মেলা বন্ধের আর্জি ফরাক্কায়

রাত পোহালেই শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। পড়ুয়ারা ব্যস্ত শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে। এ দিকে ফরাক্কার গঙ্গাপাড়ে গভীর রাত পর্যন্ত হইহই করে চলছে মেলা। অভিযোগ, নামে কাঠ-মেলা হলেও সেখানে মাইক, জুয়া সবই চলছে। সেই হুল্লোড়ে পরীক্ষার্থীদের পড়াশোনা শিকেয় ওঠার জোগাড়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ফরাক্কা শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:২১
Share:

রাত পোহালেই শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। পড়ুয়ারা ব্যস্ত শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে। এ দিকে ফরাক্কার গঙ্গাপাড়ে গভীর রাত পর্যন্ত হইহই করে চলছে মেলা। অভিযোগ, নামে কাঠ-মেলা হলেও সেখানে মাইক, জুয়া সবই চলছে। সেই হুল্লোড়ে পরীক্ষার্থীদের পড়াশোনা শিকেয় ওঠার জোগাড়। শেষতক ক্ষুব্ধ এলাকার লোকজন সোমবার বিডিও-র কাছে অবিলম্বে ওই মেলা বন্ধ করার আর্জি জানালেন।

Advertisement

ফরাক্কার বিডিও কেশাং ধেনঢুপ ভুটিয়া বলেন, “শুনেছি এই মেলা বহু পুরনো। ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ মেলার অনুমতি দেওয়ায় প্রশাসন আর আপত্তি করেনি। তবে সেখানে জুয়া, মাইক তো চলার কথা নয়। কিন্তু অভিযোগ যখন উঠেছে, আমি নিজে গিয়ে পরিস্থিতি দেখে ব্যবস্থা নেব।”

আগে এই কাঠ-মেলা বসতো ঝাড়খণ্ড ও ফরাক্কা সীমান্তের গ্রামে। পরে সে মেলা সরিয়ে আনা হয় গঙ্গা পাড়ে। পৌষ সংক্রান্তিতে গঙ্গাস্নানকে ঘিরে স্বাভাবিক ভাবেই মেলায় বাড়ে লোক সমাগম। শ’চারেক অস্থায়ী দোকান বসেছে এই মেলায়। তার মধ্যে প্রায় ৩০০টি দোকানেই রয়েছে কাঠের তৈরি সামগ্রী। এলাকার লোকজনও ফি বছর এই মেলার অপেক্ষায় থাকেন।

Advertisement

কিন্তু এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, নামে কাঠের মেলা হলেও সন্ধ্যের পর থেকেই মেলার চেহারা বদলে যাচ্ছে। নাচ-গান, মাইকের বিকট আওয়াজ, জুয়ার পাশাপাশি বসছে মদের আসর। দুয়ারে মাধ্যমিক। অথচ পড়ুয়ারা রাতে ওই তাণ্ডবে পড়াশোনা করতে পারছে না।

পরীক্ষার্থীরা জানাচ্ছেন, সেই নভেম্বর-ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে পিকনিক ও নানা অনুষ্ঠান। ডিজের দাপটে এমনিতেই নাজেহাল অবস্থা। তার উপরে পরীক্ষার সময়েও যদি শান্তিতে একটু পড়াশোনা না করা যায় তাহলে তো খুব মুশকিল।

স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, “দু’চার দিনের মেলা হলেও একটা কথা ছিল। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে মেলা চলছে। সন্ধ্যের পরেই ওই অত্যাচার আর সহ্য করা যাচ্ছে না। সেই কারণে সবাই গিয়ে বিডিওকে বিষয়টি জানিয়েছি।’’ আর এক বাসিন্দা মন্টু ঘোষ নিজেও ওই মেলার সঙ্গে দীর্ঘ দিন থেকে জড়িত। কিন্তু পরিবেশ নষ্ট করে এ ভাবে মেলা চালানো তিনি সমর্থন করছেন না। তাঁর কথায়, ‘‘সন্ধ্যার পর থেকেই মেলার নামে রীতিমতো তাণ্ডব চলছে। সব দেখেও চুপ করে রয়েছে পুলিশ ও প্রশাসন।”

মেলার আয়োজক কমিটির সম্পাদক বাবলু ঘোষ অবশ্য এমন অভিযোগ মানতে চাননি। তাঁর দাবি, “১৪ জানুয়ারি থেকে এক মাসের জন্য মেলার অনুমতি নেওয়া হয়েছিল। আরও তিন সপ্তাহ সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে। মেলায় কোথাও মাইকও বাজানো হচ্ছে না। পরীক্ষার্থীদের তো কোনও অসুবিধে হওয়ার কথা নয়। তারপরেও কেন এমন সব অভিযোগ তোলা হচ্ছে, বুঝতে পারছি না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন