স্লগ ওভারে ঝড় তুলে চাঙ্গা বাজার

বহরমপুর থেকে বড় আন্দুলিয়া কিংবা নওদা থেকে নবদ্বীপ, দুই জেলার প্রায় সব বাজারেই উপচে পড়া ভিড়ে জমজমাট ছিল পুজোর কেনাকাটা। যদিও ব্যবসায়ীদের দাবি, জেতা নয়, প্রায় হেরে যাওয়া ম্যাচ শেষ পর্যন্ত ড্র করেই তাঁরা খুশি।

Advertisement

কৌশিক সাহা ও দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়

কান্দি ও নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:০৩
Share:

বাছাই: শেষবেলায় পছন্দের কাপড় কেনা। নিজস্ব চিত্র

হাসি ফুটল ব্যবসায়ীদের মুখে। পুজোর আগে শেষ রবিবারের বাজারের চেহারা দেখে অনেকেরই মনে পড়েছে স্লগ ওভারে টিম ইন্ডিয়ার দাদাগিরি।

Advertisement

বহরমপুর থেকে বড় আন্দুলিয়া কিংবা নওদা থেকে নবদ্বীপ, দুই জেলার প্রায় সব বাজারেই উপচে পড়া ভিড়ে জমজমাট ছিল পুজোর কেনাকাটা। যদিও ব্যবসায়ীদের দাবি, জেতা নয়, প্রায় হেরে যাওয়া ম্যাচ শেষ পর্যন্ত ড্র করেই তাঁরা খুশি। কিন্তু বাঙালির অন্যতম সেরা উৎসবের বাজারকে শেষ ওভার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হল কেন? ব্যবসায়ীদের একাংশ দায়ী করেছেন, নোট বাতিল ও জিএসটিকে। অন্য দিকে, পাট, আলু ও পেঁয়াজের তেমন দাম পাননি চাষিরা। ফলে পুজোর বাজার নিয়ে প্রথম থেকে আশঙ্কায় ছিলেন ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই। যোগ হয়েছিল মাঝ অগস্টে প্রবল বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি।

ইদের বাজারে তেমন ব্যবসা জমেনি। পুজোর বাজারেও যে খুব সুবিধা হবে না সে অঙ্ক আগেই কষেছিলেন বহু ব্যবসায়ী। শেষ ভরসা ছিল মহালয়ার পরের দিনগুলো। সেই অঙ্ক শেষ পর্যন্ত মিলে যাওয়ায় স্বস্তির হাসি ফুটপাত থেকে বড় ব্যবসায়ীর মুখে। ভিড়ের একটা আগাম আঁচ শনিবার থেকেই পাচ্ছিলেন ব্যবসায়ীরা। রবিবার তাই বিক্রেতারা যেমন পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন আগেভাগেই। চাকুরিজীবী বা মধ্যবিত্তের কেনাকাটা অবশ্য রথের চাকা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয়েছিল। পুজোর শেষবেলায় বাজারে ভিড় করেন মূলত গ্রামীণ ক্রেতারা। এ দিন কান্দির মহকুমা বাজার বা রাজ্য সড়কের ধারে বড়ঞার সাপ্তাহিক হাটে ক্রেতার ভিড়ে রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। ছবিটা প্রায় একই রকম ছিল বহরমপুরেও। যদিও বিকেলের একপশলা বৃষ্টিতে বহরমপুরের বাজার কিছুক্ষণের জন্য থমকে গিয়েছিল। পেশায় দিনমজুর সত্যম হাজরা, ছোটন দাসেরা এ দিন কাজ কামাই করে ছেলেমেয়েকে নিয়ে জামাকাপড় কিনতে হাটে এসেছিলেন। তাঁদের কথায়, “আমাদের কেনাকাটা পুজোর দু’একদিন আগেই করি। বুঝতেই পারছেন, অভাবের সংসার।” বিক্রেতা মিন্টু শেখ, উজ্জ্বল মালেরা বলছেন, “বেশ কয়েক বছর ধরে মানুষ হাট থেকে কেনাকাটা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এ বার কিন্তু ছবিটা বদলে গিয়েছে।” মুর্শিদাবাদ ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার্স অব কমার্সের সম্পাদক কল্যাণ সাহা বলেন, “পাটের কম দাম, বহরমপুর শহরের যানজট-সহ নানা কারণে প্রথম দিকে পুজোর বাজারে বেচাকেনা কম হচ্ছিল। তবে শেষ মুহূর্তে বাজারে ভাল বিক্রি হয়েছে।” তাঁর দাবি, ছোট এবং মাঝারি ব্যবসায়ীদের তুলনায় বড় দোকান বা শপিং মলগুলি ভাল ব্যবসা করেছে। নদিয়া ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্টির সম্পাদক গোকুলবিহারী সাহা বলছেন, ‘‘শেষটা ভালই হল। এটাই চাইছিলাম।’’ সব মিলিয়ে পুজোর বাজারের শেষটা ভাল হওয়ায় খুশি ব্যবসায়ীরা।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন