নাকাশিপাড়া

জট কেটে এক হচ্ছে দু’পার

একটা খাল। একটা অসম্পূর্ণ সেতু। আর দু’টি গ্রামের মানুষের বাড়তে থাকা ক্ষোভ। দশ বছর ধরে বদলায়নি এ ছবি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর  শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:৩২
Share:

একটা খাল। একটা অসম্পূর্ণ সেতু। আর দু’টি গ্রামের মানুষের বাড়তে থাকা ক্ষোভ। দশ বছর ধরে বদলায়নি এ ছবি।

Advertisement

সেতু অসম্পূর্ণ কেন? সেতু চালু করতে গেলে দরকার সংলগ্ন রাস্তা তৈরি করা। অথচ জমি পাওয়া যায়নি।

কেন ক্ষোভ? সরকার যে দামে জমি অধিগ্রহণ করতে চাইছিল, গ্রামবাসীরা সেই দামে দিতে চাননি জমি। দশ বছর ধরে তাই শেষ করা যায়নি সেতুর কাজ।

Advertisement

অথচ নাকাশিপাড়ার আড়পাড়ায় ছারিগঙ্গা খালের উপর সেতু তৈরি হলে এই এলাকার সঙ্গে বর্ধমানের অগ্রদ্বীপ, কাটোয়ার যোগাযোগ অনেক সহজ হবে। এলাকার বাসিন্দাদের দাবিও ছিল তাই। শেষ পর্যন্ত সরকারি নীতি অনুযায়ী জমি কিনেই মিটছে সমস্যা। তার জন্য অবশ্য দাবি মেনে জমির দাম বাড়ানো হয়েছে ৩০ শতাংশ।

নাকাশিপাড়ার বেথুয়াডহরি-অগ্রদ্বীপ রাস্তায় আড়পাড়ায় ছারিগঙ্গা খালের ওপর দীর্ঘ দিন ধরে একটি কাঠের সেতু রয়েছে। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, একটি কংক্রিটের সেতু তৈরি হোক। বছর দশেক আগে আড়পাড়ায় কাঠের সেতুর পাশেই কংক্রিটের সেতু তৈরির কাজ শুরু হয়। বছর খানেক পরে কয়েকটি পিলার তৈরির পরে বন্ধ হয়ে যায় কাজ।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অ্যাপ্রোচ রোডের জমির সমস্যা ছিল। ব্যক্তিগত মালিকাধীন জমির ওপর দিয়ে অ্যাপ্রোচ রোড তৈরি করতে হবে। জমি অধিগ্রহণ না করেই সেতুর কাজ শুরু হয়েছিল। ফলে মাঝপথে সেতুর কাজ বন্ধ করা ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না।

বর্তমান সরকার জমি সমস্যার সমাধান করে সেতুর কাজ ফের শুরু করার উদ্যোগ নেয়। জেলা পরিষদকে সঙ্গে নিয়ে সরাসরি চাষিদের সঙ্গে কথা শুরু করে তারা। জমির দাম নিয়ে দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে কথা হয় দু’পক্ষের। শেষ পর্যন্ত আগের থেকে জমির দাম ৩০ শতাংশ বাড়ানো হয়। চাষিরা সেই দামে জমি দিতে রাজি হয়েছেন বলে প্রশাসনের দাবি।

আড়পাড়ায় ভিটে জমি সরকার ১.৯৮ লক্ষ টাকা প্রতি কাঠা, এবং আউশ জমি কাঠা প্রতি এক লক্ষ ৪৩হাজার টাকায় কিনছে। নারায়নপুরে ভিটে জমি দাম মিলছে দেড় লক্ষ টাকা। প্রতি কাঠা আউশ জমির জন্য চাষিরা পাচ্ছেন প্রায় এক লক্ষ টাকা।

নদিয়া জেলা পরিষদ সরাসরি চাষিদের কাছ থেকে জমি কিনে নেবে। জমির মালিকদের নিয়ে শুনানি চলছে। ৮ ফেব্রুয়ারি আংশিক জমি রেজিস্ট্রি করার হবে বলে জানিয়েছে জেলা পরিষদ। ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে জমি কেনার কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন নদিয়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক শেখর সেন।

নাকাশিপাড়ার বিধায়ক কল্লোল খান বলছেন, “জমির দাম আগের থেকে বাড়ানোয় চাষিরা জমি দিতে রাজি হয়েছেন।’’ পুর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে এই সেতুর জন্য আড়পাড়া গ্রামের ২.৭ একর এবং নারায়ণপুর গ্রামের ৪.২৬ একর জমি দরকার। জমি কেনার জন্য ৬ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকা জেলাপরিষদকে দেওয়া হয়েছে। ওই টাকায় জমির দাম মেটানোর পাশাপাশি সেতুর কাঠামোর কাজও করা হবে।

কী বলছে পুর্তদফতরের কর্তারা? নদিয়ার পুর্তদফতর (সড়ক-এর একজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার গৌতম দত্ত বলছেন, “আগে এই সেতু এবং জমির জন্য ১০কোটি টাকার অনুমোদন দিয়েছিল পুর্তদফতর। নতুন করে জমির দাম বাড়ার ফলে হওয়ায় পুনরায় প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন