Crackers

Kali Puja 2021: চায়ের নামে বিক্রি বাজি

কালীপুজোর আগে কলকাতা হাইকোর্ট সব রকম বাজি বন্ধের নির্দেশ দেওয়ার পর এ ভাবেই নানা কৌশলে নিষিদ্ধ বাজি বিক্রি হয়ে চলছে জেলা জুড়ে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২১ ০৭:২৬
Share:

উদ্ধার হওয়া নিষিদ্ধ বাজি। শনিবার। নিজস্ব চিত্র।

বাজারে ভিড় তেমন একটা না-থাকলেও দোকানের মুখে প্রায় পাহারাদারের মতো জাঁকিয়ে বসে খরিদ্দার সামলাচ্ছিলেন দোকানদার নিজেই। এমন সময় কমবয়সী দু’টি ছেলে এসে নিচু গলায় কী যেন বলতেই দোকানদার ভিতরের দিকে তাকিয়ে হেঁকে উঠলেন, “দুটো চা নিয়ে আয় তো।” তড়িঘড়ি এক কর্মচারী চা আনতে চলে গেল! হাতে মাঝারি একটা প্যাকেট। চা আনতে হবে কি না! এমন চা এখন দিনে যে কতবার আসছে তার হিসেব নেই। পাশের দোকানদার মুচকি হাসছেন। তাঁর সরস মন্তব্য, “এ চা সবাই খেতে পারে না। খুব জোরালো চা তো!”

Advertisement

কালীপুজোর আগে কলকাতা হাইকোর্ট সব রকম বাজি বন্ধের নির্দেশ দেওয়ার পর এ ভাবেই নানা কৌশলে নিষিদ্ধ বাজি বিক্রি হয়ে চলছে জেলা জুড়ে। ফোনে কথা বলে ক্রেতাকে জায়গা মতো ‘মাল’ পৌঁছে দিচ্ছেন বিক্রেতা। নবদ্বীপ, কৃষ্ণনগ,র রানাঘাট থেকে শুরু সীমান্তের তেহট্ট, করিমপুরের মতো নানা জায়গায় এ ভাবেই নানা কায়দায় বাজি বিক্রি চলছে। কালীপুজোয় বেশি বাজি ফাটানোর চল চাকদহ, রানাঘাট অঞ্চলে। কয়েক দিন ধরে ওইসব শহরে এবং সংলগ্ন গ্রামীণ এলাকায় বিভিন্ন জায়গায় দোকানে বাজি বিক্রি হচ্ছিল। অভিযোগ, আতশবাজি বিক্রির নাম করে অনেকেই নিষিদ্ধ শব্দবাজি বিক্রি করছিলেন। পরবর্তী সময়ে সবুজ বাজি ফাটানোর ‘অনুমতি’ দেওয়ায় বিষয়টি আরও ঘেঁটে যায়। অনেকে বাজি বিক্রেতা দাবি করেছেন, তাঁরা নাকি লাখ লাখ টাকার সবুজবাজি মজুত করেছিলেন। নতুন নির্দেশে তাঁরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

চাকদহে এক বাজি বিক্রেতার কথায়, “মাত্র ক’দিনের তো ব্যবসা। এমনিতেই মন্দা চলছিল। তারপর এই নির্দেশে সব শেষ।’’ রানাঘাট শহরের সরকার অনুমতিপ্রাপ্ত বাজির দোকানও আছে। এক দোকানদার দেবব্রত নন্দী বলেন, “কালীপুজোর আগে এই নির্দেশ। বাজি যা কিনে ছিলাম তার বেশির ভাগই ঘরে পড়ে রয়েছে।”

Advertisement

পাশাপাশি গত কয়েক দিন থেকে বিভিন্ন জায়গায় হানা দিচ্ছে পুলিশ। লক্ষাধিক টাকার বাজি উদ্ধার হয়েছে। চাকদহের পালপাড়া বাজার, নাকাশিপাড়া, কল্যাণী থেকে একাধিক ব্যবসায়ীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। কল্যাণীর রথতলা এলাকা থেকে দীপক চৌধুরী নামে এক বাজি বিক্রেতাকে শুক্রবার রাতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির নবদ্বীপ শাখার সম্পাদক প্রতাপচন্দ্র দাস বলেন, “বাজি আবার পরিবেশবান্ধব হয় নাকি! এ সব পরিকল্পিতভাবে পরিবেশ দূষণ করার ও জনস্বাস্থ্য বিঘ্নিত করার পন্থা। সবুজবাজি পোড়ালেও ১২৫ ডেসিবেলের বেশি আওয়াজ হবে যা স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। সবুজবাজি পোড়ানোর নির্দেশিকা জারি করে সরকার ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ভারতীয় সংবিধানের বিস্ফোরক আইন ৯বি (১) (সি) লঙ্ঘন করেছিল। হাইকোর্ট রায় দেওয়ায় এ বার যদি প্রশাসন তৎপর হয়।”

নদিয়ার ডিএসপি (ডি অ্যান্ড টি) শুভাশিস চৌধুরী বলেন, “বাজির বিরুদ্ধে সব জায়গায় পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। একাধিক জায়গায় বেআইনি বাজি বিক্রি করার অভিযোগে বিক্রেতারা গ্রেফতার হয়েছেন। এখন টানা চলবে অভিযান।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন