প্রতিবাদের কর্মবিরতি

আদালতে ফের নাকাল জনতা

মাথার উপরে চড়া রোদ। কোর্টের চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছায়ার ছায়ায় নানা বয়সের নারী-পুরুষ। চোখ-মুখে হতাশার চিহ্ন স্পষ্ট। এঁদের অনেকেই এসেছেন অনেক দূরের গাঁ-গঞ্জ থেকে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৭ ০১:২৫
Share:

হতাশ: বহরমপুর আদালতে। —নিজস্ব চিত্র।

মাথার উপরে চড়া রোদ। কোর্টের চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছায়ার ছায়ায় নানা বয়সের নারী-পুরুষ। চোখ-মুখে হতাশার চিহ্ন স্পষ্ট। এঁদের অনেকেই এসেছেন অনেক দূরের গাঁ-গঞ্জ থেকে। কেউ বাড়ির লোকের জামিন নিয়ে দুশ্চিন্তায়, তো কেউ সাক্ষ্যের দিন ফের অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় বিরক্ত।

Advertisement

যুক্তিযুক্ত কোনও কারণ ছাড়া আইনজীবীরা দুমদাম কর্মবিরতি করলে, তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে কেন্দ্রের কাছে সুপারিশ করেছে জাতীয় আইন কমিশন। তার জন্য ‘অ্যাডভোকেটস অ্যাক্ট’-এ সংশোধনী আনার প্রস্তাবও করা হয়েছে। তার প্রতিবাদে বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া-র ডাকে শুক্রবার দুপুর থেকে দেশ জুড়ে কর্মবিরতি পালন করলেন আইনজীবীরা।

মাসখানেকের মধ্যে এই নিয়ে পরপর তিন বার! আইনজীবীদের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়ার প্রতিবাদ হিসেবে গত ১৭ এপ্রিল আচমকা কর্মবিরতি পালন করা হয়। তিন দিনের মাথায় ফের এক প্রস্ত কর্মবিরতি। তার পরে এ দিন। যার ফল ভুগতে হল সাধারণ মানুষকে!

Advertisement

দুপুরে বহরমপুর জেলা জজ আদালতের গেটের সামনে জড়ো হয়ে সংশোধনী আনার খসড়া বিলে আগুন ধরিয়ে দেন আইনজীবীরা। বহরমপুর বার অ্যাসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুজিত মজুমদারের বক্তব্য, ‘‘এই প্রস্তাব আইন আকারে এলে আইনজীবীরা ধর্মঘট বা কর্মবিরতি করতে পারবেন না। সর্বভারতীয় ও রাজ্য কাউন্সিলের পাশাপাশি বিভিন্ন বার অ্যাসোসিয়েশনে যে সব কমিটি রয়েছে, সেগুলির সদস্য কারা হবে সেটাও ঠিক করে দেবে জাতীয় আইন কমিশন, যা সংবিধান বিরোধী।’’

বহরমপুরে জেলা জজ আদালতের অধীনে ৮টি আদালত আছে, আর মুর্শিদাবাদ সিজেএম আদালতের অধীনে রয়েছে তিনটি। সব মিলিয়ে ১১টি আদালতে কয়েক হাজার মামলা ঝুলে। বারবার কর্মবিরতি হতে থাকায় পরিস্থিতি সঙ্গীন হচ্ছে। উত্তর ২৪ পরগনার নিউটাউন থেকে বহরমপুর আদালতে এসেছিলেন হাফিজুল আলি। গত মঙ্গলবার বীরভূম থেকে নিউটাউন যাওয়ার পথে বহরমপুরে পুলিশ তাঁর পাথরের লরি আটকায়। আদালতে কাগজপত্র দেখিয়ে লরি ছাড়াতে এসেছিলেন তিনি। ভোরে গাড়িতে বহরমপুরে এসে জানতে পারেন, আইনজীবীদের কর্মবিরতি পালনের এ দিন কোনও মোকদ্দমা হবে না। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘লরিটা থানায় আটকে থাকায় রোজ প্রায় সাড়ে সাত হাজার টাকা ক্ষতি হচ্ছে। কর্মবিরতির কথা আগাম জানতে পারলে আমার মতো অনেককে ভোগান্তি পোহাতে হত না।’’ সুজিত মজুমদারের বক্তব্য, কর্মবিরতি পালনের আবেদন জানিয়ে তিন দিন আগে চিঠি দিয়েছে বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁরা বৈঠক করে কর্মবিরতি পালনের সিদ্ধান্ত নেন। সে কারণেই মক্কেলদের আগাম জানানো যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন