‘নেই নেই করবেন না’, বৈঠকে ঝুলল ফতোয়া

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর বৈঠকের শুরুতে অতিরিক্ত মুখ্য সচিব বলেছেন, তাঁরা পরিকাঠামোগত সমস্যার কথা জানেন। আলোচনায় সেই সমস্যার কথা না তুলে, বর্তমান পরিকাঠামোতে কাজ করতে গিয়ে কি সমস্যা হচ্ছে তা বলতে বলা হয় বিএমওএইচদের।

Advertisement

সামসুদ্দিন বিশ্বাস

বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৮ ০২:১৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

ফতোয়াটা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল প্রথমেই— ‘উঁহু, নার্স নেই ডাক্তার নেই এ সব খামতির কথা আমরা জানি। নেই নেই করবেন না। যা আছে তা নিয়ে কোনও সমস্যা আছে কি?’ স্বাস্থ্য দফতরের মত বিনিময় বৈঠকের শুরুতেই এমন ‘লক্ষ্মণরেখা’ টেনে দেওয়ায় স্বাস্থ্য ভবনের শীর্ষ কর্তাদের সামনে, চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মী, নেই-এর সেই দীর্ঘ তালিকাটা পেশ করার কোনও সুযোগই পেলেন না ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা।

Advertisement

তবে বৈঠক শেষে, জেলার জন্য একগুচ্ছ প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য কর্তারা। মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর— ঘণ্টা কয়েক ধরে, বহরমপুরে জেলাশাসকের অফিসে স্বাস্থ্য কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা। সেখানে স্বাস্থ্যদফতরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব রাজিব সিংহ, ন্যাশনাল হেলথ মিশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর গোলাম আলি আনসারি, স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী, ছিলেন প্রায় সকলেই। বিএমওএইচ থেকে আশাকর্মী, নার্সিংস্টাফ— শুনলেন তাঁদের কথাও। তবে, ‘সমস্যা’ নয় চাইলেন তাঁদের ‘আইডিয়া’।

এ দিন স্বাস্থ্যদফতরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব রাজিব সিংহ অবশ্য বৈঠকের বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খুলতে চাননি।

Advertisement

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গের তিন জেলার বৈঠক শেষ করে সোমবার রাতে অতিরিক্ত মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে রাজ্য স্বাস্থ্যদফতরের গোটা দল বহরমপুরে আসেন। মঙ্গলবার জেলাশাসকের অফিসে বৈঠক হয়। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর বৈঠকের শুরুতে অতিরিক্ত মুখ্য সচিব বলেছেন, তাঁরা পরিকাঠামোগত সমস্যার কথা জানেন। আলোচনায় সেই সমস্যার কথা না তুলে, বর্তমান পরিকাঠামোতে কাজ করতে গিয়ে কি সমস্যা হচ্ছে তা বলতে বলা হয় বিএমওএইচদের।

জেলার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘চিকিৎসক, নার্স ও অন্য কর্মীর সঙ্কটের জেরে সব থেকে বেশি সমস্যা হয়। সেটাই তো বলতে পারলাম না।’’

শমসেরগঞ্জের অনুপনগরের ‘মাদার হাট’ করার কথা বলা হয়েছে। সাগরদিঘি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের প্রশিক্ষিত মেডিক্যাল অফিসার না থাকায় সেখানে ব্লাড ব্যাঙ্ক চালু করা যায়নি। বাড়ি থেকে স্বাস্থ্যকেন্দ্র কিছু কিছু ক্ষেত্রে দূরে হওয়ায় অ্যাম্বুল্যান্স আসতে দেরি হয়। প্রসুতিদের নিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌছতে দেরি হয়। অনেক সময়ে তাই বাড়িতে সন্তান প্রসব হয়ে যাচ্ছে। এই সমস্যা সমাধানে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সন্তান প্রসবের বিষয়ে, গর্ভবতী মায়েদের নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌছনোর ব্যবস্থা করতে ম্যাপিং করতে বলা হয়েছে।

নতুন কি প্রকল্প পাচ্ছে জেলা? জেলাশাসক পি উলাগানাথন জানান, মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জন্য দু’টি ইউএসজি মেশিন, ১০ শয্যার অতিরিক্ত ডায়ালেসিস ইউনিট, জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালের ১২ শয্যার সিসিইউ ইউনিট, এমনই এক গুচ্ছ প্রকল্প রূপায়ণের আশ্বাস দিয়ে গিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন