চাপড়া হাসপাতালে আহতেরা। নিজস্ব চিত্র
পঞ্চায়েত ভোটের সময়ে প্রার্থী নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে শুরু হয়েছিল বিবাদ। শুক্রবার জমির উপর দিয়ে ট্রাক্টর যাওয়া নিয়ে সেই বিবাদ চরম আকার নিল। এলোপাথাড়ি কোপে খুন করা হল এক জনকে। তবে রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।
পুলিশ জানায়, মৃতের নাম সিরাজ খান (৫০)। বাড়ি চাপড়া থানার গোংড়া এলাকায়। শনিবার রাতে চাপড়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে ‘মৃত’ ঘোষণা করেন। উভয় পক্ষের ন’জন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে চার জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁদের শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, চাপড়া পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্য নাজমা খাতুনের পরিবারের সঙ্গে বিবাদের জেরেই এই ঘটনা। নাজমা এর আগে হাটখোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য ছিলেন। তাঁর পরিবারের একাধিক সদস্য কখনও না কখনও তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ছিলেন। এ বার পঞ্চায়েতের প্রার্থিপদ নিয়ে তাঁদের সঙ্গে বিবাদ বাধে ইসলাম বিশ্বাসদের। শেষমেশ ইসলামরাই গ্রাম পঞ্চায়েতের টিকিট পান আর নাজমা খাতুন পান পঞ্চায়েত সমিতির টিকিট। তখনকার মতো পরিস্থিতি থিতোলেও ভিতরে-ভিতরে উত্তেজনা থেকেই গিয়েছিল।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, দুপুরে ইসলাম বিশ্বাসের ছেলে নাজমা খাতুনের আত্মীয় তথা প্রাক্তন গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য আবুল হোসেন খানের জমির উপর দিয়ে ট্রাক্টর নিয়ে যাচ্ছিলেন। আবুল তাতে বাধা দেন। তা নিয়ে কথা কাটাকাটি, তা থেকে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। দু’পক্ষের লোকজনই ঘটনাস্থলে চলে আসেন। যদিও তখন আর ঘটনা বেশি দূর গড়ায়নি। রাতে আবুলের ভাইপো সিরাজ খান নমাজ পড়তে যাচ্ছিলেন। পথে তাঁকে এলোপাথাড়ি কোপানো হয়। খবর পয়ে তাঁর পরিবারের লোকজন চলে এলে দু’পক্ষের মধ্যে কোপাকুপি শুরু হয়ে যায়।
আহতদের চাপড়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। চিকিৎসকেরা সিরাজকে ‘মৃত’ ঘোষণা করেন। হাসপাতালে শুয়ে জখম আবুল হোসেন খান বলেন, “ইসলাম বিশ্বাসেরা অনেক পরে দলে ঢুকে জোর করে পঞ্চায়েত সদস্য হতে চাইল। সেই থেকেই ওরা আমাদের সহ্য করতে পারে না।” ইসলাম বিশ্বাস পাল্টা বলেন, “এখন আমরা তৃণমূল। ওরা প্রথম থেকেই আমাদের সহ্য করতে পারত না। আজ সামান্য একটা কারণে আমার ছেলেকে কোপায়।” তৃণমূলের চাপড়া ব্লক সভাপতি জেবের শেখের দাবি, “মাঠে ট্রাক্টর যাওয়া নিয়ে গন্ডগোল। এর সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই।”