তিন মাসে আয় কমবে প্রায় ৩০ কোটি

ট্রাক বন্ধে টোল কমেছে ফরাক্কায়

টোল প্লাজা সূত্রে জানা গেছে, দৈনিক গড়ে ১২ হাজার মত গাড়ি চলাচল করত ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের বহরমপুর–ফরাক্কার ফোর লেন দিয়ে। যার সিংহভাগই ভারী যান। ট্রাক চলাচল থমকে যাওয়ায় টোলের পরিমাণও কমে দাঁড়িয়েছে ২১ থেকে ২৩ লাখ টাকার মতো।

Advertisement

বিমান হাজরা

ফরাক্কা শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৫০
Share:

দেখা নেই ট্রাকের: সুতিতে। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়

ফরাক্কা সেতুতে ভারী যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বড়সড় ধাক্কা খেল ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে টোলট্যাক্সের আয়।

Advertisement

বহরমপুর থেকে ফরাক্কা পর্যন্ত ফোর লেনে দু’টি টোল প্লাজা রয়েছে। একটি বহরমপুর লাগোয়া শিবপুরে, যার এক্তিয়ারে রয়েছে প্রায় ৪০ কিলোমিটার ফোর লেন। অন্যটি, সুতির চাঁদের মোড়ে, যার নিয়ন্ত্রণ ৫০ কিলোমটারের সামান্য কিছু বেশি রাস্তার উপরে।

ওই দু’টি টোল প্লাজা থেকে এ যাবত আদায় হয় গড়ে প্রতি দিন ৪৫ লক্ষ টাকা। ফরাক্কা সেতু সংস্কার শুরু হওয়ার পর থেকে ভারী যানের সংখ্যা ক্রমশ কমতে থাকায় টোল ট্যাক্সের আদায়ও কমেছে অস্বাভাবিক হারে। যার ফলে, বর্তমানে তা অর্ধেকেরও নিচে এসে দাঁড়িয়েছে।

Advertisement

টোল প্লাজা সূত্রে জানা গেছে, দৈনিক গড়ে ১২ হাজার মত গাড়ি চলাচল করত ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের বহরমপুর–ফরাক্কার ফোর লেন দিয়ে। যার সিংহভাগই ভারী যান। ট্রাক চলাচল থমকে যাওয়ায় টোলের পরিমাণও কমে দাঁড়িয়েছে ২১ থেকে ২৩ লাখ টাকার মতো।

৩ ডিসেম্বর থেকে ভারী যান মোরগ্রাম থেকে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে ঝাড়খণ্ড ও বিহারের পথে। একই ভাবে উত্তরবঙ্গে ভারী যান ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে ডালখোলা দিয়ে। ফলে ফরাক্কায় যেতে পারছে না কোনও বড় ট্রাক-লরি বা ট্রেলার। শিবপুর টোল প্লাজার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘১২ সথেকে ১৪ হাজার গাড়ি চলাচল করত এই টোল প্লাজা দিয়ে। এখন তা নেমে এসেছে ৬ হাজারে। সবটাই ছোট গাড়ি। কিছু বাস রয়েছে। কিন্তু যে পাঁচ-সাত হাজার গাড়ি কমেছে তার সবটাই ভারী যান। ফলে মোটা অঙ্কের আর্থিক লোকসান হচ্ছে।’’

চাঁদের মোড়ের এক টোল প্লাজার আধিকারিকের কথায়, ‘‘দৈনিক প্রায় ১২ হাজার গাড়ি চলে সুতির এই টোল প্লাজা পেরিয়ে। এখন তা নেমে এসেছে ছ’হাজারে। এমনিতেই মাস তিনেক থেকে গড়ে ৫০০ থেকে ৭০০ লরি কম চলছিল। তিন ডিসেম্বর থেকে তা কমেছে প্রায় ৬ হাজার। সবই মাল্টিএক্সেল ভারী যান।’’

প্রতিটি টোল প্লাজায় এই সব ভারী যানে টোল গুনতে হয়, ২৩০ থেকে ৪৫০ টাকা। স্বাভাবতই গাড়ি চলাচল কমে যাওয়ায় টোল আদায় কমেছে প্রায় ২৪ থেকে ২৬ লক্ষ টাকা।

এক আধিকারিক জানান, ৩১ মার্চ অর্থাৎ চার মাস ধরে এই অবস্থা চললে আদায়ে ঘাটতি দাঁড়াবে প্রায় ৩০ কোটি টাকা। তাতেও ভরসা নেই। চার মাসের মধ্যেই মেরামতির কাজ যে শেষ হবে এমন নিশ্চয়তা নেই। ফলে আয় নেমে যাবে আরও।

৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে এই টোল আদায় করে ফোর-লেনের নির্মাণকারী সংস্থা। জাতীয় সড়কের মালদহের প্রকল্প আধিকারিক দীনেশ হংসরিয়া বলেন, “ফরাক্কা সেতুর সংস্কারটা জরুরি। সে ক্ষেত্রে সর্বসম্মত ভাবে প্রশাসনিক সিদ্ধান্তেই ভারী যান বন্ধ করা হয়েছে। স্বাভাবিক নিয়মেই টোল ট্যাক্স আদায় কমবে। মালদহতেও একই ভাবে টোল আদায় কমেছে। মেনে নেওয়া ছাড়া আর উপায় কি? ”

তবে এই সড়কে ভারি যান বন্ধে অনেকটাই স্বস্তিতে পুলিশ। ফরাক্কার আইসি উদয়শঙ্কর ঘোষ জানান, ভারী যানের মধ্যে বাস, অত্যাবশ্যকীয় পণ্যবোঝাই গাড়িকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু রাস্তায় লরি না থাকায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে গাড়ির সংখ্যা অর্ধেক কমেছে। ফলে যানজটও হালকা হয়েছে অনেকটাই। কমেছে দুর্ঘটনাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন