প্রতীকী ছবি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, রক্তসঙ্কট কাটাতে থানা পিছু রক্তদান শিবির করতে হবে। রক্ত সংগ্রহ করতে হবে পুরসভা এবং ব্লক প্রশাসনগুলিকেও।
নদিয়া ও মুর্শিদাবাদে পুলিশ চোর ধরতে পারুক আর না-ই পারুক, সে কথা রেখেছে। নদিয়ার ২৩টি থানায় শিবির শেষ হয়েছে ৭ জুন। মুর্শিদাবাদ জেলার ২৭টি থানাতেও ১৭ থেকে ২৬ মে-র মধ্যে শিবির হয়ে গিয়েছে। সংগ্রহ হয়েছে ২৮০৮ প্যাকেট রক্ত। সে দিক থেকে খানিকটা পিছিয়েই আছে নদিয়া। তবে পুরসভা ও ব্লক মিলিয়ে সেখানে ২৪১০ প্যাকেট রক্ত সংগ্রহ হয়েছে।
দুই জেলা মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি রক্ত দিয়েছে বেলডাঙা থানা— পুরো ২০০ প্যাকেট। নদিয়ায় রক্ত দেওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে হরিণঘাটা। ২০৩ প্যাকেট রক্ত দিয়েছে হরিণঘাটা পুরসভা, থানা দিয়েছে ৭৬ প্যাকেট। শান্তিপুর থানা দিয়েছে ৭৪ প্যাকেট। আবার হাঁসখালি থানা দিয়েছে মোটে ৩০ প্যাকেট, ৩১ প্যাকেট দিয়েছে হোগলবেড়িয়া। মুর্শিদাবাদে সবচেয়ে কম রক্ত দিয়েছে দৌলতাবাদ থানা— ৫৬ প্যাকেট। মহকুমার হিসেব ধরলে বহরমপুরের সাতটি থানা দিয়েছে সবচেয়ে বেশি, ১১৭২ প্যাকেট। আর সবচেয়ে কম দিয়েছে কান্দির পাঁচটি থানা, মোটে ৩০৪ প্যাকেট।
পুরসভাগুলির মধ্যে রক্ত দেওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে নবদ্বীপ, তারা জোগাড় করেছে দেড়শো প্যাকেট। কৃষ্ণনগরে শ’দুয়েক স্বেচ্ছাসেবী তৈরি ছিলেন। কিন্তু জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক একশো প্যাকেটের বেশি নিতে তৈরি ছিল না। শেষে চাপাচাপি করে ১৩১ জন রক্ত দিতে পেরেছেন। সদ্য তৈরি হওয়া ডোমকল পুরসভাও দিয়েছে ১২০ প্যাকেট রক্ত। সেখানে বেলডাঙা পুরসভা ১০৫ প্যাকেট ও বহরমপুর পুরসভা ১০১ প্যাকেট রক্ত দিতে পেরেছে। সেখানে কুপার্স ক্যাম্প দিয়েছে মাত্র ৫২ প্যাকেট, চাকদহ পুরসভা ৬৫, কল্যাণী ৫৫, শান্তিপুর দিয়েছে ৫০ প্যাকেট। এখনও রক্তদান শিবির করেনি জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ, ধুলিয়ান, জঙ্গিপুর পুরসভা।
তবে করুণ অবস্থা নদিয়ার বেশির ভাগ ব্লকের। রানাঘাট ১ যেমন মাত্র ১১ প্যাকেট, কালীগঞ্জ ১৩ প্যাকেট, করিমপুর-২ ব্লক ১৫ প্যাকেট দিয়েছে। তবে হরিণঘাটা ৫১ প্যাকেট, তেহট্ট ১ ব্লক ৫০ প্যাকেট, চাপড়া ৪৫, হাঁসখালি ৪৪ প্যাকেট দিয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বেঁধে দিয়েছিলেন, থানা ও ব্লক পিছু ৫০ প্যাকেট করে এবং পুরসভা পিছু ১০০ প্যাকেট করে দিতে হবে। সকলেই সেই লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পেরেছে, এমনটা নয়। কিন্তু সব মিলিয়ে সংগ্রহ মন্দ নয়। প্রতি বছর তীব্র গরমের কারণে মে থেকে জুলাই রক্তদান শিবির কম হয়। রক্তদাতারাও উৎসাহ দেখান না। ফলে রক্তসঙ্কট তীব্র হয়ে ওঠে। শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসক সোমনাথ সরকার বলেন, “সত্যি বলতে, এই উদ্যোগের ফলে এ বার শুখা মরসুমেও কোনও সমস্যা বোঝা গেল না।” শুক্রবার দিনের শেষে সেখানে ২৯২ প্যাকেট রক্ত মজুত ছিল। মুর্শিদাবাদ জেলা ব্লাড ব্যাঙ্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক প্রভাসচন্দ্র মৃধাও জানান, জেলা ব্লাড ব্যাঙ্কে বর্তমানে বিভিন্ন গ্রুপের রক্ত যথেষ্ট মজুত রয়েছে। নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত সব সময়েই বিরল, এ ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।