ছাই হাতড়েই মিলল আধ-পোড়া গয়না

দু’দিন পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু সুলতানপুরের গা থেকে পোড়া গন্ধটা এখনও যায়নি। এখনও ধ্বস্ত ঘরবাড়ির আড়ালে দীর্ঘশ্বাস, গ্রামের স্কুলবাড়িতে মজুত খাবারের জন্য লম্বা লাইন আর থেকে থেকেই ডুকরে ওঠা কান্না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৬ ০২:৩২
Share:

দু’দিন পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু সুলতানপুরের গা থেকে পোড়া গন্ধটা এখনও যায়নি। এখনও ধ্বস্ত ঘরবাড়ির আড়ালে দীর্ঘশ্বাস, গ্রামের স্কুলবাড়িতে মজুত খাবারের জন্য লম্বা লাইন আর থেকে থেকেই ডুকরে ওঠা কান্না।

Advertisement

মঙ্গলবার সকালেও গ্রামের পুড়ে যাওয়া ঘর গেরস্থালিতে হারানো জিনিসের খোঁজ। হঠাৎ পেয়ে যাওয়া আধ-পোড়া গয়না দেখে কেঁদে উঠলেন এক মহিলা। আর গ্রামের সুকুর আলি তার মামলার আধ-পোড়া কাগজপত্র উদ্ধার করে ছাই গাদার মধ্যে দাঁড়িয়েই ফস করে ধরিয়ে ফেললেন বিড়ি।

এই টুকরো টুকরো ছবির মধ্যেই হারানো গ্রামটা যেন ফের উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। স্কুলের সামনে দিনের বরাদ্দা খাবারের জন্য লাইন পড়ছে, আহত গরু-ছাগলের চিকিৎসার জন্য খোঁজ পড়ছে প্রাণী চিকিৎসকেরও।

Advertisement

লালবাগ মহকুমাশাসক প্রবীর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মেডিক্যাল ক্যাম্প খোলা যায় কিনা তা নিয়ে আমি কতা বলেছি।’’ তবে অদূরে ভগবানগোলার কানাপুকুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আহতদের চিকিৎসা যে তেমন হচ্ছে না তা স্বীকার করে নিয়েছেন প্রশাসনের কর্তারাই। এসডিও অবশ্য জানাচ্ছেন, বুধবার সকাল থেকে গ্রামে পশু চিকিৎসক ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘গ্রামের মানুষ তাঁকে আলাদা করে চিনতে পারেননি বলেই মনে হয়।’’

রবিবার দুপুরে ভগবানগোলা-১ ব্লকের মহম্মদপুর পঞ্চায়েতের সুলতানপুর গ্রামটা আগুনে ঝলসে প্রায় মানচিত্র থেকেই মুছে গিয়েছে। মারাও গিয়েছেন দু’জন। আহতের সংখ্য়া অন্তত দশ। আশঙ্কাজনক অবস্থায় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ওজিফা বিবি নামে এক প্রৌঢ়া। লালবাগ মহকুমা হাসপাতালেও এক জন ভর্তি রয়েছেন।

এ দিন গ্রামে যান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তাঁর আসার খবর পেয়েই ভিড় বাড়তে থাকে। জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ আলম বলেন, ‘‘অধীরদা ওই গ্রামে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের বেশ কয়েক জন সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। অগ্নিকাণ্ডের ভয়াবহতা দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।’’

প্রশাসন প্রাথমিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের যে তালিকা তৈরি করে তাতে ৮৬টি পরিবারের নাম ছিল। তাই নিয়ে গ্রামে কিছুটা হলেও ক্ষোভ রয়েছে।। কারণ অনেকের অভিযোগ, তাঁদের বাড়িও ঝলসে গিয়েছে। কিন্তু সরকারি তালিকায় তাঁদের নাম নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন