ভাষা দিবসে আধুনিক বাংলা গান থেকে বাংলা সিনেমার গানের আসর।
গ্রাম জুড়ে লাগানো হয়েছে ১৫টি মাইক। মঞ্চের উপরে রয়েছে খান দশেক ঢাউস বক্স। সেখান থেকেই ছিটকে বের হচ্ছে হিন্দি গানের কলি। তাল মিলিয়ে চলল চটুল নাচ। এ ভাবেই বৃহস্পতিবার রাতভর ভাষা শহিদের গ্রাম বাবলায় ২১ ফেব্রুয়ারি স্মরণ চলল। উদ্যোক্তা আর কেউ নয়, বাবলা গ্রামেরই আবুল বরকত স্মৃতি সংঘ।
গত কয়েক বছরের মত এ বারও ২১ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা বাজতে না বাজতেই মশাল জ্বালিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। মশাল গোটা বাবলা গ্রাম ঘোরে ওই রাতেই। পরে বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে চলে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা। পরে দিনের আলো নিভে যেতেই প্রতিযোগিতা মূলক যাবতীয় অনুষ্ঠানে বন্ধ করে সন্ধ্যা থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল আধুনিক বাংলা গান থেকে বাংলা সিনেমার গানের আসর। রাত বাড়ার সঙ্গে অবশ্য বদলায় অনুষ্ঠানের রং। রাতভর চলে বিচিত্রানুষ্ঠানের নামে হিন্দি গানের সঙ্গে চটুল নাচ। সালারের বাসিন্দা সাবিনা বিবি বলছেন, “এখন সব কিছুরই পরিবর্তন হচ্ছে। তাই ভাষা আন্দোলনের শহিদ স্মরণেরও পরিবর্তন দেখলাম।”
বাবলা গ্রামের গ্রামের এক্কেবারে শেষ প্রান্তে ফাঁকা মাঠের মধ্যে রাতভর চলে ওই বিচিত্রানুষ্ঠান। অনুষ্ঠান উপলক্ষে গ্রামের বিভিন্ন প্রান্তে টাঙানো হয়েছে গোটা ১৫ মাইক। শুধু মঞ্চের উপরেই ছিল ১০টি বক্স। এ দিকে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষার শুরু। উপেক্ষা করে মাইক বাজিয়ে সারা রাত অনুষ্ঠান চলায় ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষ। উদ্যোক্তা কমিটির এক সদস্য যেমন বলছেন, “ওই অনুষ্ঠানের সঙ্গে আবুল বরকত স্মরণের কোনও সম্পর্ক নেই। লোকসভা ভোটকে সামনে রেখে এ ভাবেই গ্রামের মানুষের মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’ তবে আবুল বরকত স্মৃতি উদযাপন কমিটির কর্তা তথা ভরতপুর-২ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি আজাহারুদ্দিন সিজার বলছেন, “উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের পড়াশোনার জন্য কোনও মাইক ব্যবহার হয়নি। অনুষ্ঠানের বিরোধিতা করে যারা রাজনীতি করছে, তারা বাংলা ভাষা ও ভাষা শহিদদের অসম্মান করছেন।’’