কর্তা কাঠগড়ায়,মিড-ডে চুলোয়

দিন সাতেক আগে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেছিলেন এক শিক্ষিকা। সেই থেকে বহরমপুরের কৃষ্ণনাথ কলেজ স্কুলের প্রাথমিক বিভাগের প্রধান শিক্ষক দুলালচন্দ্র ঘোষ স্কুলে যাননি। অন্য কাউকে সাময়িক ভাবে দায়িত্বও দেননি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৭ ০২:১৯
Share:

দিন সাতেক আগে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেছিলেন এক শিক্ষিকা। সেই থেকে বহরমপুরের কৃষ্ণনাথ কলেজ স্কুলের প্রাথমিক বিভাগের প্রধান শিক্ষক দুলালচন্দ্র ঘোষ স্কুলে যাননি। অন্য কাউকে সাময়িক ভাবে দায়িত্বও দেননি। ফলে মিড-ডে মিল নিয়ে অব্যবস্থা শুরু হয়েছে।

Advertisement

স্কুলের শিক্ষক দীপঙ্কর রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘প্রধান শিক্ষক স্কুলে না আসায় শিক্ষা দফতরের সাপ্তাহিক তালিকা মেনে মিড-ডে মিল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। বুধবার ডিমের ঝোল, ডাল, ভাত ও শাক-সব্জির তরকারি দেওয়ার কথা ছিল। প্রধান শিক্ষক না থাকায় ডিম রান্না হয়নি। মঙ্গলবারের মেনু থেকে বাদ গিয়েছে সয়াবিন ও পাঁচমিশেলি তরকারি। দেওয়া হয়েছে খিচুড়ি আর আলুর ঝোল।’’

ইতিমধ্যে ওই শিক্ষিকা পুলিশকে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রধান শিক্ষক তাঁর বাড়িতে এসে অভিযোগ প্রত্যাহার করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। বুধবার থানায় ডায়েরি করে শিক্ষিকার অভিযোগ, ‘‘এফআইআর প্রত্যাহার না করলে আমায় খুন করবেন বলেও হুমকি দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক।’’ অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর থেকেই দুলাল ঘোষের মোবাইল বন্ধ। বহরমপুর থানার আইসি শৈলেন্দ্রনাথ বিশ্বাস জানান, তদন্ত শুরু হয়েছে। কিন্তু গোটা ঘটনার মাসুল দিতে হচ্ছে খুদে পড়ুয়াদের। স্কুল সূত্রে জানা যায়, স্কুলের মিড-ডে মিলের জন্য ডিম, শাকসব্জি, তেল, নুনের মতো যাবতীয় উপকরণ প্রধান শিক্ষকই কেনেন। তিনি হঠাৎ স্কুলে আসা বন্ধ করে দেওয়ায় কেনাকাটা প্রায় বন্ধ। ফলে মিড-ডে মিলের ভাঁড়ারে টান পড়েছে। অন্য শিক্ষকেরা রান্না চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও শিক্ষা দফতরের নির্ধারিত খাবার দেওয়া যাচ্ছে না। বহরমপুরের ওই প্রাথমিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বর্তমানে ১১৪০। শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন ২৫ জন। কিন্তু প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আগেও নানা অভিযোগ উঠেছে। অন্যতম হল, তাঁর শারীরিক প্রতিবন্ধীর শংসাপত্র জাল। মিড-ডে মিল ও ছাত্র ভর্তি নিয়েও বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। সে ব্যাপারে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?

Advertisement

বহরমপুর পূর্ব চক্রের বিদ্যালয় পরিদর্শক জিয়াউল ইসলাম বলেন, ‘‘ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এ পর্যন্ত ১৬-১৭ বার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে।’’ তবু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি কেন? জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের সভাপতি দেবাশিস বৈশ্য বলেন, ‘‘সব অভিযোগের বিভাগীয় তদন্ত চলছে। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পরেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

তত দিন কি খুদে পড়ুয়ারা দুপুরে হাওয়া খেয়ে থাকবে? সংসদ সভাপতির আশ্বাস, ‘‘ওই এলাকার স্কুল পরিদর্শককে মিড-ডে মিলের জন্য একটি কমিটি গড়ে সমস্যার সমাধান করতে বলা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন