চোখ রাঙাচ্ছে টাইফাস

ঘুম ভাঙেনি স্বাস্থ্য দফতরের

রাঙামাটির পঞ্চায়েত প্রধান রাজীব সরকার বলছেন, ‘‘স্বাস্থ্য দফতরের উদাসীনতায় এই ধরনের রোগ ছড়াচ্ছে। গ্রামগঞ্জ দূরে থাক, ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রই আবর্জনায় ভর্তি।’’ 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:৫১
Share:

প্রতীকী চিত্র

সরকারি ভাবে মৃতের সংখ্যা তিন। আক্রান্ত অন্তত ৬৫। গত তিন সপ্তাহের মধ্যে ডেঙ্গির মতোই চোখ রাঙাতে শুরু করেছে স্ক্রাব টাইফাস। গ্রামের আনাচ কানাচে মানুষের কপালে ভয়। কিন্তু ঘুম ভাঙেনি স্বাস্থ্য দফতরের। গ্রাম ঘুরে সচেতন করা কিংবা মেডিক্যাল টিমের খোঁজ মেলেনি কোথাও।

Advertisement

গ্রামবাসীদের তাই প্রশ্ন, আর করে স্বাস্থ্য কর্তারা গ্রামে এসে বোঝাবেন, রোগটা কী, পরিত্রাণের উপায়ই বা কী!

স্ক্রাব টাইফাসে মৃত্যুর খবর পেয়ে শুক্রবার বহরমপুরের কর্ণসুবর্ণ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে ক্ষোভের কথা জানান রাঙামাটি চাঁদপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান-সহ পঞ্চায়েতের অন্য সদস্যেরা। সেখানে বহরমপুর ব্লক স্বাস্থ্যআধিকারিক রাজীব স্যানালকে সামনে পেয়ে তাঁরা ক্ষোভ উগরে দেন। তাঁদের অভিযোগ, স্বাস্থ্য দফতরের উদাসীনতার কারণে ডেঙ্গি থেকে স্ক্রাব টাইফাস ধাপে ধাপে ছড়াচ্ছে।

Advertisement

রাঙামাটির পঞ্চায়েত প্রধান রাজীব সরকার বলছেন, ‘‘স্বাস্থ্য দফতরের উদাসীনতায় এই ধরনের রোগ ছড়াচ্ছে। গ্রামগঞ্জ দূরে থাক, ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রই আবর্জনায় ভর্তি।’’

গত মাসের ২৩ তারিখে নবগ্রামের অমরকুণ্ডুর যুবক তরুণ সরকারের স্ক্রাব টাইফাসে মৃত্যু হয়। সেই ঘটনার এক সপ্তাহ পরে সেখানে স্বাস্থ্য দফতরের এক প্রতিনিধিদল গিয়েছিল বটে কিন্তু গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ‘‘নিতান্তই গয়ংগচ্ছ মনোভাব নিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা এসেছিলেন। কোনও পরামর্শই দেননি।’’শুক্রবার অবশ্য বেলডাঙার কুমারপুর গ্রামে স্ক্রাব টাইফাসে মৃত শ্যামল প্রামাণিকের বাড়িতে যান ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক। মুর্শিদাবাদের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাসের দাবি, ‘‘নবগ্রামের যে গ্রামে স্ক্রাব টাইফাসে প্রথম মৃত্যু হয়েছে সেখানে আমরা শিবির করেছি। এ ছাড়া বৃহস্পতিবার যে দুটি গ্রামে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে সেখানেও স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের পাঠানো হয়েছে।’’

স্ক্রাব টাইফাস নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের হেলদোলহীন ভূমিকায় ক্ষুব্ধ কংগ্রেস। জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলছেন, ‘‘ডেঙ্গি থেকে স্ক্রাব টাইফাস সব কিছু নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ এই সরকার। এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ না করায় মৃত্যু পর্যন্ত হচ্ছে।’’

জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র অশোক দাস বলছেন, ‘‘মৃত্যু অবশ্যই দুঃখজনক। তবে স্ক্রাব টাইফাস নিয়ন্ত্রণে সরকারের যা করণীয় সবই করছে। এটা নিয়ে যদি কেউ আঙুল তোলে তা হলে দুর্ভাগ্যজনক।’’

স্বাস্থ্যভবন থেকে অবশ্য ক’দিন আগেই স্ক্রাব টাইফাসের চিকিৎসা সংক্রান্ত নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ৫ দিন বা তার বেশি জ্বর এবং রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার প্রমাণ না মিললে চিকিৎসকেরা স্ক্রাব টাইফাসে জন্য প্রয়োজনীয় অ‌্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে পারেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন