Flipkart

ফ্লিপকার্ট নিয়ে খুশি হরিণঘাটা

বহুজাতিক সংস্থা ফ্লিপকার্টের বিপুল বিনিয়োগের কথা নবান্নে বসে বুধবার ঘোষণা করেছেন রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্র। বলা হচ্ছে, ২০২০ সালের মধ্যেই ওই সংস্থা হরিণঘাটায় ৯৫১ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে প্রকল্পের কাজ শেষ করবে। প্রায় ১৮ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। ফলে এলাকাবাসীর আশা জাগারই কথা। 

Advertisement

মনিরুল শেখ

হরিণঘাটা শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:১৩
Share:

সত্যিই কি ফাঁকা জমিতে হবে ফ্লিপকার্টের হাব? হবে বিপুল কর্মসংস্থান। নবান্নের ঘোষণা শোনা ইস্তক আশা-নিরাশার দোলাচলে দুলছে হরিণঘাটা।

Advertisement

বহুজাতিক সংস্থা ফ্লিপকার্টের বিপুল বিনিয়োগের কথা নবান্নে বসে বুধবার ঘোষণা করেছেন রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্র। বলা হচ্ছে, ২০২০ সালের মধ্যেই ওই সংস্থা হরিণঘাটায় ৯৫১ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে প্রকল্পের কাজ শেষ করবে। প্রায় ১৮ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। ফলে এলাকাবাসীর আশা জাগারই কথা।

কয়েক দশক আগে হরিণঘাটায় তৈরি হয়েছিল বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। পরে বেলগাছিয়ার প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক স্তরের পড়াশোনার জন্য হরিণঘাটায় ক্যাম্পাস খোলে। বিজ্ঞান গবেষণার কেন্দ্র আইসার-ও তৈরি হয়েছে এখানে। মাস কয়েক আগে পশ্চিমবঙ্গ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ও তাদের ক্যাম্পাস সল্টলেক থেকে পাকাপাকি সরিয়ে এনেছে এখানে। এর মধ্যে হরিণঘাটা গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে পুরসভা স্তরে উন্নীত হয়েছে।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দাদের খুশির একটা বাড়তি কারণ হল, এত দিন এখানে যা কিছু হয়ে এসেছে, তার সবটাই শিক্ষাক্ষেত্রে। এলাকার মানুষ তা থেকে তেমন লাভবান হননি। আবার হরিণঘাটা ডেয়ারিও আগের জৌলুস হারিয়েছে। ফলে সেখানকার অনেক কর্মীকেই এখানে সরকারের বিভিন্ন দফতরে পাঠানো হয়েছে।

এরই মধ্যে বড় বিনিয়োগের ঘোষণায় কর্মসংস্থানের আশায় ফের উজিয়ে উঠেছে। নবান্ন জানিয়েছে, ফ্লিপকার্ট এখানে যে যন্ত্রচালিত গুদাম করবে সেখানে জিনিসপত্র বাছাই ও প্যাকেজিং-এর কাজ হবে। তার জন্য প্রয়োজন হবে বিপুল পরিমাণ অদক্ষ শ্রমিক। হরিণঘাটা ব্লক তৃণমূলের সভাপতি চঞ্চল দেবনাথ বলেন, ‘‘আমি যত দূর জেনেছি, হরিণঘাটা ফার্মের বহু ফাঁকা জায়গা রয়েছে। সেখানেই কোনও এক জায়গায় তৈরি হবে ফ্লিপকার্টের লজিস্টিক হাব। এখানকার মানুষের বাড়ির কাছেই কর্মসংস্থান হবে।’’

ইতিমধ্যেই অনেকেই সেই সুদিনের খোয়াব দেখতে শুরুও করেছেন। স্থানীয় নিমতলার বাসিন্দা মিজানুর রহমান স্নাতকস্তরের পড়াশোনা শেষ করে এখনও বাড়িতেই বসে। সরকারি বা বেসরকারি কোনও প্রতিষ্ঠানেই তিনি কাজ পাননি। তিনি বলেন, ‘‘শুনছি, বড় পুঁজি আসছে। সেখানে যদি কাজ হয়, তা হলে তো ভালই হয়।’’ কাষ্ঠডাঙার শুভদীপ সাহা, বাবাই মণ্ডলেরাও স্নাতক হওয়া ইস্তক কাজ পাননি। তাঁদেরও আশা, যদি যদি মালপত্র বাছাই বা প্যাকেজিংয়ের কাজ পান। এই প্রকল্পে তাদের ভাগ্যে শিকে ছেড়ে।

যে এলাকায় এই হাব হবে তার আশপাশের এলাকার মানুষজনের আশা, ছোটখাটো দোকান দিয়েও বেশ রোজগার হবে অনেকের। তৃণমূল নিয়ন্ত্রিত হরিণঘাটা পুরসভার চেয়ারম্যান রাজীব দালাল বলেন, ‘‘আমাদের এলাকার বহু মানুষ অন্তত খাবারের দোকান দিয়েও কিছু টাকা রোজগার করতে পারবেন।’’

সিঙ্গুরে টাটার গাড়ি কারখানা থেকে হলদিয়ায় ইন্দোনেশিয়ার সালেম গোষ্ঠীর বিনিয়োগও ভেস্তে যাওয়া এখনও অনেকের স্মৃতিতেই টাটকা। হরিণঘাটার অসীম দাসের কথায়, ‘‘এখানে ফ্লিপকার্টের লগ্নি হলে তো ভালই। তবে তৈরি না হওয়া পর্যন্ত বিশ্বাস নেই। কারণ, এ রাজ্য থেকে শেষ মুহূর্তে লক্ষ্মী চলে যাওয়ার নজির তো রয়েইছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন