডাবের দাম।

Advertisement

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস

ডোমকল শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:২৫
Share:

পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে। নিজস্ব চিত্র

মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হতেই চাহিদা তৈরি হয়েছে ডাবের। সেই সুযোগে এক লাফে বেড়ে গিয়েছে ডাবের দাম।

Advertisement

যদিও এখন শীত বিদায় নেয়নি। কয়েক দিন আগেও ঠাণ্ডার কারণে বাজারে ছিল না ডাবের চাহিদা। গুটি কয়েক ডাব বিক্রেতা বাজার ঘুরে ফেরি করলেও দেখা মেলেনি ক্রেতার। কিন্তু মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হতেই বাজারে যেমন আচমকা ডাবের চাহিদা তৈরি হয়ে গিয়েছে, তেমনি লাফিয়ে বেড়েছে ডাবের দাম। ডাবপিছু ১০-১৫ টাকা দর বেড়ে হয়েছে ২৫-৩০ টাকায়। চাহিদা বুঝে সাইকেলের পিছনে, কখনও সাইকেলের মাঝে ডাবের কাঁদি ঝুলিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে একশ্রেণির বিক্রেতাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে।

তবে ডাবের সঙ্গে পরীক্ষার সম্পর্ক অবশ্য নতুন নয়। অন্য সময় যাই হোক না কেন, জীবনের প্রথম বড়পরীক্ষা দেওয়ার সময়ে সন্তানের প্রতি একটু বাড়তি নজর থাকে অভিভাবকদের। এমনকি পরীক্ষাকেন্দ্রে আসা আত্মীয়-পরিজনেরাও এই সময়ে ডাব কেটে হাতে ধরে দাঁড়িয়ে থাকছেন গেটের সামনে। শেষ হতেই হাতে সেই ডাব ধরিয়ে শুরু হয় প্রশ্নপত্র নিয়ে একের পর এক প্রশ্ন! ‘কমন’ প্রশ্ন আসা থেকে পরীক্ষা হলের মধ্যে ‘গার্ড’ কেমন ছিল ধরণের বিভিন্ন প্রশ্ন! পরীক্ষার্থীও বাধ্য হয় ডাবের ভেতরে থাকা নল থেকে মুখ সরিয়ে সেই সব প্রশ্নের উত্তর দিতে। এক পরীক্ষার্থীর কথায়, ‘‘চুপ করে থাকলেই বাড়ির লোকজন ধরে নেয় পরীক্ষা খারাপ হয়েছে বলেই উত্তর দিচ্ছি না। তাই অনিচ্ছে থাকা সত্ত্বেও ডাব থেকে মুখ সরিয়ে বার বার করে উত্তর দিতে হয়।’’

Advertisement

পরীক্ষাকেন্দ্রে আসা অভিভাবক সালেমা বিবি বলছেন, ‘‘ বাড়ির গাছে ডাব ভূতে খাচ্ছে আর আমরা এখানে এসে ২৫ টাকা দিয়ে ডাব কিনছি। পরীক্ষা বলে এমন ফাটকা বাজারি!’’ চাহিদা থাকায় গাছে ডাব দেখে ডোমকলের মতি মণ্ডলের বাড়িতে হানা দেন ডাব বিক্রেতা রেজাউল শেখ। দাবি জানান ডাবগুলো কেটে বিক্রি করে দেওয়ার জন্য।

রেজাউল বলছেন, ‘‘এই ঠাণ্ডায় ডাবের দাম নেই। আমাকে বিক্রি করলে বাড়তি দাম দিয়ে কিনে নেব। কয়েক দিন পরেই নারকেল হয়ে গেলে কেউ ফিরেও তাকাবে না।’’

যদিও তাতে মন গলেনি মতি মণ্ডলের। মতি মণ্ডল বলছেন, ‘‘বুঝে উঠতে পারছিলাম না এই ঠাণ্ডাতেও ডাব বিক্রেতা বাড়িতে এসে এত অনুনয়-বিনয় করছে কেন! পরে বুঝলাম মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য এখন বাজারে টান পড়েছে ডাবের।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন