একজন মহিলা একই সময়ে সরকারের দুই দফতরে কর্মরত। মাইনে পাচ্ছেন দুই জায়গা থেকে। অথচ, প্রশাসনের তা জানতে সময় লাগল পাক্কা দু’বছর। তাও আবার জানাজানি হল ওই মহিলার পড়শিদের নালিশের ভিত্তিতে। তা না হলে আরও কতদিন ধরে যে ওই মহিলা দুই জায়গা থেকে বেতন পেতেন, তা ভাবতেই শিউরে উঠেছেন জেলা প্রশাসনের কর্তাদের একাংশ।
বগুলার হরিণডাঙার বাসিন্দা কৃষ্ণা বালা ২০০৭ সালে গ্রামেরই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে কর্মী হিসেবে নিযুক্ত হন। এরপর ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি চাকরি পান জেলা শিশু সুরক্ষা দফতরে। সেখানে চুক্তির ভিত্তিতে সমাজকর্মী হিসেবে নিযুক্ত হন। ওই মহিলা শিশু সুরক্ষা দফতরে নিয়োগপত্র পাওয়ার সময় আগের চাকরির বিষয়টি বেমালুম চেপে যান। আর জেলা প্রশাসনও বিষয়টি যাচাই করে দেখেনি। ফলে টানা দু’বছর কৃষ্ণাদেবী দুই দফতর থেকে মাইনে পান। মাস তিনেক আগে বগুলা এলাকার কিছু লোকজন জেলাপ্রশাসনের কাছে বিষয়টি অভিযোগ আকারে জানান। আর তাতেই সম্বিৎ ফেরে প্রশাসনের। শেষমেশ জেলা প্রশাসনের চাপে গেল বছরের ৩১ ডিসেম্বর তিনি অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী থেকে পদত্যাগ করেন। আর দিন-দুয়েক আগে তথ্য গোপন করে দুই জায়গায় চাকরির করার কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে প্রশাসন। তাছাড়াও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী হিসেবে প্রাপ্ত প্রায় এক লক্ষ টাকা ফেরতের নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।
শিশু সুরক্ষা কেন্দ্রে নিয়োগপত্র দেওয়ার সময় প্রশাসন কেন ওই মহিলার আগে কী করতেন, সে বিষয়ে খোঁজখবর নিল না? জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ‘পুলিশ ভেরিফিকেশন’-এর কোনও বন্দোবস্ত নেই। চাকরিপ্রার্থী নিজেই ঘোষণাপত্র দিয়ে জানান, তিনি অন্য কাজে দফতরে কাজ করেন না। কিন্তু ওই মহিলা তা জানাননি। ফলে বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসেনি।
নদিয়ার জেলাশাসক বিজয় ভারতী অবশ্য বলেন, “ওই মহিলা দুই দফতর থেকে বেতন পাচ্ছেন জেনেই তাঁকে একটি চাকরি ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।’’ অভিযুক্ত মহিলা জানান, অনেকের কাছ থেকে শুনেছিলাম এই ধরনের দুটি কাজ একসঙ্গে করা যায়। তাই তিনি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কাজের বিষয়টি গোপনে রেখেছিলেন। অজান্তে এই ভুল হয়েছে।