বিস্কুটে জগন্নাথ ‘ভোগ’

শুরুটা তেমন সুখকর ছিল, বলা যাবে না। হাতের সুপক্ক কলা ছিনিয়ে নিয়ে তাঁর গালে চড় কষিয়ে ফিরে গিয়েছিল যে, গ্যারাজ মালিক জগন্নাথ সিংহ গত কয়েক বছর ধরে তাদেরই পুষ্যি মেনেছে! নিত্য ছ’প্যাকেট বিস্কুট কিনে তাদের না খাওয়ালে কেমন যেন অম্বল অম্বল বোধ হয়!

Advertisement

বিমান হাজরা

শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:৩১
Share:

বিস্কুট-ভক্ত: অরঙ্গাবাদে। নিজস্ব চিত্র

শুরুটা তেমন সুখকর ছিল, বলা যাবে না। হাতের সুপক্ক কলা ছিনিয়ে নিয়ে তাঁর গালে চড় কষিয়ে ফিরে গিয়েছিল যে, গ্যারাজ মালিক জগন্নাথ সিংহ গত কয়েক বছর ধরে তাদেরই পুষ্যি মেনেছে! নিত্য ছ’প্যাকেট বিস্কুট কিনে তাদের না খাওয়ালে কেমন যেন অম্বল অম্বল বোধ হয়!

Advertisement

ছড়ানো বটের ছায়ায় তাঁর সংকীর্ণ গ্যারাজের কাজ ফেলে বেরিয়ে এসে জগন্নাথ বলছেন, ‘‘সত্যি বলছি জানেন, ওদের ওই প্রাপ্যটুকু না দিলে কেমন যেন শরীরে অস্বস্তি হয়। মনে হয় নিজেই কিছু খেলাম না যেন।’’

ওরা সকলেই হনুমান। জগন্নাথের ‘ভোগ’ খাবে বলে দিনের একটা নির্দিষ্ট সময়ে ঠিক এসে হাজির হয় গ্যারাজের চালায়।

Advertisement

অথচ বছর কয়েক আগে দোকানের লাগোয়া ফলের দোকান থেকে কলা কিনে সবে খোসা ছাড়িয়েছেন, চড় কষিয়ে তাঁর হাত থেকে কলা নিয়ে গিয়েছিল এক হনুমান। তাকিয়ে দেখেন গাছ যেন কদম ফুলের মতো ফুটে রয়েছে জনা পঁচিশ লম্ব-লেজ। তবে রাগ নয়। জগন্নাথ বলছেন, ‘‘ প্রথমে রাগ হলেও পরে বেবে দেখলাম, খিদের জ্বালায় তো এমন বেআক্কেলে কাজ করেছে। সে দিন কেমন একটা মায়া জন্মে গেল। তার পর থেকে রোজই ওদের জন্য বিস্কুট মজুত রাখি। নির্দিষ্ট সময়ে ওরাও এসে প্রায় স্কুল পড়ুয়া বালকের মতো লাইন করে সেই বিস্কুট নিয়ে যায়।’’ পড়শি দোকানিরা জানাচ্ছেন, কোনও কারনে দোকান বন্ধ থাকলে হনুমানের দল ঠিকর এসে হাজির হয় জগন্নাথের গ্যারাজের ছাদে। তখন অন্যরাই জগন্নাথেক ভোগ কিনে বেঁটে দেন তাদের।

জগন্নাথ বলছেন, ‘‘এ ভাবেই কখন যেন একটা সম্পর্ক গড়ে উঠেছে ওদের সঙ্গে। তাই আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে বিয়ের নেমন্তন্ন থাকলেও যেতে পারি না। ওদের জন্য মন কেমন করে!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement